মাশরাফি নামলেন, ম্লান হয়ে গেলেন গেইলও!

ক্রিস গেইল এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট; দুজন যেনো দুজনের আত্মাসঙ্গী। কিন্তু এই কথাটা আর আগের মতো সত্য নেই। গেইল তার প্রভাব হারাচ্ছেন বলেই এমন হচ্ছে। তারপরও গেইলকে এখনো বাতিলের খাতায় ফেলে দেয়ার স্পর্ধা নিশ্চয় দেখাবেন না। সেটা না হোক। আজ অন্তত কয়েক মিনিটের জন্য হলেও গেইল ম্লান এবং আক্ষরিক অর্থেই ম্লান হয়ে থাকলেন মাশরাফি বিন মর্তুজার কাছে।

চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে রংপুর রাইডার্স ১৭৭ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে ষষ্ট ওভারের দ্বিতীয় বলেই হারায় ব্রেন্ডন ম্যাকাকলামকে। তখনও স্কোরবোর্ডে ওঠেনি সন্তুষ্ট হওয়ার মতো রান। এ সময় সবাইকে অবাক করে দিয়ে, জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ১৭ হাজার দর্শককে বিস্মিত করে দিয়ে নেমে পড়েন মাশরাফি বিন মর্তুজা।

ক্যারিয়ারের প্রায় শেষ পর্যায়ে থাকা মাশরাফি অনেক আগেই তার ব্যাটিং সক্ষমতার সেরাটা হারিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু একেবারে যে ফুরাননি, সেটাও জানা ছিলো। সেই জানা ব্যাপারটাই আবার দেখালেন মাশরাফি। ১৭ বলে করলেন ৪২ রান! শুরুটা করেন চার দিয়ে। এরপর একে একে মারেন আরো তিনটি চার। সঙ্গে তিনটি বিশাল ছয়।

মাশরাফি কেনো হঠাৎ তিনে নেমে এলেন, দর্শকরা যখন এই বিস্ময়ে বিমূঢ়; তখন বিস্ময়ের মাত্রা সপ্তম নিয়ে গেলেন মাশরাফি নিজেই। সেটাও চোখ ধাঁধানো ব্যাটিংয়ের অনুপম প্রদর্শনীতে। মজার ব্যাপার হলো, মাশরাফি চার-ছয় দেখে উল্লাসে ফেটে পড়ছিলো যে গ্যালারি, তারা আসলে মাশরাফির প্রতিপক্ষ চিটাগং ভাইকিংসের ঘরের মানুষই!

মাশরাফির ক্যারিয়ার একটু একটু করে এগিয়েছে, আর কথা উঠেছে যে, তিনি হতে পারতেন ক্রিকেট ইতিহাসেরই সেরা অলরাউন্ডার। কিন্তু ইনজুরিজর্জর দুঃসময় তাকে সে সুযোগ দেয়নি। বোলিংটা ঠিক রাখতে গিয়ে ব্যাটিংয়ের দিকে আর সেভাবে মনোযোগী হতে পারেননি তিনি। তারপরও মাঝে মাঝে ব্যাটিং দক্ষতার যে অবিশ্বাস্য প্রদর্শনীর আয়োজন তার ব্যাটে হয়েছে, তা প্রায় একেবারে বিনা শ্রমে!

সেই প্রদর্শনীর আরো একটা পর্বের মঞ্চায়ন হলো জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। যেখানে বিস্ময়ে ঘোরই কাটলো না দর্শকদের। ১৭টা বলে দর্শকরা যেনো হয়ে থাকলেন ইন্দ্রজালে ডুবে যাওয়া জাদুর দর্শক। যে দর্শককূলে হারিয়ে গেলেন স্বয়ং ক্রিস গেইলও!