তবুও প্রথম দিনটা বাংলাদেশেরই

দিনের খেলার তখন মাত্র ছয় ওভার বাকি। বাংলাদেশের রান দুই উইকেটে ৩৫৬। প্রথম দিনেই এমন সফলতা নিশ্চয় বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে ছড়িয়ে দিচ্ছিলো স্বস্তির সুবাতাস। কিন্তু ৮৪তম ওভারের শেষ দুই বলে দুই উইকেট তুলে নিয়ে সেটা হতে দিলেন না সুরাঙ্গা লাকমাল। তারপরও চার উইকেটে ৩৭৪ রানে দিনটা হয়ে থাকলো বাংলাদেশেরই। টেস্টের প্রথম দিনে এতো রান আগে কখনোই করেনি বাংলাদেশ।

প্রথম বলটা ছিলো অফস্টাম্পের সামান্য বাইরে। মুশফিক গেলেন ডিফেন্ড করতে। করলেনও। কিন্তু বলটা তার কথা শুনলো না। ব্যাটের কোণা ছুঁয়ে বল চল গেলো উইকেটরক্ষকের হাতে। মুশফিক বিদায় নিলেন ৯২ রানে। পরের বলে লিটন দাস হয়ে গেলেন বোল্ড।

মুশফিকের আউটটা তবু মানা যায়। কিন্তু লিটন যেভাবে অফস্টাম্পের বল ছেড়ে দিয়ে বোল্ড হলেন, তা দেখলে তিনি নিজেই নিশ্চয় লজ্জায় মুখ লোকাবেন। চোখের পলকে দুই উইকেট হারানোর পর হঠাৎ করেই শীতের স্নিগ্ধ বিকেলটা হয়ে পড়লো চরম উত্তেজনার।

শেষ পর্যন্ত উত্তেজনাটা আর বাড়েনি। দিনের শেষ ছয় ওভার কোনো রকম ক্ষয়ক্ষতি ছাড়িয়ে কাটিয়ে দিয়েছেন মুমিনুল ও মাহমুদুল্লাহ জুটি। তারা যোগ করেন ১৮ রান। ১৭৫ রান করে অপরাজিত থাকেন মুমিনুল। আর মাহমুদুল্লাহ করেন পাঁচ রান। শেষ সেশনে বাংলাদেশ যোগ করে মোট ১২৪ রান।

এর আগে টস জিতে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ তার অধিনায়কত্বের অভিষেকে নেন ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত। এই প্রত্যাশিত সিদ্ধান্ত প্রথমেই যৌক্তিক বলে প্রমাণ করে দেন তামিম-ইমরুল জুটি। ৭২ রান যোগ করেন তারা। তামিম যেভাবে ব্যাটিং করছিলেন, তাতেই বোঝা যাচ্ছিলো— উইকেট থেকে স্পিনাররা সহায়তা পাক বা না পাক, ব্যাটসম্যানরা পাবেন!

কিন্তু তামিম তার ইনিংস বড় করতে পারেননি। তিনি ফেরেন ৫২ রান করে। ৪০ করে ফেরেন ইমরুল কায়েস। প্রথম সেশনে এই দুই উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তুলে ১২০ রান। পরের সেশনে লঙ্কান বোলারদের কেবলই দর্শক বানিয়ে রেখে ১৩০ রান যোগ করেন মুমিনুল ও মুশফিকুর রহিম।

মুমিনুল-মুশফিক এই জুটিতে তুলেন ২৩৬ রান। তৃতীয় উইকেটে যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। এর আগে রেকর্ডটি ছিলো তামিম-মুমিনুল জুটির। ২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তারা করেছিলেন ১৫৭ রান। এই জুটিতেই রান গিয়ে পৌঁছায় ৩৫৬-তে এবং সেখানেই সুরাঙ্গা লাকমালের ওই দুই বলের আক্ষেপ। যে আক্ষেপ দিন শেষে মুমিনুলের ১৭৫ বা মুশফিকের ৯২-এর চেয়ে বড় হয়ে উঠতে পারেনি।