রোহিঙ্গা সংকটের মূলে ব্রিটিশদের ‘সেই’ শাসকরাই!

ব্রিটিশ উপনিবেশবাদী শাসকদের কারণেই মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা সংকট তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একজন আইনজীবী। তিনি বলেন, ব্রিটিশরা দক্ষিণ এশিয়ার মানচিত্রে এক ধরণের অসংলগ্ন অবস্থা তৈরি করে রেখে গেছে, যার দীর্ঘস্থায়ী ফল হচ্ছে আজকের এই রোহিঙ্গা সংকট।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে কয়েক দশক ধরে বিভিন্ন ধরণের রাষ্ট্রীয় বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন সেখানকার মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। সর্বশেষ গতবছর নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্পে কথিত রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানের নামে রোহিঙ্গাদের উপর জাতিগত শুদ্ধি অভিযান চালায় দেশটির সেনাবাহনী। এতে বিপুল সংখ্যক হতাহত হয়, জীবন বাঁচাতে প্রতিবেশি বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় লাখ লাখ রোহিঙ্গা।

ইরানের প্রেস টিভিকে দেয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কথা বলেন আইনজীবী ব্যারি গ্রসম্যান। এ সময় তিনি বলেন, বর্তমানে রাখাইনে যে রোহিঙ্গা সংকট চলছে, তার মূলে রয়েছে ব্রিটিশ উপনিবেশিবাদীদের তৈরি মানচিত্র। তারা দক্ষিণ এশিয়ার মানচিত্রে অসংলগ্ন অবস্থা রেখে গেছে, আর সেটাই এখন বড় ধরণের সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে।

রোহিঙ্গা সংকট তীব্র আকার ধারণের পেছনে বর্তমান পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রকেও দায়ী করেছেন আইনজীবী গ্রসম্যান। তিনি বলেন, মার্কিন সরকারের পূর্ব এশিয়া নীতির কারণেও রোহিঙ্গা সংকট চরম আকার ধারণের পেছনে ভূমিকা রেখেছে।

গ্রসম্যান আরও বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা বিরোধী জাতিগত শুদ্ধি অভিযানে দেশটির সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থন ও মদদ রয়েছে। অথচ মানবতা বিরোধী এই ভয়াবহ অপরাধের জন্য সে দেশের সরকার ও সেনাবাহিনীকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখে দাঁড় করাতে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র।

আইনজীবী ব্যারি গ্রসম্যান

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী মিয়ানমারের রাখাইনে ২০১৭ সালের আগস্টে সেনা অভিযান শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ছয় হাজারের বেশি রোহিঙ্গা মুসলমান নিহত হয়েছে। এ সময় অন্তত আট হাজার রোহিঙ্গা আহত হয়েছে। জীবন বাঁচাতে বন-জঙ্গল-নদী পাড়ি দিয়ে প্রতিবেশি বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে ৬ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা।