প্রতিপক্ষ হয়ে যাবেন সুজন-হাথুরুসিংহেও!

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কোনো প্রধান কোচ নেই আপাতত। আসলেই কি নেই? কাগজে-কলমে আসলেই নেই। তবে ওই পদের যে কাজ, সেই কাজের জন্য একজন আছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। যদিও তার পদের নাম আসলে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর। পদের নাম এটা হলেও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আসন্ন সিরিজে প্রধান কোচের কাজই করবেন সুজন। অর্থাৎ এই সিরিজে পরস্পরের প্রতিপক্ষ হয়ে যাচ্ছেন সুজন ও চান্দিকা হাথুরুসিংহে।

কদিন আগেও বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুমের সর্বেসর্বা ছিলেন এ দুজন। কিন্তু হঠাৎ করে বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব ছেড়ে দেন চান্দিকা। ফলে প্রধান কোচের পদটা হয়ে পড়ে শূণ্য। এই পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন কোচের দায়িত্ব নেয়ার দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন সুজন। বোর্ড থেকেও ইতিবাচক মনোভাব ছিলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোচের পদ নয়, সুজনকে দেয়া হয়েছে টেকনিক্যাল ডিরেক্টরের পদ।

এ বিষয়ে আজ সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন সুজন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই দায়িত্ব পাওয়া নিয়ে তিনি বলেন, ‘আসলে দায়িত্বটা আমি কাদের বিপক্ষে পেলাম, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ হলো ভালো পারফর্ম করা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আমাদের সিরিজটি ভালো যায়নি। এখন ভিন্ন কন্ডিশন, ভিন্ন প্রতিপক্ষ; আমাদের তাই ভালো কিছু করতে হবে। আমি মনে করি আমাদের দলটা দারুণ ভারসাম্যপূর্ণ এবং আমাদের টেস্ট জেতার ক্ষমতা আছে।’

দলটা ভারসাম্যপূর্ণ হলেও কোচিং স্টাফে প্রধান কোচের পদের শূণ্যতা কিছুটা হলেও ছন্দ কেটে দিচ্ছে বাংলাদেশ দলের। প্রধান কোচের বদলে আছেন টেকনিক্যাল ডিরেক্টর। এ বিষয়ে সুজন যা বললেন, তাতে এটা স্পষ্ট যে, পদের নাম টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হলেও তিনিই মূলত সামনের সিরিজে বাংলাদেশের প্রধান কোচ।

সুজন বলেন, ‘প্রধান কোচ বলে আপাতত কিছু নেই। তবে আমার কাজ হবে ওই রকমই। শুধু প্রধান কোচের জায়গায় পদের নাম হবে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর। আমার কাছে অবশ্য পদটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। বাংলাদেশ দলের জন্য কাজ করতে পারাই আমার কাছে বেশি বড়।’

বড় এই কাজটা করতে গিয়ে সুজন পড়ে যাচ্ছেন বড় চ্যালেঞ্জে। সেটা যতোটা না প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের নিয়ে, তার চেয়ে বেশি প্রতিপক্ষের কোচ নিয়ে। চান্দিকা যেভাবে বাংলাদেশ ছেড়ে গেছেন, তা বিসিবির কাছে একেবারেই প্রত্যাশিত ছিলো না।

শোনা যায়, বাংলাদেশে থাকা অবস্থায় বিসিবির যে কজনের সঙ্গে চান্দিকার ভালো সম্পর্ক ছিলো, সুজন তাদের একজন। সেই সুসম্পর্ক এখন অতীত। দুজনকে এবার লড়তে হবে পরস্পরের বিপক্ষে। বিষয়টা ঠিক কী কেমন, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন সুজন। তিনি বলেন, ‘চান্দিকা তো বাংলাদেশ সম্পর্কে সবই জানে। আমাদের তাই সেভাবেই চিন্তা করতে হবে।’

চান্দিকার বিপক্ষে একটা ঠাণ্ডা যুদ্ধের ঘোষণাই কি দিলেন সুজন? তিনি আরো বলেন, ‘খেলাটা শেষ পর্যন্ত পরিকল্পনার নয়, বরং ব্যাট-বলের। আমাদের কাজ হবে পরিকল্পনা যা থাকবে, তা মাঠে প্রয়োগ করা। আমরা সেভাবেই চেষ্টা করবো। ২০১৮ সালটা যাতে ভালো কিছু দিয়ে শুরু হয়, এটাই হবে আমাদের প্রত্যাশা।’

টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পদ নিয়ে প্রধান কোচের দায়িত্বটা সুজন কিভাবে পালন করেন, সেটাই আপাতত দেখার বিষয়। সুজনের কাজ যদি বিসিবির পছন্দ হয়ে যায়, তবে প্রধান কোচের পদে প্রথমবারের মতো তাকে দেখা গেলেও যেতে পারে। কারণ এমনিতেই তার প্রতি বিসিবির অনুরাগের খবর সবারই জানা। সঙ্গে যদি ভালো পারফর্ম্যান্স যোগ হয়, তাহলে তার কোচ হওয়ার সম্ভাবনার পালে যে জোর হাওয়া লাগবে, এটা বুঝতে নিশ্চয় ক্রিকেটবোদ্ধা হওয়ার দরকার নেই!