নাতিকে দেখতে গিয়ে লাশ হলেন বুমরাহ'র দাদা!

বিশ্বের সবচাইতে ধনী ক্রিকেট বোর্ড ভারতের অন্যতম প্রধান বোলিং ভরসা জাসপ্রিত বুমরাহ। কোটিপতি এই বোলারের বাবার বাবা মানে বৃদ্ধ দাদু জীবন-যাপন করতেন অটো চালিয়ে, এটা পুরনো খবর। নতুন খবর হলো, সেই বুমরাহ যখন শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে খেলছিলেন। তখন নদী থেকে উদ্ধার হয়েছে তার সেই দাদুর লাশ। জানা গেছে, শেষবারের মতো নাতিকে দেখার উদ্দেশ্যেই বাড়ি থেকে বের হন তিনি। কিন্তু ফিরেন লাশ হয়ে।

ভারতীয় মিডিয়া বলছে, প্রিয় নাতি বুমরাহকে দেখার জন্যই ঘর থেকে বের হয়েছিলেন তার দাদু সন্তোক সিং বুমরা। এরপর দুইদিন নিখোঁজ থাকার পর তার লাশ উদ্ধার করা হয়। মর্মান্তিক এই কাহিনী ভারতীয় হিন্দি সিরিয়ালে দেখানো কূট-ঘটনার মতোই। অনেকেই বলছেন, বুমরার মা বাড়িতে আসতে দেননি সন্তোক সিংকে। এছাড়াও রয়েছে পারিবারিক কলহ। 

গত শুক্রবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন বুমরার দাদা সন্তোক সিং বুমরা। আজ রোববার এনটিভি জানায়, ভারতীয় স্টার বুমরার দাদুর লাশ আহমেদাবাদের সাবরমতি নদীর গান্ধি ব্রিজ ও দধিচি ব্রিজের মাঝামাঝি এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

বুমরার ফুপু রাজেন্দর কাউর গণমাধ্যমকে বলেন, 'আমার ভাতিজা বুমরার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাতে ৫ ডিসেম্বর উত্তরাখণ্ড থেকে আহমেদাবাদের পথে রওনা দেন বাবা সন্তোক। কিন্তু বুমরার মা নাতির সঙ্গে দেখা করতে দেননি। আমার বাবা ভাবীর (বুমরার মা) স্কুলেও গিয়েছিলেন কিন্তু তাকে সুযোগ দেয়া হয়নি।'

বুমরার মাকে দায়ী করে কাউর অভিযোগ করেন, 'বুমরার মা দলজিত বাবার সঙ্গে আমাদের ভাতিজার সাক্ষাতের বিষয়ে রাজি ছিলেন না। তিনি চাইতেন না দাদা পরিবারের সঙ্গে জাসপ্রিত বুমরার কোন যোগাযোগ থাকুক। এমনকি ফোন নাম্বার পর্যন্ত দেয়া হয়নি।'

ভারতীয় গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, বুমরাহ'র দাদুর নাম সান্তোক সিং বুমরাহ। ৮৪ বছর বয়সী এই বৃদ্ধ থাকতেন উত্তরাখণ্ডের উদ্দাম সিং নগরে। ভাড়া বাসায় থেকে কোনরকমে জীবন-যাপন করতেন তিনি। নিজেই অটো চালিয়ে সংসার চালাতেন।

২০০১ সালে বুমরাহ'র দাদার পরিবারে নেমে এসেছিল কষ্টের ছায়া। তখনই মারা যান জাসপ্রিত বুমরাহ'র বাবা জসবীর সিং বুমরাহ। আজকের এই আলো ছড়ানো বোলারের বয়স তখন মাত্র ৭ বছর। এরপর জাসপ্রিতকে নিয়ে জীবন যুদ্ধে নেমে পড়েন তার মা স্কুলশিক্ষিকা দলজিৎ। এরপর থেকে আলাদা হয়ে যান এই স্কুল শিক্ষিকা।

এর আগে জাসপ্রিতের দাদু বলেছিলেন, 'জাসপ্রিতের বাবা মারা যাওয়ার পর আমার ব্যবসা দেখাশুনা করার মতো সংসারে কেউ ছিল না। বয়সও হয়ে যাচ্ছিল। ফ্যাক্টরি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হই। পরে উত্তরাখন্ডে চারটি টেম্পো কিনে ব্যবসা করলেও সেটি আর দাঁড় করানো সম্ভব হয়নি।'

জাসপ্রিত বুমরাহ নাকি তার কোন খোঁজ খবরও রাখে না। দাদু টিভিতে দেখেন নাতিকে। সান্তোক এর আগে মিডিয়াকে বলেছিলেন, 'জীবনের শেষ বেলায় আমার শেষ ইচ্ছা নাতিকে একবার বুকে জড়িয়ে ধরবো।' বৃদ্ধের এই শেষ ইচ্ছা শেষ পর্যন্ত পূরণ হলো না।