ওয়ানডে ক্রিকেটের দাপটে টেস্ট ক্রিকেট তার জনপ্রিয়তা হারাতে শুরু করেছিলো অনেক আগে থেকে। এরপর টি-টোয়েন্টির সদাপট উত্থান এবং অল্প সময়েই জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠে যাওয়ার যে বিপ্লব সংগঠিত হয়েছে, তার পর টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি দর্শকদের আকর্ষণ ঠেকেছে প্রায় শূন্যে গিয়ে। এই যখন পরিস্থিতি, তখন চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা যে ধরনের উইকেটে টেস্ট খেলছে, সে ধরনের উইকেটে টেস্ট হওয়া উচিত কিনা, এমন প্রশ্ন ওঠা মনে হয় না অযৌক্তিক।

bangladesh struggling in chittagong test

তিন দিনে চট্টগ্রাম টেস্টে রান উঠেছে মোট ১০১৭, উইকেট পড়েছে ১৩টি। মানে একেকটি উইকেট ফেলতে বোলারদের খরচ করতেছে ৭৮-এর বেশি রান! এ যেনো বোলারদের মৃত্যু-উদ্যান।

ক্রিকেট খেলাটা কখনোই শুধু ব্যাটসম্যানদের খেলা ছিলো না। কিন্তু দিনে দিনে সম্ভবত তা-ই হয়ে যাচ্ছে। অথচ ক্রিকেটে ব্যাটসম্যানরা যতোটা খেলেন, তার চেয়ে কম খেলেন না বোলাররাও। তাহলে শুধু ব্যাটিং উইকেট বানিয়ে তাদের প্রতি কেনো এমন বিমাতাসূলভ আচরণ? কিংবা স্বাগতিক হওয়ার সুবিধা নিয়ে হারের ভয়ে এ রকম ‘মহাসড়ক’ মার্কা উইকেট বানিয়ে ক্রিকেটেরই বা কী লাভটা হয়? প্রশ্নগুলো যতোটা গুরুত্বপূর্ণ, ততোটা গুরুত্ব দেয়া উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না একেবারেই।

bangladesh struggling in chittagong test 1

চট্টগ্রাম টেস্ট শুরু হওয়ার আগে কথা হচ্ছিলো যে, এই উইকেট হবে স্পিনারদের উল্লাসের মঞ্চ। সেই ধারণায় বিশ্বাস ছিলো দুই দলেরই। তাদের বিশ্বাসের প্রকাশ ঘটেছে একাদশে সুযোগ দেয়া তিন বিশেষজ্ঞ স্পিনারে। কিন্তু স্পিনারদের স্বর্গের দেখাই তো মিলছে না!

তৃতীয় দিনে বাংলাদেশের করা ৯০ ওভারের মধ্যে ৭২ ওভারে হাত ঘুরিয়েছেন স্পিনাররা। প্রাপ্তি বলতে মাত্র একটা উইকেট! যে উইকেট স্বর্গরাজ্য হওয়ার কথা ছিলো, তা যে আসলে বধ্যভূমি হয়ে গেছে, স্পিনাররা নিশ্চয় হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন এই সত্য।

শুক্রবার ছুটির দিন ছিলো বলে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয়েছিলেন হাজার পাঁচেক দর্শক। বাংলাদেশের ১১ ক্রিকেটারের সঙ্গে তারাও দিনভর প্রার্থনা করেছেন উইকেটের জন্য। দিন শেষে তাদের ফিরতে হয়েছে ভগ্ন মনোরথে। স্পিনারদের ঘূর্ণিজালে ব্যাটসম্যানদের আটকে পড়ার দৃশ্যের বদলে তাদের দেখতে হয়েছে মাহমুদুল্লাহদের দিন মজুরের মতো খাটা-খাটনি।

আগের দুদিনের খেলা শেষে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন দুই ক্রিকেটার। কিন্তু তৃতীয় দিনে বোধহয় তাদের কাউকে আর পাওয়া যায়নি! অগত্যা খালেদ মাহমুদ সুজন আসেন সংবাদ সম্মেলনে। এ সময় তাকে টেস্টের উইকেট নিয়ে প্রশ্ন করা হয়।

যেমন প্রত্যাশা ছিলো, তেমন উইকেট পেয়েছেন কিনা; এমন প্রশ্নে সুজন বলেন, ‘আসলে আমরা আরো ভালো উইকেটে খেলতে চেয়েছিলাম। যাতে বোলারদের জন্যও কিছু থাকে। কিন্তু আমরা তো আসলে এই উইকেটে অনেক রান করেছি। সুতরাং অভিযোগ করার কিছু নেই।’

খালেদ মাহমুদ সরাসরি উইকেট নিয়ে আপত্তি তোলেননি বটে, কিন্তু আপত্তি যে তার আছে, তা বোঝা যাচ্ছে তার মন্তব্যেই। খালেদ মাহমুদকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো টেস্টের পরের দুদিনে তিনি স্পিনারদের কাছ থেকে কিছু আশা করছেন কিনা। তিনি ছোট করে কেবল বললেন, ‘নট রিয়েলি!’

উপমহাদেশে ক্রিকেট মানেই উন্মাদনার অন্য শব্দ। কিন্তু এই রকম নিষ্প্রাণ উইকেটে যদি ক্রিকেট হয়, তাহলে আক্ষরিক অর্থেই ক্রিকেট হয়ে যায় স্রেফ উন্মাদনা। যে উন্মাদনায় রোমাঞ্চকর কিছু নেই। আছে কেবল ক্রিকেটারদের খাটতে দেখার যন্ত্রণা ও বিরক্তি।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.