অলিখিত ফাইনালে মুখোমুখি ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা

টেস্ট সিরিজ হারের শোধটা ওয়ানডেতেই তুলেছিল ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে সিরিজ জিতে ইতিহাস গড়েছিল বিরাট কোহলির দল। প্রায় দুই মাসের সফরের শেষটাও রঙিন করে তুলতে চায় ভারত।

৬ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ভারতের কাছে পাত্তাই পায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা (৫-১)। প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও হেরেছিল প্রোটিয়ারা। পরের ম্যাচে দাপটের সঙ্গেই সিরিজে ফিরে আসে তারা। শনিবার তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটা অলিখিতভাবেই রূপ নিয়েছে ফাইনালে। ম্যাচটি মাঠে গড়াবে বাংলাদেশ সময় রাত দশটায়।

প্রায় দুই মাসের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ভারতের শুরুটা হয়েছিল কেপটাউন থেকে। দলীয় লড়াইটা ছাপিয়ে সেই টেস্টের নামকরণ হয়েছিল এবি ডি ভিলিয়ার্স বনাম বিরাট কোহলি। চোটের কারণে ডি ভিলিয়ার্স অবশ্য আজ দক্ষিণ আফ্রিকা দলে নেই, তবে আছেন একজন। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটের নতুন আবিস্কার হেনরিক ক্লাসেন। কোহলির সঙ্গে তার ব্যক্তিগত নৈপুণ্য প্রদর্শনের লড়াইটিই গড়ে দিতে পারে অলিখিত ফাইনালের ভাগ্য।

ওয়ানডে সিরিজে রীতিমতো বাজিমাত করেছিলেন কুলদিপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চাহাল। সেঞ্চুরিয়নে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ছিলেন না কুলদিপ। তবে যাদবদের দারুণ দক্ষতায় মোকাবেলা করে দলকে দারুণ জয় উপহার দেন ক্লাসেন। ভারতীয় রিস্ট স্পিনারদের আসল চ্যালেঞ্জটা আজ তার বিরুদ্ধেই।

কেপ টাউনে প্রথম টেস্টে ৭২ রানে হেরেছিল ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকার নানা ভেন্যু ঘুরে কোহলিরা ঠিক সেখানেই ফিরছেন। যেখানে আগে কখনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা হয়নি ভারতের। মাত্র ১৭ রান করলেই প্রথম ভারতীয় ও বিশ্বের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে সংক্ষিপ্ততম ক্রিকেটে দুই হাজার রানের মাইলফলক ছুঁতে পারবেন বিরাট কোহলি। কিন্তু ভারতের অধিনায়কের কাছে এই কটা রানের চেয়ে সিরিজ জেতাটাই নিশ্চয় বেশি জরুরি।

নিউল্যান্ডসের বড় মাঠ। তার উপর এখানকার উইকেট বরাবরই স্পিন সহায়ক। দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য অস্বস্তির একটা খবর হচ্ছে- এই মাঠে শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরেছিল তারা। সেদিন ক্যাচ মিসের মাশুল দিতে হয়েছিল হার দিয়ে। সেই ভুলটা এদিন করতে চান না দক্ষিণ আফ্রিকানরা।

ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনেও ফারহান বেহারদিন সতীর্থদের সতর্কবার্তা দিয়ে গেছেন। বলেছেন, 'এখানে ছক্কা মারা সেঞ্চুরিয়নের মতো সহজ হবে না। তাই ব্যাটসম্যানদের শট নির্বাচনে সতর্ক থাকতে হবে। গত দুই বছরে এখানকার উইকেট খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। সেঞ্চুরিয়নে যে শটগুলো ছক্কা হতো এ মাঠে সেভাবে মারলে ফিল্ডারের হাতে ধরা পড়ার শঙ্কা থাকবে। তাই আমাদের ফিল্ডিংয়ের দিকেও নজর দিতে হবে।'

সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে জয়ের জন্য সবটুকু নিংড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বেহারদিন। বলেছেন, 'আমরা খুব শক্তিশালী একটা দলের বিপক্ষে খেলতে নামছি। ওদের জন্য আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। এই ম্যাচে জিততে আমরা সবটুকু উজাড় করে দেব।'

ম্যাচটা জয়ের জন্য পরিকল্পনা আছে ভারতেরও। কেপ টাউনের মন্থর উইকেটে আক্রমণাত্মক খেলার কথাই জানালেন সংবাদ সম্মেলনে ভারতের প্রতিনিধি হয়ে আসা সুরেশ রায়না। বলেছেন, 'এই ম্যাচে আক্রমণাত্মক খেলতে হবে আমাদের। শেষ দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আমরা প্রথম ছয় ওভারে অনেক রান করেছিলাম। যদি পরিকল্পনামাফিক আগ্রাসী হয়ে খেলতে পারি তাহলে এ ম্যাচেও আমরা বড় সংগ্রহ পাবো। অথবা রান তাড়া করার কাজটা সহজ হয়ে যাবে।'

সম্ভাব্য একাদশ: দক্ষিণ আফ্রিকা: রেজা হেন্ড্রিক্স, স্মাটস, জেপি ডুমিনি (অধিনায়ক), ডেভিড মিলার, ফারহান বেহারদিন, হেনরিক ক্লাসেন, অ্যান্ডিলে ফেলুখায়ো, ক্রিস মরিস, জুনিয়র ডালা, ডেন প্যাটারসন, তাবরাইজ শামস/অ্যারন ফাঙ্গিসো। 

ভারত: রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, সুরেশ রায়না, বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), মনিশ পান্ডে, এমএস ধোনি, হার্দিক পান্ডেয়া, ভুবনেশ্বর কুমার, জয়দেব উনাদকাত, জুজভেন্দ্র চাহাল, জাসপ্রিত বুমরাহ/শার্দুল ঠাকুর/অক্ষর প্যাটেল/কুলদিপ যাদব।