চট্টগ্রামের উইকেট যেনো ব্যাটিংয়ের স্বর্গরাজ্য

চলতি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ২০০-এর উপরে স্কোর হয়েছে পাঁচটি। এর মধ্যে একটি মাত্র ঢাকায়। বাকি চারটির মধ্যে দুটি সিলেটে এবং দুটি চট্টগ্রামে। এটুকু তথ্যে অবশ্য বোঝা যাচ্ছে না যে চট্টগ্রামের উইকেট ব্যাটসম্যানের দিকে কতোটা বন্ধুতার হাত বাড়িয়ে রেখেছে।

বিপিএলের সিলেট পর্বে দুই একটা বড় স্কোর দেখা গেলেও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বড় রানের জন্য দর্শকদের যে তৃষ্ণা, তা মিটেনি। বরং একটা করে ম্যাচ গেছে এবং দর্শকদের তৃষ্ণা আরো বেড়েছে। কিন্তু তৃষ্ণা মেটানোর মতো ব্যাটিং পারফর্ম্যান্স সেভাবে চোখে পড়েনি।

সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে মোট আটটি। এর মধ্যে তিনটি ম্যাচের উভয় ইনিংসে দেড়শর বেশি রান এসেছে। সিলেটের রান খরার বিষয়টি নিশ্চিতভাবে আন্দাজ করা যাচ্ছে এই তথ্যেই। সেখানে মাত্র একটি ইনিংসে ২০০-এর বেশি রান এসেছে।

এরপর বিপিএলের ঢাকা পর্বের প্রথম অংশে অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৬টি ম্যাচ। এর মধ্যে মাত্র পাঁচটি ম্যাচের উভয় ইনিংসে দেড়শর উপরে রান এসেছে। অর্থাৎ রানের জন্য রীতিমত মাথা ঠুকে মরতে হয়েছে ব্যাটসম্যানদের। উইকেটে রান পেতে দুই দিন পরপর এক দিনের বিরতি দিয়েও খুব একটা লাভ হয়নি ঢাকায়।

সিলেটের পর ঢাকায়ও চার-ছক্কার লড়াই দেখতে ম্যাচের পর ম্যাচ অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে দর্শকদের এবং তারপরও সেই অপেক্ষার ইতিবাচক অবসান ঘটেনি। বরং দর্শকরা ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে কমিয়ে দিয়েছিলেন স্টেডিয়ামে আসা। যা স্পষ্টত দেখা গেছে গ্যালারিতে। ম্যাচের পর ম্যাচ গ্যালারির বড় বড় অংশ দেখা গেছে একেবারে ফাঁকা।

রান করার জন্য ব্যাটসম্যানদের যে অসীম যুদ্ধ তা অনেকটাই কেটে গেছে চট্টগ্রামে এসে। ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে মোট ছয়টি ম্যাচ। এর মধ্যে পাঁচটি ম্যাচেই উভয় ইনিংস ছাড়িয়ে গেছে দেড়শর বেশি! এর মধ্যে ২০০ হয়েছে আবার দুটি ম্যাচে।

চট্টগ্রামে ব্যাটসম্যানরা যে রান উৎসবে মেতেছেন, তা তো বোঝাই যাচ্ছে। ব্যাপারটা আরো স্পষ্ট হতে পারে এই তথ্যে যে, বিপিএলে এখন (২৭ নভেম্বর) হাফ সেঞ্চুরি হয়েছে ৩৯টি। এর মধ্যে ১২টিই হয়েছে চট্টগ্রামের মাটিতে। এর মধ্যে আছে বিপিএলে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান ৯৫-ও। সিলেট সিক্সার্সের বিপক্ষে যা করেছেন চিটাগং ভাইকিংসের সিকান্দার রাজা।

চট্টগ্রামের উইকেটে যে এ রকম রান উৎসব হতে পারে, এমন আভাস আগেই দিয়েছিলেন জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের কিউরেটর জাহিদ রেজা বাবু। চট্টগ্রামে বিপিএল শুরুর ঠিক আগের দিন তিনি বলেছিলেন যে, এই ভেন্যুতে স্পোর্টিং উইকেট প্রস্তুত করা হয়েছে। ফলে এখানে দেখা যেতে পারে রান-উৎসব।

বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বে মোট ম্যাচ হবে ১০টি। বাকি থাকা চার ম্যাচে দর্শকদের উচিত হবে চট্টগ্রামের দিকে চোখ রাখা। কারণ বিপিএল আবার ফিরবে ঢাকায়, সেখানে রান হবে নাকি হবে না, তা কে জানে!