চট্টগ্রামে হতাশার দ্বিতীয় দিন

প্রথম দিনটা শেষ হয়েছিলো মুমিনুল হকের ডাবল সেঞ্চুরি পাওয়ার সম্ভাব্য আনন্দলাভের প্রত্যাশায়। বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় দিনটা শেষ হলো লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের দৃঢ়তাপূর্ণ জবাব শুরুর এক রাশ হতাশায়। দুই দিনেই চট্টগ্রাম টেস্ট বুঝিয়ে দিলো টেস্ট ক্রিকেট আসলে বড্ড কঠিন এক ব্যাপার।

প্রথম দিন শেষের প্রত্যাশাটা পূরণ হয়নি। দ্বিতীয় দিনে মাত্র এক রান যোগ করেই বিদায় নেন মুমিনুল হক। তারপরও বাংলাদেশ পায় ৫১৩ রানের পুঁজি। আট বছরের মধ্যে নিজের দীর্ঘতম টেস্ট ইনিংস খেলে ইনিংসটা পাঁচশর উপরে নিয়ে যান মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ৮৩ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি।

৫০০-এর বেশি রান করে বাংলাদেশ দল জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে উপস্থিত হওয়া হাজার দুয়েক দর্শকের মন ও মননে যে যৎসামান্য আনন্দ ছড়িয়ে দেন, দিন শেষে এক উইকেটে ১৮৭ রান করে সেই আনন্দে নিরানন্দের ছাই ছিটিয়ে দেয় শ্রীলঙ্কা। ধনঞ্জয়া ডি সিলভা দারুণ এক সেঞ্চুরি করে থাকেন অপরাজিত (১০৪)। যার ব্যাট জাগিয়ে গেছে বড় কিছু করার শঙ্কা। আর সঙ্গে আছেন ৮৩ রানে অপরাজিত কুসাল মেন্ডিস।

শঙ্কাটা যে বাংলাদেশের জন্য, সেটা নিশ্চয় না বলে দিলেও হয়। এই শঙ্কাই শ্রীলঙ্কার জন্য সম্ভাবনার ভেলা। যাতে চড়ে বাংলাদেশের ৫১৩ টপকে আরো বড় কিছুর স্বপ্ন নিশ্চয় দেখা শুরু করে দিয়েছে তারা।

সেই স্বপ্নে পূরণে তাদের সফলতা নির্ভর করছে ধনঞ্জয়া ও অন্য ব্যাটসম্যানদের ব্যাটে। আর তাদের স্বপ্নের রেণু হাওয়ায় মিলিয়ে দেয়ার জন্য বাংলাদেশের যে প্রতিস্বপ্ন, তা নির্ভ করছে বাংলাদেশের স্পিনারদের হাতের কারুকাজে।

ইঙ্গিত ছিলো, চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিন থেকেই বল ঘুরবে। তা ঘুরেছে বটে, কিন্তু ওই ঘোরাঘুরিতে বোলারদের কোনো লাভ হয়নি। এমন কি দ্বিতীয় দিনেই স্পিনারদের হাত বেশিরভাগ সময় থেকে নিষ্ফলাই। রঙ্গনা হেরাথ ও লক্ষণ সান্দাকান পাঁচ উইকেট ভাগ করে নিয়েছেন। কিন্তু স্পিনারদের যে সদাপট উপস্থিতির প্রত্যাশা ছিলো, তা পূরণ হয়নি একেবারেই।

পরে শ্রীলঙ্কার ইনিংসের ৪৮ ওভারের মধ্যে ৪১ ওভারই করেছেন স্পিনাররা। সাফল্য বলতে শুরুর দিকে সেট না হওয়া দিমুথ করুনারত্নের মিরাজের শিকার হওয়াটাই। এভাবেই চট্টগ্রাম টেস্টের দুইটা দিন দুই রকম হয়ে হাজির হলো বাংলাদেশের কাছে।