শুক্রবারের ম্যাচটার কি বিশেষ কোনো তাৎপর্য আছে? এক ত্রিদেশীয় সিরিজের এক ম্যাচ, যাতে ছিলো ফাইনালে উঠার সম্ভাবনা, শিরোপা জেতার নয়। সেটা জিতে, কতোটা উল্লাস করা উচিত? হ্যা, জয়ের ধরনটা ছিলো অবিশ্বাস্য। শেষ ওভারের ওই রকম নাটকীয়তায় ঠাসা ও শ্বাস বন্ধ করে দেয়া উত্তেজনাময় ম্যাচ তো আর প্রতিদিন হয় না। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সেরা কয়েকটি ম্যাচের মধ্যে সেটিও ঢুকে পড়েছে। তারপরও তামিম-মাহমুদুল্লাহরা কি একটু বেশিই উদযাপন করছেন?

bangladesh team is waiting for the final celebration

তা হতে পারে। কিন্তু উদযাপন-উৎসবের লাগামটা আপাতত টেনেই ধরছেন তারা। কারণ ওই ম্যাচের চেয়েও বড় ম্যাচ যে অপেক্ষা করছে রোববার। এ দিন সন্ধ্যায় ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ প্রবল শক্তিধর ভারত। যাদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি জেতার কোনো রেকর্ড নেই বাংলাদেশের।

এমন একটা ম্যাচের আগে উৎসবে ভেসে গেলে ম্যাচের ফল হতে পারে যন্ত্রণাজাগানিয়া। সুযোগ পেয়েও ট্রফিতে চুমু আঁকতে না পারার আক্ষেপে ডুবতে হতে পারে আবার। সুতরাং সাকিবরা পা ফেলছেন সতর্ক হয়েই। কারণ শ্রীলঙ্কাকে হারানোর পর যে উৎসব হয়েছে, ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিততে পারলে সেই উৎসব বেড়ে যাবে বহুগুণ। কলম্বোর উৎসবের ঢেউ আছড়ে পড়বে বঙ্গোপসাগরেও। সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়বে দেশময়। মাহমুদুল্লাহরা নিশ্চয় এমন রোমাঞ্চকর উৎসবের সম্ভাবনা হাওয়ায় মিলিয়ে যেতে দিবেন না কিছুতেই।

bangladesh beats sri lanka as bangladesh in final

শ্রীলঙ্কাকে হারানোর পর ওই রকম বাঁধনহারা উল্লাসের মূল কারণ ছিলো শেষ ওভারের টানটান উত্তেজনা। যা যে কোনো থ্রিলার মুভির হার মানাতে পারে। সেই গল্পটা নিশ্চয় এতক্ষণে খেলার পাঠকদের মুখস্ত হয়ে গেছে! তারপরও প্রাসঙ্গিকভাবেই তা সামনে চলে আসছে বারবার।

২০তম ওভারে বাংলাদেশের দরকার ছিলো ১২ রান। প্রথম বলটা ইসুরু উদানা মারলেন বাউন্সার। যে ধরনের বাউন্সারের পর বোলারকে সতর্ক করে দেয়ার বিধান। যাতে একই ওভারে ওরকম বল আর না করা হয়। কিন্তু আম্পায়ার তা করলেন না। বাংলাদেশের খটকা লাগলো তখনই। তারপরও খেলাটা এগিয়ে চললো এবং পরের বলেও একই রকম বাউন্সার। নিয়ম অনুসারে নো বল ডাকার কথা। লেগ আম্পয়ার তা ডাকলেনও। কিন্তু মূল আম্পায়ার কোনো এক অজানা সাড়া দিলেন না। এটা তার পক্ষপাতিত্ব ছিলো নাকি খেলার উত্তেজনায় তিনি বেমালুম ভুলে বসেছিলেন, সে বিতর্ক চলতে থাকুক। আম্পায়ারের ওই কাণ্ডেই লেগে গেলো গণ্ডগোল।

মাঠের দুই আম্পায়ার কিভাবে ভিন্ন দুই মত দেন!? সাকিব আল হাসান তাই রেগে আগুন হলেন এবং ক্রিকেটীয় শিষ্টাচার এতে প্রশ্নের মুখে পড়লেও বাংলাদেশ থাকলো সাকিবের পক্ষেই। এখনো বড় দল বলে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত নয় বলেই কি যা খুশি তাই করে দেয়া যাবে? না, যাবে না। বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে যাবে প্রতিবাদে। একটা ম্যাচ জেতার চেয়েও সাকিবদের কাছে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের প্রতিবাদটা বেশি বড়। অবশ্যই বেশি বড়।

সেই প্রতিবাদ এবং তার আগে আম্পায়ারদের দোটানাই তাতিয়ে দিলো বাংলাদেশকে। এরপর তরবারি হয়ে উঠা মাহমুদুল্লাহর ব্যাট কেটে টুকরো টুকরো করে দিলো লঙ্কানদের ফাইনাল খেলার স্বপ্ন। সুতরাং বল্গাহীন উৎসব তো তাদের একটু মানিয়েই যায়!

কিন্তু সামনে এবার ফাইনাল। সুতরাং উৎসবের আমেজেও আপাতত কিছুটা ভাটা। এখন বরং সাকিবরা বিভোর আছেন ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন। যে স্বপ্নটা বাড়াবাড়ি নয় মোটেই।

হতে পারে ভারত টি-টোয়েন্টিতে মহাপরাক্রমশালী, যারা দক্ষিণ আফ্রিকার মতো প্রবল শক্তিমানদেরও ঘরের মাঠে খাবি খাইয়ে দিতে পারে। হতে পারে ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে গর্বের কোনো কীর্তি নেই সাকিবদের। কিন্তু এর মানে তো এটা নয় যে, ভারত অজেয়; তাদের কোনো দিন হারানো যাবে না!

আত্মবিশ্বাসের বিশুদ্ধ হাওয়ার উৎস এটাই। এ ছাড়া, বর্তমান ভারতীয় দলটা ঠিক তাদের সেরা দল নয়। কারণ নিয়মিত খেলা ছয় সদস্যকে এই সিরিজে বিশ্রাম দিয়েছে ভারতীয় বোর্ড। সুতরাং তুলনামূলক খর্বশক্তির ভারতের বিপক্ষে একটা জয় তো পাওয়াই উচিত বাংলাদেশের।

উচিত কাজটা সফল করতে কী করতে হবে সাকিবদের? সেই পথ একদিন আগে বাতলে দিয়েছেন ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা— খেয়াল রাখতে হবে রোহিত শর্মা ও শেখর ধাওয়ানের প্রতি। এদের ব্যাটটা যাতে চওড়া হতে না পারে। আর চোখ রাখতে হবে ওয়াশিংটন সুন্দর ও যুজবেন্দ্র চাহালের কবজির দিকে; তাদের বল যাতে ঠিকঠাক দেখে খেলতে পারেন তামিম-সৌম্য-মুশফিকরা। ব্যস, এতেই মোচন হতে পারে কখনো ফাইনাল জিততে না পারার দুঃখ।

তারপর না হয় টেনে ধরা উৎসবের লাগামটা আবার ছেড়ে দেয়া যাবে! তখন যদি আরো একবার ম্যানেজার হয়েও খালেদ মাহমুদ সুজন দুই একটা এলেবেলে মুদ্রায় একটু নেচে দিন, নিশ্চয় কেউ কিছু মনে করবেন না!

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.