পকেটের শেষ সম্বল দেড় হাজারের বিনিময়ে পেলেন দুই কোটি!

কার ভাগ্য কখন, কীভাবে বদলে যায় সেটা বোধ হয় কেবল মাত্র সৃষ্টিকর্তাই জানেন। সাধারণ মানুষের পক্ষে সেটা আন্দাজও করা সম্ভব নয়। এই যেমন যুক্তরাষ্ট্রের এক সহায় সম্বলহীন মানুষ আরেকজনের বিপদের সময় দেড় হাজার দিয়ে সাহায্য করে পরে পেলেন দুই কোটি!

কেট ম্যাকক্লার নামের যুক্তরাষ্ট্রের এক ধনী নারী ফিলাডেলফিয়া যাচ্ছিলেন। এমন সময় পথে তার সঙ্গে দেখা হয় সহায় সম্বলহীন, অসহায় এক মানুষ জনি ববিটের সঙ্গে। নিঃস্ব এই মানুষটির নেই বাড়ি-ঘর কিংবা সংসার। পরিচয়ের অল্প সময়ের মধ্যেই বড় ধরণের বিপদে পড়েন কেট।

ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, সাড়া জাগানো এই ঘটনাটি গত মাসের। ফিলাডেফিয়া যাওয়ার পথে গাড়ির জ্বালানি শেষ হয়ে যায় কেটের। অবস্থা এমন যে, আশপাশের কোনো গ্যাস স্টেশন খুঁজে বের করার মতো জ্বালানিও ছিল না গাড়িতে।

জানা গেছে, জ্বালানি শেষ হওয়ার পর কেট যেখানে গাড়ি থামিয়েছিলেন সেই রাস্তার পাশে বসেছিলেন ববিট। ববিট কীভাবে যেন বুঝতে পারেন কেট বিপদে পড়েছে। এরপর কেটের ঘটনা তিনি শুনলেন। এরপর ববিট কেটকে গাড়িতে বসে দরজা ভালো করে দরজা লাগিয়ে বসতে বললেন।

এরপর ববিট দূরের একটা গ্যাস স্টেশনে গিয়ে ২০ ডলার দিয়ে গ্যাসের একটি ক্যান কিনে আনেন। তবে এই ২০ ডলারই ছিল ববিটের শেষ সম্বল। মানুষের উপকারে যিনি এটিও বিলিয়ে দিলেন।

ববিটের এমন মহানুভবতার পর কেট ঠিক করলেন সহায়-সম্বলহীন মানুষটির কাছ থেকে পাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত উপকারের প্রতিদান দেবেন। এরপর দুই সপ্তাহ আগে 'গোফান্ডমি' নামক আমেরিক ভিত্তিক ফেসবুক পেজের সহায়তা নেন তিনি। ঘটনার বিবরণ দিয়ে ববিটের জন্য সাহায্য তুলতে শুরু করলেন তিনি।

গণমাধ্যমকে কেট বলেন, আমার পরিকল্পনা ছিল ববিটের থাকার জন্য অন্তত একটা অ্যাপার্টমেন্ট, চলাফেরার জন্যে গাড়ি এবং আগামী কয়েক মাস জীবন যাপনের জন্য ১০ হাজার ডলার তুলতে হবে। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কেটের এই আহ্বানে জমা পড়লো ২ লাখ ৫২ হাজার ডলার বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ২ কোটি ১৩ লাখ টাকা!

কেট জানান, সেই দিনের ঘটনার পর জনি আমার কাছ থেকে এক ডলারও চাননি। নগদ অর্থ না থাকার কারণে ওই মুহূর্তে তাকে কোনো টাকা পয়সাই দিতে পারিনি। তবে পরে বেশ কয়েকবার ববিটের সঙ্গে দেখা করে তাকে কিছু অর্থ এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়েছি।

বিভিন্ন গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে ববিটের পরোপকারিতার গল্প জানা গেছে। ববিট মূলত নর্থ ক্যারোলিনার বাসিন্দা। মাদকের ভয়াল ছোবলে তার আজকের এই অবস্থা। ৩৪ বছর বয়সী ববিট গত দেড় বছর ধরে রাস্তাতেই থাকছেন। মাদকের কারণে ২০০১ সালে একবার তাকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল।

জানা গেছে, এখনো ববিটের জন্য উঠানো টাকা হস্তান্তর করেননি কেট। থ্যাঙ্কসগিভিং ডে’র আগেই কেট এবং তার প্রেমিক মিলে ববিটের জন্যে আপাতত একটি হোটেল ভাড়া নিয়েছেন। সাপ্তাহিক ছুটির পরই ববিটের জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা করবেন তারা।