পান্ডিয়ার দাপট সামলে এগিয়ে থাকলো দক্ষিণ আফ্রিকা

ব্যাট হাতে করেছেন ৯৩ রান। যা ভারতকে বাঁচিয়েছে বড় বিপদ থেকে। এরপর বল হাতে দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ইনিংসে হেনেছেন জোড়া আঘাত। যার ফলে কেপটাউট টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ১৪২ রানে এগিয়ে থাকলেও ঠিক স্বস্তিতে নেই দক্ষিণ আফ্রিকা। সিরিজের প্রথম টেস্টে এখন পর্যন্ত ভারতের সেরা পারফর্মার তাই হার্দিক পান্ডিয়াই।

তিন উইকেটে ২৮ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে ভারত। প্রথম দিন শেষে পাঁচ রান করা চেতেশ্বর পুজারা দ্বিতীয় দিনে ২১ রান যোগ করে আউট হন। তাকে আউট করেন ফিল্যান্ডার। যা দেশের মাটিতে তার শততম টেস্ট উইকেট। আর শূন্য নিয়ে দিন শুরু করা রোহিত শর্মা পাঁচ রানের বেশি করতে পারেননি। অর্থাৎ প্রথম দিন বিকেলে ভারতীয় ব্যাটিং লাইনে যে বিপর্যয়ের আভাস ছিলো, তা বজায় থাকে দ্বিতীয় দিনেও।

প্রথম দিনে ভারতের আউট হওয়া ব্যাটসম্যানরা ছিলেন মুরালি বিজয়, শেখর ধাওয়ান ও বিরাট কোহলি। এদের মধ্যে বিজয় ও কোহলি দুই অংকই ছুঁতে পারেননি। বিজয় করেন এক রান। আর কোহলির ব্যাট থেকে আসে পাঁচ রান। মজার ব্যাপার হলো, এ বছরের আগের চার পঞ্জিকা বর্ষের মধ্যে তিনটিতে নিজের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছেন কোহলি। একবার করেছেন ৯১। কিন্তু এবার দুই অংকও ছুঁতে পারেননি তিনি।

প্রথম দিনের বিকেলের ব্যর্থ দ্বিতীয় দিনে টেনে আনায় স্কোরবোর্ডে ১০০ রান উঠার আগেই সাত উইকেট হারিয়ে বসে ভারত। দেখা দেয় ফলোঅনে পড়ার শঙ্কাও। এ অবস্থা অষ্টম উইকেটে গিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন হার্দিক পান্ডিয়া ও ভুবনেশ্বর কুমার। এ দুজন অষ্টম উইকেটে যোগ করেন ৯৯ রান। তাদের জুটিতেই মূলত ফলোঅনে পড়ার লজ্জা এড়ায় ভারত।

শেষ পর্যন্ত ভারতের ইনিংস শেষ হয় ২০৯ রান। অর্থাৎ প্রথম ইনিংস শেষেই বিরাট কোহলিরা পিছিয়ে পড়েন ৭৭ রানে। ভ্যারননি ফিল্যান্ডার এবং কাগিসো রাবাদা তিনটি করে উইকেট নেন। মরনে মরকেল এবং এক বছরেরও বেশি সময় পর টেস্ট ক্রিকেটে ফেরা স্টেইন নেন দুই উইকেট।

এতোদিন পর ফিরে দুই উইকেট নিলেও তিনটা স্টেইনের ছিলো না। নিজের ১৮তম ওভারের তৃতীয় বলটা করার পর মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। পরে যেতে হয় হাসপাতালেও। ধারণা করা হচ্ছে, তার ডান পায়ের গোড়ালি থেতলে গেছে। তিনি দীর্ঘ দিন খেলার মধ্যে ছিলেন না। এর উপর আবার কোনো দীর্ঘ পরিসরের ম্যাচ না খেলেই নেমে গিয়েছিলেন টেস্ট খেলতে। খুব সম্ভবত, এতোদিন অনভ্যস্ততার কারণেই গোড়ালিতে চোট পেয়েছেন তিনি।

৭৭ রানে গিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫২ রান করেও ফেলে তারা। এরপরই তাদের ইনিংসে আঘাত হানেন পান্ডিয়া। প্রথমে বাংলাদেশের সঙ্গে সিরিজে অভিষেক হওয়া অ্যাইডেন মার্করামকে ফেরান তিনি। উঁচু হয়ে আসা বল কাভারে ড্রাইভ করতে গিয়েছিলেন মার্করাম। কিন্তু টপ এজড হয়ে বল চলে যায় পয়েন্টে দাঁড়ানো ভুবনেশ্বরের হাতে। স্কোরবোর্ডে সাত রান যোগ করার পর আরেক ওপেনার ডিন এলগারকেও হারায় সাউথ আফ্রিকা। এবারও হন্তারক পান্ডিয়া। দুই উইকেট হারিয়ে ৬৫ রান করে দিন শেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। চার রান করে অপরাজিত আছেন হাশিম আমলা। তার সঙ্গে আছেন নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা কাগিসো রাবাদা। তার রান দুই। 

সব মিলিয়ে কেপটাউন টেস্টের দ্বিতীয় দি শেষে ১৪২ রানে এগিয়ে স্বাগতিকরা। বিষয়টি তাদের জন্য আরো স্বস্তির হতো, যদি শেষ বিকেলে পান্ডিয়ার বলে তাদের ওপেনাররা বিদায় না নিতেন। অন্য দিকে, দ্বিতীয় দিন শেষেই ভারতের অবস্থা খুব হতাশার হতো, যদি পান্ডিয়া ব্যাটে-বলে ভারতকে পথ না দেখাতেন। সুতরাং কেপটাউন টেস্টের দ্বিতীয় দিনটা যদি কারো ব্যক্তিগত হয়, তবে ব্যক্তি অবশ্যই হার্দিক পান্ডিয়া!