লজ্জার ব্যাটিংয়ে নির্মম হার

ঢাকা টেস্টের শেষ ইনিংসে বাংলদেশের লক্ষ্য ছিলো ৩৩৯ রান। এই রান করার পথে বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে মাত্র ১২৩ রানে। অর্থাৎ ঢাকা টেস্ট মাহমুদুল্লাহরা হারলেন ২১৫ রানের ব্যাবধানে। অস্থির ও অপরিকল্পিত মানসিকতার লজ্জার ব্যাটিংয়েই বাংলদেশকে মেনে নিতে হলো নির্মম হার।

শেষ ইনিংসে বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় মাত্র ২৯.৩ ওভারে। এই ওভারগুলো দুই সেশনে ভাগ হয়ে থাকলেও, বাংলাদেশ মূলত এক সেশনও ব্যাটিং করতে পারেনি। লজ্জার ষোলকলা বোধহয় এভাবেই পূর্ণ হয়।

এমন নির্মম হারের আগে, দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে মেহেদি হাসান মিরাজ বলেছিলেন, ৩০০ চেজ করে জেতার ক্ষমতা আছে তাদের। তার ওই কথার বয়স ২৪ ঘণ্টা হওয়ার আগেই ১২৩ রানে ফুরিয়ে গেলো বাংলাদেশের ইনিংসের দম। বাংলাদেশ দলের তরুণ সদস্যদের একজন, মিরাজ কি তাহলে কিছু না বুঝেই কথাটা বলেছিলেন?

এ রকম আরো প্রশ্ন উঠা এখন সময়ের দাবি। বড় রানের লক্ষ্য, উইকেট ঠিক ব্যাটিং-বান্ধব নয়, তারপরও ইমরুল-মাহমুদুল্লাহরা যে ব্যাটিং করেছেন, তা কোনোভাবেই পরিস্থিতির দাবি মেটানোর মতো পরিণত হয়নি। তাদের ব্যাটিংয়ে বরং দেখা গেছে অস্থিরতা। তাদের ব্যাটিংয়ে প্রকাশ পেয়েছে দ্রুত হারতে চাওয়ার বাসনা!

অথচ সত্যিকারের বাসনা ছিলো, শ্রীলঙ্কাকে টেস্ট সিরিজে হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ হারের বদলা নেয়া। বদলা নেয়া দূরে থাক, বাংলাদেশ উল্টো ভূপতিত হলো নিজেদের পাতা ফাঁদে।
চট্টগ্রাম টেস্টে ছিলো নিখাদ ব্যাটিং উইকেট। ড্র করার মানসেই ওই রকম উইকেট বানিয়েছিলো স্বাগতিকরা। পরে হোম অব ক্রিকেটে জয় নিয়ে সিরিজ জেতার পরিকল্পনা ছিলো মাহমুদুল্লাহদের। এ জন্য বানানো হয়েছিলো স্পিনিং উইকেট। যেখানে প্রতিপক্ষের স্পিন বিষেই কাতরাতে হলো বাংলাদেশকে।

শেষ ইনিংসে পাঁচ ওভারে ২৪ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন আকিলা ধনঞ্জয়া। রঙ্গনা হেরাথ নিয়েছেন চার উইকেট। এই চার উইকেট নেয়ার পথে হেরাথের মোট টেস্ট শিকারের সংখ্যা হলো ৪১৫। অর্থাৎ পাকিস্তানি কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরামকে ছাড়িয়ে গেলেন তিনি।

যেখানে জয় দিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ হারের ক্ষতে প্রলেপ দিতে চেয়েছিলো বাংলাদেশ, সেখানে উল্টো তৈরি হলো নতুন ক্ষত। বাকি থাকা দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের ফল যাই হোক না কেনো, এই ক্ষত শুকাবে না সহজে।