জাতীয় দল কিংবা ক্লাব ফুটবল। কত দলকে যে লিওনেল মেসি গোলবন্যায় ভাসিয়েছেন তার ঠিক হদিস পাওয়া মুশকিল। গড়েছেন একের পর এক রেকর্ড। ভেঙেছেন অনেক রথি-মহারথীর রেকর্ড। প্রায় ১৬ বছরের পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ারে বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন ক্ষুদে জাদুকর গোল করেছেন কয়েকশ। কিন্তু একটা জায়গা তার জন্য এখনো দুর্ভেদ্য হয়ে আছে। সেটা চেলসির গোলমুখ।

barcelona messi busqat

মেসির বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে আক্ষেপের তালিকা করলে নিঃসন্দেহে চেলসির নামটা থাকবে ওপরের দিকেই। পশ্চিম লন্ডনের ক্লাবটির বিপক্ষে এ পর্যন্ত আটবার মাঠে নামলেও পাঁচবারের বর্ষসেরা ফুটবলারের নামের পাশে থাকল গোলশূন্য। দীর্ঘদিনের এই গোল-বন্ধ্যাত্ব ঘোচানোর আরো একটা সুযোগ এসেছে মেসির সামনে। এবার কাটবে তো মেসির চেলসি-দুঃখ? উত্তরটা মিলে যাবে আজ (মঙ্গলবার) রাতেই।

চ্যাম্পিয়নস লিগের নক আউট পর্বের প্রথম লেগে আজ চেলসির মুখোমুখি হবে মেসির বার্সেলোনা। লড়াইটা দলীয়। তবু স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের মহারণে মেসি অবধারিতভাবেই থাকবেন পাদ প্রদীপে। তাকে ঠেকানোর শেষ অস্ত্র চেলসির গোল পোস্টের অতন্দ্র থিবাউট কোর্তোয়াও প্রস্তুত। সঙ্গে রক্ষণপ্রহরীরা তো আছেনই।

অবশ্য প্রথম বাঁশির আগেই ফুঁ দিয়ে বসেছেন চেলসির কোচ অ্যান্তনিও কন্তে। তাঁতিয়ে দিয়েছেন প্রতিপক্ষ কাণ্ডারী মেসিকে। বার্সা প্রাণভোমরাকে গোলবঞ্চিত রাখার অগ্রিম হুঁসিয়ারি দিয়ে বসেছেন ইতালিয়ান কোচ। দুদিন আগেই বলেছেন, ‘মেসি এ ম্যাচেও গোলবঞ্চিত থাকবে। তার জন্য বিশেষ ছক কষে রেখেছি আমি।’

ইতিহাসের দুষ্টচক্র থেকে বেরিয়ে আসতে মেসির চ্যালেঞ্জটা সেখানেই। ভাঙতে হবে চীনের প্রাচীর হয়ে ওঠা চেলসির রক্ষণদুর্গ। সেখানে চিড় ধরাতে খুব করেই চাইছেন মেসি। তার এই চাওয়াটা অপূর্ণ রাখতে নিজেদেরও পুরোপুরি শানিয়ে রেখেছে ডেভিড লুইজের নেতৃত্বাধীন চেলসির ডিফেন্স।

তবে মেসির চ্যালেঞ্জটা শুধু চেলসির বিপক্ষেই নয়, ব্লুজ গোলরক্ষক কোর্তোয়ার সঙ্গেও। তাকে ফাঁকি দেয়ার একবারই সুযোগ হয়েছিল মেসির।

২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের জালে বল পাঠিয়েছিলেন বার্সা প্লে-মেকার। ওই একবারই শেষ। এরপর লা লিগা, চ্যাম্পিয়নস লিগ, স্প্যানিশ সুপার কাপ, আন্তর্জাতিক মঞ্চ কিংবা প্রদর্শনী ম্যাচ- প্রতিবারই মেসিকে রুখে দিয়েছেন কোর্তোয়া। সোমবার ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে ওই দৃশ্যগুলোর পুণরাবৃত্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন চেলসির বেলজিয়ান গোলকিপার। বলেছেন, ‘আশা করছি চেলসির বিপক্ষে মেসির গোলখরা অব্যাহত থাকবে।’

চেলসির বিপক্ষে ৮ ম্যাচের মাত্র একটিতে জয় আছে মেসি অ্যান্ড কোংয়ের। ড্র পাঁচটি এবং হারতে হয়েছে দুটি ম্যাচে। মেসির এই দুর্দশার নেপথ্যে আছেন আর্সেনালের গোলরক্ষক পিওতর চেক। যিনি প্রায় দু বছর আগে চেলসি ছেড়ে নোঙর ফেলেছেন নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের বন্দরে। ব্লুজদের ক্রসবারের নিচে দাঁড়িয়ে ৬ ম্যাচ মেসিকে গোলখরায় রেখেছেন চেক গোলরক্ষক। দুটি ম্যাচে মেসিকে মোকাবেলা করেছিলেন হেনরিক হিলারিও। যিনি গ্লাভস জোড়া খুলে ফেলেছেন বছর চারেক আগে।

কীভাবে মেসিকে বোতলবন্দী করে রাখতে হয় ফর্মুলাটা প্রথম দেখিয়ে গেছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কোচ হোসে মরিনহো। ২০০৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি প্রথম লেগের ম্যাচে তৎকালীন চেলসির পর্তুগিজ কোচ মেসিকে বানিয়েছিলেন লক্ষ্যবস্তু, তার জন্য বিশেষ পাহাড়ায় রেখেছিলেন অ্যাসিয়ের ডেল হর্নোকে। এক যুগ আগে সেই ম্যাচে তো মেসিকে দুবার কঠিন ট্যাকলই করেছিলেন স্প্যানিশ লেফট-ব্যাক। যেটার ধকলটা সামলে উঠতে পারেননি আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। ম্যাচটা বার্সা সেদিন ২-১ গোলে জিতলেও ফিরতি লেগের ২৪ মিনিটে ইনজুরি নিয়ে মাঠ থেকে বেড়িয়ে যেতে হয়েছে মেসিকে।

কিন্তু গোল না পেলেও চেলসির বিপক্ষে দারুণ একটা মুহূর্ত আছে মেসির। ২০০৯ সালে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার যে গোলের উপর দাঁড়িয়ে বার্সেলোনা ফাইনালে উঠেছিল সেটার রূপকার ছিলেন মেসি। এবার জোগানদাতা নন, গোলের উৎস হতে মরিয়া হালের অন্যতম সেরা ফুটবলার।

চেলসির সঙ্গে গোলখরা কাটিয়ে ওঠার সম্ভাব্য সেরা সুযোগটা মেসি পেয়েছিলেন ২০১২ সালের ২৪ এপ্রিল। সেদিন তো পেনাল্টি থেকেই গোল করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন মেসি! ন্যু ক্যাম্পে বার্সার অগ্রদূতের শটটা মাথার ওপরের ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। ম্যাচটা শেষাবধি ২-২ গোলে ড্র করে কাতালানরা। দুই লেগের অগ্রাগামিতায় (২-৩) উয়েফা চ্যাম্পিয়নস ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠে যায় চেলসি। পরে অ্যালিয়েঞ্জ এরিনায় স্নায়ুক্ষয়ী ফাইনালে টাইব্রেকে (৩-১) বায়ার্ন মিউনিখকে কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়নও হয়েছিল পশ্চিম লন্ডনের ক্লাবটি।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.