‘তিন দিনেই’ প্রোটিয়াদের কাছে টেস্ট হারলো ভারত

স্কোরকার্ডে লেখা থাকবে দক্ষিণ আফ্রিকা- ভারতের ২০১৮ সালের সিরিজের প্রথম টেস্টটি খেলা হয়েছে চার দিন। কিন্তু আসলেই কি তাই? আসলেই তাই। কিন্তু এর মধ্যে তৃতীয় দিনে বৃষ্টির কারণে খেলা হয়নি একটি বলও। এরপর চতুর্থ দিনে এসে ভারতের সকরুণ হার। মানে দাঁড়ালো— কেপটাউন টেস্টটা আসলে ভারত হারলো তিন দিনেই।

অথচ ম্যাচটা জিততে পারতো ভারতই। দক্ষিণ আফ্রিকাকে তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৩০ রানে গুটিয়ে দিয়েছিলো ভারত। ফলে শেষ ইনিংসে জেতার জন্য বিরাট কোহলির দলের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২০৮ রান। সেটা করতে গিয়ে ভারত গুটিয়ে যায় মাত্র ১৩৫ রানে। মানে তাদের হারতে হয় ৭২ রানের বড় ব্যবধানে এবং তিন দিনের মধ্যেই।

ভারতের এই হারের মূল কারণ দক্ষিণ আফ্রিকান পেসারদের বিপক্ষে তাদের ব্যাটসম্যানদের দাঁড়াতে না পারা। বিশেষ করে ভ্যারনন ফিল্যান্ডার কেপটাউনে আবির্ভূত হয়েছিলেন মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে। ১৫ ওভার চার বলে মাত্র ৪২ রান দিয়ে তিনি তুলে নেন ছয় উইকেট। তার সামনেই মূলত নুয়ে পড়ে ভারতীয় ব্যাটিং লাইন। বাকি যে কাজটা ছিলো তা সারতে খুব বেশি কষ্ট করতে হয়নি মরনে মরকেল ও কাগিসো রাবাদাকে।

মজার ব্যাপার হলো, শেষ ইনিংসে ২০৮ রানের অল্প পুঁজির পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকা বিপদে পড়েছিলো একজন বোলার কমে যাওয়ার কারণেও। প্রথম ইনিংসে বোলিংয়ের সময় গোড়ালির ইনজুরি নিয়ে মাঠ ছাড়া ডেল স্টেইন আর সিরিজই খেলতে পারবেন না। ফলে তাকে ছাড়াই ছোট লক্ষ্য নিয়ে লড়াইয়ে নামতে হয় তাদের।

ছোট লক্ষ্যটা আরো ছোট হয়ে যায় ওপেনিং জুটিতে ভারতের ৩০ রান যোগ হওয়ার পর। কিন্তু ওই ৩০-এর ঘরে আরো দুই উইকেট হারায় ভারত এবং ম্যাচ থেকে তাদের মোটামুটি বিদায় ঘটে যায় তখনই। সেটা অবশ্য তিন উইকেট পড়ার কারণে নয়, বরং উইকেট থেকে প্রোটিয়া বোলারদের সুবিধা আদায় করে নেয়ার ধরন প্রকাশ হোয়ার কারণে।

স্কোরবোর্ডে ১০০ রান উঠার আগেই সাত উইকেট হারিয়ে বসে ভারত। এর মধ্যে তিন উইকেটই নেন ফিল্যান্ডার। শেষের দিকে আরো তিন উইকেট নেন তিনি। ভারত সবচেয়ে বড় বেশি রান পায় ভুবনেশ্বর কুমার ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনের অষ্টম উইকেট জুটিতে। এই জুটিতে এ দুজন যোগ করেন ৪৯ রান। যে রানে ভর করে মোটামুটি এগোই ভারত। কিন্তু তাদের জয়ের আশা শেষ হয়ে যায় অনেক আগেই।

এই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা করে ২৮৬ রান। সর্বোচ্চ ৬৫ রান করেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। ফ্যাফ ডু প্লেসি করেন ৬২ রান। এ ছাড়া আর কেউ তেমন কিছু করতে পারেননি। ভারতের হয়ে ভুবনেশ্বর কুমার চার উইকেট নেন।

পরে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ভারত গুটিয়ে যায় মাত্র ২০৯ রানে। অর্থাৎ প্রথম ইনিংস শেষেই তারা পিছিয়ে পড়ে ৭৭ রানে। এই রানটাও অবশ্য কঠিন ছিলো ভারতের জন্য। কিন্তু হার্দিক পান্ডিয়ার ৯৩ রানের ইনিংসটি তাদেরকে পথ দেখায়। এই ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ফিল্যান্ডার ও কাগিসো রাবাদা তিনটি করে উইকেট। পরে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের পেসারদের দাপটে ১৩০ রানে গুটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ভারতের সামনে শেষ ইনিংসে ২০৮ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায়। যা তাড়া করা সম্ভব হলো না কোহলিদের পক্ষে। ফলে হার দিয়েই সিরিজ শুরু করতে হলো তাদের।