তবে কী পাকিস্তানের হোম ভেন্যু মালয়েশিয়ায়?
- Details
- by খেলাধুলা ডেস্ক
২০০৯ সালে মার্চে লাহোরে শ্রীলঙ্কার টিম বাসে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর থেকেই পাকিস্তানের মাটি থেকে উঠে গেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। দেশের মাটিতে কালেভদ্রে দু একটা ম্যাচ আয়োজন করলেও কয়েক বছর ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতই হয়ে গেছে পাকিস্তানের হোম ভেন্যু। এবার সেখানেও পাকিস্তানের ক্রিকেটের অস্তিত্ব পড়েছে সংকটের মুখে। নতুন হোম ভেন্যু খুঁজতে তাই দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আসন্ন হোম সিরিজ দুটো মালয়েশিয়াতেই করার জন্য তোড়জোড় চালাচ্ছেন পাকিস্তানের ক্রিকেট কর্তারা।
মূলত পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ও টি-টোয়েন্টি লিগ সাংঘার্ষিক পর্যায়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কয়েকটি সিরিজ ও টুর্নামেন্ট সমসাময়িক হয়ে যাওয়ার সংকটটা দূরে নয়। এই ভেন্যু সংকট কাটিয়ে উঠতে পিসিবি পাশে পাচ্ছে না এমিরেটস ক্রিকেট বোর্ডকে (ইসিবি)।
এ বছরের প্রান্ত সীমায় (অক্টোবর+নভেম্বর) অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে দুটি পূর্ণাঙ্গ সিরিজ ঠিক হয়ে আছে পাকিস্তানের। সফরকারী দল দুটির বিপক্ষে পাঁচটি টেস্ট, অন্তত পাঁচটি ওয়ানডে এবং কয়েকটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার কথা পাকিস্তানের।
অন্যদিকে নতুন বছরের জানুয়ারিতে অ্যারাবিয়ান ক্রিকেট লিগ আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসিবি। অথচ সূচি অনুযায়ী এই লিগ শুরুর কদিনের মধ্যে পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) আয়োজনেরও কথা রয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে আবার আফগান টি-টোয়েন্টি লিগের মঞ্চায়নও হওয়ার কথা শারজাহতে। একই সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এত ম্যাচ আয়োজন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
বিষয়টি পিসিবিকেও জানিয়েছে ইসিবি। যা পাকিস্তানের কপালে ফেলে দিয়েছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। পিসিবি চেয়ারম্যান নাজাম শেঠির কথাতেও ভেসে উঠছে শঙ্কার কালো মেঘ। ক্রিকইনফোকে তিনি বলেছেন, ‘ইসিবি আমাদের জানিয়েছে তারা আফগান সুপার লিগ এবং অ্যারাবিয়ান ক্রিকেট লিগ আয়োজন করতে চায়। যা আমাদের সূচির সঙ্গে সাংঘার্ষিক। সংযুক্ত আরাব আমিরাতে নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আমাদের সিরিজ দুটি তাদের টুর্নামেন্ট দুটির কাছাকাছি সময়ে হয়ে যাচ্ছে। তারা জানিয়েছে শারজাহতে কোনো ধরণের সুযোগ সুবিধা দিতে পারবে না। এটা আমাদের জন্য সমস্যা।’
শুধু আন্তর্জাতিক সূচিই নয়, আরব আরিরাতে পিএসএলও আয়োজনের সুযোগটা বোধহয় পাচ্ছে না পাকিস্তান। নাজাম শেঠি তাই বলেছেন, ‘প্রত্যেক বছরের জানুয়ারিতে তারা অ্যারাবিয়ান লিগ আয়োজন করতে চায়। যেখানে পিএসএলের জন্য ফেব্রুয়ারি মাসকে আমরা নির্ধারণ করে রেখেছি। এখানেও দুটো টুর্নামেন্ট খুব কাছাকাছি সময়ে হয়ে যায়। আমাদের জন্য এটা কঠিন হয়ে যাচ্ছে এই কারণে যে দুটো টুর্নামেন্টেই তারা আমাদের খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণ চায়।’
