নতুন আরও তিন ব্যাংকের অনুমোদন কতোটা যুক্তিসঙ্গত?

বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে এখন অর্ধশত বাণিজ্যিক ব্যাংক রয়েছে। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, এই সংখ্যাটা চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি। এর মধ্যে অর্থমন্ত্রী সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে আরও তিনটি ব্যাংকের অনুমোদনের কথা বলেছেন।

কয়েক বছর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নয়টি নতুন ব্যাংক অনুমোদন দেওয়া হয়। রাজনৈতিক বিবেচনায় ওই ব্যাংকগুলোর অনুমোদন দেয়া নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, এসব সমালোচনার মধ্যে নতুন করে আরও তিনটি ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া আদৌ কী যুক্তিসঙ্গত?

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ‘এর আগে সরকার যখন নয়টি ব্যাংকের অনুমোদন দিয়েছিল তখন আমরা বলেছিলাম, দেশের অর্থনীতির আকার অনুসারে আর ব্যাংক দেওয়া ঠিক হবে না। ব্যাংক নয়টির মধ্যে ফারমার্স ব্যাংক টিকে গেছে। এনআরবি ব্যাংকসহ সমস্যাযুক্ত কিছু ব্যাংক আছে। এরই মধ্যে নতুন তিনটি ব্যাংকের অনুমোদন দেয়াটা আমি কোনভাবেই যুক্তিযুক্ত বলে মনে করি না।’

ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের অবস্থা মোটেও ভালো না। তবে এতে করে গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন না। তাই বলে ভবিষ্যতেও যে গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না সে নিশ্চয়তা দিতে পারবো না।’

সম্প্রতি ব্যাংকিং খাতে পরিবারতন্ত্রকে গুরুত্ব দিয়ে আইনের সংশোধন হতে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠে। সংসদীয় কমিটি এ সংক্রান্ত একটি বিল চূড়ান্ত করে দিয়েছে।

প্রস্তাবিত আইনে বলা হচ্ছে, যেকোন বেসরকারি ব্যাংকে একই পরিবার থেকে চারজন সদস্য পরিচালনা পর্ষদে থাকতে পারবেন।

এই বিষয়ে উদ্বিগ্ন সাবেক ডেপুটি গভর্নর বলেন, ‘স্বাধীনতার আগে ২২ পরিবার নামে কতিপয় ধনী পরিচিত ছিল যাদের কাছে দেশের শতকরা ৮০ ভাগ সম্পদই কুক্ষিগত ছিল এবং তারা প্রত্যেকেই ব্যাংকের মালিক ছিলেন। সেসময় বঙ্গবন্ধু বাঙালিদের নিয়ে সেই ২২ পরিবারের বিরোধিতা করেছিলেন। তবে এখন কেন দেশ আবার ২২ পরিবারতন্ত্রে ফিরে যাচ্ছে?’

আইনে এ ধরনের পরিবর্তন ব্যাংকিং খাতে লুটপাট এবং চরম অব্যবস্থাপনার সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।