এক সিরিজে ‘দুই প্রতিপক্ষের’ সামনে দক্ষিণ আফ্রিকা

ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয়ের তৃপ্তিটা ঢেকে গেছে সীমিত ওভারের ফরমেট দুটোতে। ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টি দুটো সিরিজেও হেরেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই দুঃস্মৃতিটা তাজা থাকতেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামছে প্রোটিয়ারা। তবে পোশাক পাল্টে। আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে যে শুরু হচ্ছে চার ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। সিরিজের প্রথম ম্যাচের মঞ্চ ডারবান।

বরাবরই ফেভারিটের তকমা পেয়ে থাকে স্বাগতিক দল। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়া সিরিজের বেলায় এটা উল্টো। ফেভারিটের আসনে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। এবারো তাই। কারণ অজিদের সঙ্গে টেস্ট সিরিজ হলেই যে নিজগৃহে পরবাসী হয়ে যায় প্রোটিয়ারা! 

দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে শেষবার অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজ হেরেছিল ১৯৭০ সালে। এরপর যতবারই অজিদের আতিথেয়তা দিয়েছে ততবারই বাজে অভিজ্ঞতা হয়েছে স্বাগতিকদের। সবশেষ এক যুগ আগে রিকি পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়ার কাছে তিন ম্যাচ সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হেরেছিল প্রোটিয়ারা। তাই আজ থেকে শুরু হওয়া সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকার আরেক প্রতিপক্ষের নাম ঘরের মাঠ ও ইতিহাস।

দলটির অধিনায়ক ফ্যাফ ডু প্লেসি অবশ্য দিন বদলের ইঙ্গিত দিলেন। সিরিজপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘যুদ্ধের জন্য আমরা মানসিকভাবে প্রস্তুত আছি। এই সিরিজটা আমাদের কাছে অন্যরকম একটা চ্যালেঞ্জ।’

গেল ১২ বছরে অনেক কিছুই বদলে গেছে। দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট র‌্যাংঙ্কিংয়ে উঠে এসেছিল শীর্ষে, আপতত আছে দুই নম্বরে। লাল বলের ক্রিকেটে দলের অন্যতম স্তম্ভ হয়ে উঠেছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স ও হাশিম আমলা। টেস্টে দুজনই ছুঁয়েছেন আট হাজার রানের মাইলফলক।

বিদায়ী সিরিজ খেলতে নামা মরনে মরকেল দাঁড়িয়ে আছেন তিন শ উইকেটের সামনে। আরেক পেসার কাগিসো রাবাদা হয়েছেন গত বছরের টেস্ট সেরা বোলার। এবারের সফরটা যে অস্ট্রেলিয়ার জন্য সহজ হবে না সেটা অনুমান করাই যাচ্ছে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য অস্বস্তির একটা খবর হচ্ছে- চোটের সঙ্গে এখনো লড়াই করে যাচ্ছেন ডেল স্টেইন। যিনি সাম্প্রতিক বছর ধরে দলে আসা-যাওয়ার মধ্যে আছেন।

বদলেছে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটও। এই মুহূর্তে টেস্টের সেরা ব্যাটসম্যান স্টিভেন স্মিথ। ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারের তিনটি সেঞ্চুরি আছে প্রোটিয়াদের মাটিতে। বোলিং আক্রমণে আছেন পেসত্রয়ী মিচেল স্টার্ক, জস হ্যাজলউড এবং প্যাট কামিন্স। শেষ জনের স্বপ্নের অভিষেকটা তো এই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেই হয়েছিল।

তখন কামিন্স ১৮ বছরের টগবগে এক তরুণ। বোলিং বিভাগে আরো একটা অস্ত্র আছে অস্ট্রেলিয়ার। তিনি নাথান লায়ন; যিনি গত বছর টেস্ট ক্রিকেটের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। সবমিলিয়ে এ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া এমন একটা দল নামাচ্ছে যেটা কিনা অ্যাশেজ সিরিজের সিডনি টেস্টের একাদশ।

সম্ভাব্য একাদশ:

দক্ষিণ আফ্রিকা: ডিন এলগার, এইডেন মার্করাম, হাশিম আমলা, এবি ডি ভিলিয়ার্স, ফ্যাফ ডু প্লেসি (অধিনায়ক), কুইন্টন ডি কক, ভেরনন ফিল্যান্ডার, কেশব মাজরাজ, কাগিসো রাবাদা, মরনে মরকেল, লুঙ্গি এনগিডি।

অস্ট্রেলিয়া: ক্যামেরন ব্যানক্রফ্ট, ডেভিড ওয়ার্নার, উসমান খাজা, স্টিভেন স্মিথ (অধিনায়ক), শন মার্শ, মিচেল মার্শ, টিম পেইন, মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স, জস হ্যাজলউড, নাথান লায়ন।