এই ভেন্যু সংকট থেকে উত্তরণ পেতে নতুন ভেন্যু খুঁজছে পাকিস্তান। এ যাত্রায় তাদের প্রথম পছন্দ মালয়েশিয়া। যে দেশটি এখনো আইসিসি পূর্ণ সদস্যের মর্যাদার জন্য লড়াই করে যাচ্ছে বছরের পর বছর ধরে। এই দেশটিকেই নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া সিরিজের জন্য সাময়িকভাবে পাকিস্তানের আদর্শ ভেন্যু হিসেবে ভাবছে পাকিস্তান। পিসিবি চেয়ারম্যান এমনই একটি ভেন্যু চান, ‘অন্তত নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া সিরিজের বিষয়টি মাথায় রেখে হোম ভেন্যুর জন্য আমি মালয়েশিয়া যাচ্ছি। যদি আফগান লিগ চলার সময় শারজাহতে আমাদের কোনো সুযোগ সুবিধা না দেওয়া হয় তাহলে আমরা এটাই করব। কিন্তু এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছি না। আমি শুধু ঐচ্ছিকতা তৈরির জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। চেষ্টা করছি তারা তাদের সূচিটা একটু পরিবর্তন করে। যাতে কোনো সংঘাত দেখা না দেয়।’
আইসিসির সহযোগী সদস্যভুক্ত দেশ মালয়েশিয়া। ২০০৮ যুব বিশ্বকাপের স্বাগতিক ছিল দেশটি। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে আইসিসি ও এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছে তারা। তবে ২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক বড় কোনো প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল মালয়েশিয়া। অস্ট্রেলিয়া, ভারত এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিয়ে তিন জাতির ওয়ানডে টুর্নামেন্টের স্বাগতিক হয়েছিল তারা। ওই টুর্নামেন্টের সবকটি ম্যাচের মঞ্চায়ন হয়েছিল কিনারা একাডেমি ওভালে।
কুয়ালালামপুরে এই মাঠটিই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের মর্যাদা পেয়েছিল। এর আট বছর পর ২০১৪ সালের মে মাসে আফগানিস্তান, হংকং ও সংযুক্ত আমিরাতের ওয়ানডে সিরিজ আয়োজন করেছিল মালয়েশিয়া। কিন্তু এবারই প্রথম এখানে আইসিসির কোনো পূর্ণ সদস্য দেশ টেস্ট আয়োজনের সম্ভাবনার কথা জানালো। যেটা মালয়েশিয়ার জন্যও বিরাট সম্মানের উপলক্ষ্য।
এই স্টেডিয়ামকে হোম ভেন্যু হিসেবে পেতে পাকিস্তানকে কারোর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যেতে হবে না। তবে এখানে তাবু টানানোর নেতিবাচক দিকও আছে। বছরের শেষ দিকে মালয়েশিয়ায় যে ভালোই বৃষ্টির আনা গোনা দেখা যায়! সবকিছু ভেবেই তাই সংযুক্ত আরব আমিরাতকেই হোম ভেন্যু হিসেবে অগ্রাধিকারে রাখতে চায় পিসিবি। দেশটির বোর্ড প্রধান নাজাম শেঠি বলেছেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতই আমাদের অগ্রাধিকারে থাকবে। কিন্তু এই মুহূর্তে তারা আমাদের আশাহত করেছে। তাই আমাদের বিকল্প ভেন্যু খুঁজতে হচ্ছে। আমি মালয়েশিয়া যাচ্ছি তারা আমাদের কী ধরণের সুযোগ সুবিধা দেবে সেটা জানার জন্য। অবশ্য এটারও কোনো নিশ্চয়তা দেওয়া যাচ্ছে না এখন। স্বাভাবিকভাবে আমরা আরো বিকল্প ভেন্যু খুঁজব।’
পাকিস্তানের এই বিকল্প ভাবনার মধ্যে আছে বাংলাদেশও। প্রয়োজনে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সঙ্গেও আলোচনায় বসতে পারে পিসিবি। শ্রীলঙ্কার মাটিও ব্যবহারের সুযোগের জন্য চেষ্টা করতে পারে পাকিস্তান। এসবকিছু করে হয়তো সাময়িক বিপদ সামাল দিতে পারবে পাকিস্তান। কিন্তু দেশের ক্রিকেট উন্নয়নে নিজেদের মাটিতে ক্রিকেট ফেরানোর বিকল্প নেই পাকিস্তানের সামনে। কারণ এক সঙ্গে কাজ করলেও পিসিবির সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদি চুক্তিতে যেতে রাজি নয় ইসিবি। যা পিএসএল এবং পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য মোটেও মঙ্গলজনক হবে না।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.