প্রবল তুষারঝড়ে লণ্ডভণ্ড আমেরিকা, নিহত ১৭

আমেরিকানদের জন্য ২০১৮ সালে শুরুটা হলো প্রচণ্ড হাড় কাঁপানো শৈত্য প্রবাহের মধ্য দিয়ে। দেশটির স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার আবহাওয়ার চরম অবনতি ঘটেছে। হিমাঙ্কের নিচের তাপমাত্রার পাশাপাশি ৫০ থেকে ৬০ মাইল বেগে প্রবাহিত হচ্ছে তুষার ঝড়। আবহাওয়ার এমন অবনতিতে নিহত হয়েছেন এখন পর্যন্ত ১৭ আমেরিকান।

আমেরিকান গণমাধ্যম বলছে, প্রচণ্ড ঠাণ্ডা আর তুষারপাতে গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্যের প্রায় দেড় কোটি মানুষ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বাড়িতেই অবস্থান করেন অনেকে। গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন সেখানে বসবাস করা ৩ লাখের বেশি বাংলাদেশি।

মার্কিন কেন্দ্রীয় সরকার বলছে, ঠাণ্ডা আর তুষার ঝড়ে উইসকনসিনে ৭, টেক্সাসে ৪, নর্থ ক্যারোলিনায় ৩, মিসৌরি, মিশিগান এবং নর্থ ডাকোটায় একজন করে নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে আবহাওয়া অফিস জানায়, তুষার পাতে এসব এলাকায় অন্তত ১২ ইঞ্চি থেকে ২৪ ইঞ্চি পর্যন্ত তুষার জমেছে। বস্টন ও লং আইল্যান্ডে ১২ থেকে ১৫ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। বস্টনের রাস্তাগুলো ডুবে গেছে বরফের পানিতে।

এদিকে ৪ জানুয়ারি থেকে এমন ভয়াবহ দুর্যোগে নিউইয়র্ক, বস্টন, ফিলাডেলফিয়া, বাল্টিমোর, প্রভিডেন্স, রোড আইল্যান্ডসহ যুক্তরাষ্ট্রে মোট ১১টি সিটির সকল স্কুলে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারি অফিসগুলোতেও উপস্থিতির ওপর নেই কোনো বাধ্যবাধকতা।

জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে- নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সি, পেনসিলভেনিয়া, ম্যাসেচুসেটসহ দেশটির বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকায়। এছাড়াও বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া লোকজনকে বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ায় নিউইয়র্ক এবং নিউজার্সিতে দুই হাজার ফ্লাইটসহ বস্টন, ফিলাডেলফিয়া, ভার্জিনিয়া প্রভৃতি এলাকার ৪ হাজার ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।

প্রবাসী বাংলাদেশিরা জানান, ৫০ থেকে ৬০ মাইল বেগে প্রবাহিত তুষারঝড়ে সবকিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রা হওয়ায় ঘরের বাইরে যাচ্ছেন না কেউ। সড়ক-মহাসড়কে পুলিশ আর এ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কোন যানবাহন চলাচল নেই বললেই চলে। আবহাওয়ার বুলেটিন বলছে, আগামী রোববার পর্যন্ত তাপমাত্র হিমাঙ্কের নিচেই থাকবে।