‘আমি শেখ হাসিনাকে ক্ষমা করে দিয়েছি...’

আদালতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের চতুর্থ দিনে খালেদা জিয়া বলেছেন, তিনি প্রতিহিংসার রাজনীতি করবেন না। শেখ হাসিনার প্রতি প্রতিহিংসামূলক আচরণ করবেন না। তিনি শেখ হাসিনাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার আদালতে উপস্থিত হয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ের কথা স্মরণ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, 'আমি ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিনের সঙ্গে কোনও সমঝোতা করিনি। তারা সমঝোতা করার চেষ্টা করেছিলেন। আমার কাছে নানা রকম প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু তাতে আমি আপোষ করিনি। তারা জানিয়েছিলেন, জরুরি অবস্থা তুলে দিয়ে তারা নির্বাচনে যেতে চান।’

আওয়ামী লীগ গোপন আঁতাত করে ক্ষমতায় গিয়েছিল এমন অভিযোগ তুলে খালেদা জিয়া বলেন, 'সংবিধান ও গণতন্ত্রের স্বার্থে আমরা ফলাফল মেনে নিয়েছিলাম। সরকারকে সহযোগিতার কথা বলেছিলাম। কিন্তু সহযোগিতার বিনিময়ে তারা কী আচরণ করেছেন, সেটা সবাই জানে।'

বিএনপি নেত্রী বলেন, 'আমরা বারবার চেষ্টা করেছি, প্রতিহিংসার বিপরীতে সংযম ও সহিষ্ণুতার পরিবেশ ধরে রাখতে। আমি কিছুদিন আগেও এক সংবাদ সম্মেলনে তিক্ত অতীতের কথা তুলেছিলাম। আমার ও শহীদ জিয়ার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার ক্রমাগত অশোভন উক্তি, প্রতিহিংসামূলক বৈরী আচরণ সত্ত্বেও আমি তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি। তার প্রতি কোনও প্রতিহিংসামূলক আচরণ আমি করবো না।' 

এসময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আওয়ামী লীগের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'আসুন, রাজনীতিতে সহিষ্ণু, সুন্দর সংস্কৃতি গড়ে তুলি। এটি গণতন্ত্রের জন্য খুবই প্রয়োজন। এতে আমাদের কাছ থেকে ভবিষ্যত প্রজন্ম ভালো কিছু শিখতে পারবে।'

বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বকশীবাজারে আলিয়া মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালতে আসেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। তিনি বেলা ১১টা ৫৮ থেকে ১টা ৩২ পর্যন্ত বিচারকের উদ্দেশ্যে আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দেন। মাঝখানে আজানের জন্য কিছু সময়ের বিরতি ছিল।

আত্মপক্ষ সমর্থনে খালেদা জিয়ার বক্তব্য শেষ না হওয়ায় আগামী ১৬ নভেম্বর তিনি আবার আদালতে আসবেন। এর আগে গত ১৯ অক্টোবর, ২৬ অক্টোবর ও ২ নভেম্বর খালেদা জিয়া আদালতে বক্তব্য দিয়েছেন।