নিজেকে তিন ফরম্যাটের উপযোগী করে তুলছেন মুমিনুল

ব্যাটসম্যান হিসেবে তার সক্ষমতার প্রমাণ বলে দিয়ে দেয় তার টেস্ট পরিসংখ্যানই। ক্রিকেটের সবচেয়ে অভিজাত ফরম্যাটে এক সময় তার গড় ছিলো অবিশ্বাস্য। ক্যারিয়ারের শুরুতে অন্তত ২০টি টেস্ট ইনিংস খেলা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তার গড় ছিলো ঠিক ব্রাডম্যানের পরই! বলা হচ্ছে মুমিনুল হকের কথা। নানা ঘটনা ও দুর্ঘটনার ফেরে পড়ে যার পুরোনো রূপটা প্রায় বিস্মৃত। কিন্তু মুমিনুল থামেননি। বরং নিজেকে বদলে ফেলছেন নতুন করে।

চান্দিকা হাথুরুসিংহে কোচ হয়ে আসার পর থেকে মুমিনুলের গায়ে সেঁটে দেয়া হয় টেস্ট বিশেষজ্ঞতের তকমা। যদিও বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গন খুব ভালো করেই জানতো যে, মুমিনুল শুধু টেস্টের খেলোয়াড় নন। বরং তার সক্ষমতা আছে তিন ফরম্যাটেই দেশের সেরা ব্যাটসম্যান হওয়ার।

সক্ষমতা থাকতেও চান্দিকার নানা হঠকারী সিদ্ধান্তের কারণে মুমিনুল এখনও কেবলই টেস্টের ব্যাটসম্যান। তবে তিনি তা আর থাকতে চাইছেন না। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) নিয়ে ব্যস্ত মুমিনুল এখন চট্টগ্রামে। সেখানেই, এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে রোববার অনুশীলন ছিলো মুমিনুলের দল রাজশাহী কিংসের। অনুশীলনের ফাঁকে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি।

টেস্ট ব্যাটসম্যানের তকমা সরিয়ে ফেলা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আসলে শুধু টেস্ট বা শুধু ওয়ানডে নিয়ে ভাবি না। নিজেকে সব ফরম্যাটের উপযোগী মনে করি। এ জন্য আমি নিজের ব্যাটিং নিয়ে আরো বেশি পরিশ্রম করছি, উন্নতি করার চেষ্টা করছি।’

উন্নতিটা ঠিক কী— তা অবশ্য জানাননি বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। বিপিএলে এখন পর্যন্ত আট ম্যাচ খেলে ১৮৪ রান করেছেন মুমিনুল। যা তার দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান। নিজের উন্নতির বিষয় নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি অল্প অল্প জিনিস নিয়ে কাজ করছি। উন্নতির আভাস পাচ্ছিও। দেখা যাক কী হয়। আশা করছি ভালো হবে— ইনশাল্লাহ।’

উন্নতি করতে হবে— মানে নিশ্চয় এটা নয় যে, মুমিনুলের ব্যাটিংয়ে দৃষ্টিগ্রাহ্য কোনো ত্রুটি আছে। মুমিনুল বলেন, ‘আসলে টেস্টের জন্য যে সব বিষয় নিয়ে কাজ করি, তার সুফল পাওয়া যাচ্ছে টি-টোয়েন্টিতেও। আমি সব সময়ই বেসিক ক্রিকেট খেলতে চাই। এটাই আমার মূল শক্তি।’

মুমিনুল তার ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি চিন্তা করছেন দল নিয়েও। সেটা অবশ্য করারই কথা। কারণ তার দল খেলে ফেলা আট ম্যাচের মধ্যে জিতেছে মাত্র তিনটি। বাকি পাঁচ ম্যাচ তারা হেরেছে। আর দুটি ম্যাচ হারলে তাদের নিতে হবে বিদায়। মুমিনুল এটা নিয়ে চিন্তা করছেন বটে, তবে একই সঙ্গে তিনি আত্মবিশ্বাসীও।

মুমিনুল বলেন, ‘গত বছরও আমাদের প্রায় এমন অবস্থা ছিলো। কিন্তু আমরা চট্টগ্রামে এসে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলাম। আশা করি এবারও তেমন কিছু হবে। এখানে আমাদের দুইটা ম্যাচ আছে, সেগুলো জেতার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।’

জেতার সর্বোচ্চ চেষ্টা করার প্রথম ধাপে মুমিনুলরা সামনে পাচ্ছেন খুলনা টাইটান্সকে। ২৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় ম্যাচটি হবে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। আট ম্যাচের পাঁচটি জিতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা খুলনার বিপক্ষে এই ম্যাচে মুমিনুলদের জন্য জেতাটা সহজ হওয়ার কথা নয়। কিন্তু নিজেকে বদলে ফেলার চেষ্টায় থাকা মুমিনুল যদি বড় কিছু করে দেন, কাজটা সহজও হয়ে যেতে পারে তাদের জন্য।