এক সেঞ্চুরিতেই পরের সিরিজ নিশ্চিত উসমান খাজার!

মঈন আলিকে কাভারের দিকে ঠেলে দৌড় লাগালেন উসমান খাজা। অপরপ্রান্ত থেকে দৌড় শুরু করলেন স্টিভ স্মিথও। তার যখন থামলেন, অস্ট্রেলিয়ার স্কোরবোর্ডে যোগ হলো দুটি রান। এই দৃশ্যাটা কল্পনা করলে, এতে তেমন কোনো বিশেষ কিছু পাওয়া যাবে না। কিন্তু এই দুটি রান উসমান খাজার কাছে বিশেষ কিছু। কারণ এই দুই রান করেই ১৩ মাস পর টেস্ট সেঞ্চুরি পেলেন তিনি। যা করে নাকি অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেও নিজের জায়গাটা নিশ্চিত করে ফেলেছেন খাজা— মনে করেন মাইক হাসি।

উসমান খাজা কেনো দলে— অ্যাশেজের দল ঘোষণার পরপরই এমন রব উঠে গিয়েছিলো। উসমান খাজার পক্ষে দাঁড়ানোর মতো তেমন কোনো যুক্তিও ছিলো না তার সমর্থকদের। কারণ ব্যাট হাতে একের পর এক ব্যর্থতার প্রমাণই কেবল রাখছিলেন তিনি। তাকে প্রশ্নটা তাই স্বাভাবিকই ছিলো। সেই সব প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য খাজার যা করা উচিত, অ্যাশেজে তা করতে পারছিলেন না তিনি। অবশেষে সিডনিতে নিজের প্রথম ইনিংসে ১৭১ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে স্বস্তিই পেলেন খাজা। আর ওই স্বস্তিটা এলো মঈন আলির বলটা কাভারে ঠেলে দুই রান নিয়ে।

সেঞ্চুরি পূরণের পর খাজা প্রথমে মুঠো করা হাত ছুড়লেন বাতাসে। তারপর হেলমেট খুলে এক হাতে না নিয়ে, আরেক হাতে ব্যাট ধরে তাকালেন আকাশের দিকে। এর মধ্যে তাকে অভিনন্দন জানাতে ছুটে এলেন স্টিভ স্মিথ। সিডনির গ্যালারি থেকে মিললো দর্শকদের দাঁড়িয়ে পড়া অভিভাবদন। সব মিলিয়ে খাজা যেনো শেষ করলেন তার ব্যর্থতার দীর্ঘ পথটা।

১৩ মাস পর টেস্টে সেঞ্চুরি পাওয়া খাজাকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন সাবেক অস্ট্রেলীয় তারকা মাইক হাসি। তিনি বলেন, ‘খাজা দলে থাকবে কি থাকবে না, এ নিয়ে সমালোচনা চলছিলো। কিন্তু এই ইনিংসটি খেলে সে প্রমাণ করেছে যে, অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলের তিন নম্বর জায়গাটা সে দাবি করতেই পারে।’

স্পিনারদের বিপক্ষে খাজা বরাবরই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে এসেছেন। কিন্তু বলের হিসেবে নিজের দীর্ঘতম প্রথম শ্রেণির ইনিংসটি খেলার পথে স্পিনারদের বিপক্ষে দারুণ স্বাভাবিক ছিলেন তিনি। মনেই হয়নি যে, স্পিন খেলতে তার কোনো সমস্যা হয়। এমন ইনিংস দেখে মুগ্ধ হাসি তাই বলে দিলেন, ‘আমার মনে হয় এই ইনিংসটা খেলার পর খাজার দক্ষিণ আফ্রিকা সফরটা নিশ্চিত। এখনই তার দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের বিমানের টিকিট পাওয়া উচিত!’

দারুণ ইনিংসটি খেলার পর সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে খাজা বলেন, ‘আমি সব সময় অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টেস্ট খেলতে চাই। কিন্তু সব কিছু ঠিকঠাকভাবে হচ্ছিলো না। তবে আমি চেষ্টা করা থেকে থামিনি। আমি সময় আমাদের দলের জন্য টপাঅর্ডারে আরো রান যোগ করতে চেয়েছি।’

ঢাকা বা দিল্লিতে স্পিনারদের বিপক্ষে খাবি খেয়ে গেলেও ঘরের মাঠে খাজা স্পিনারদের যেভাবে খেলেছেন, তাতে আপ্লুত অস্ট্রেলীয় মিডিয়া। খাজা যে স্পিন খেলতে পারেন— এটা নিয়ে তাদের একটার পর একটা প্রতিবেদন প্রকাশ, সেটাই প্রমাণ করছে!