তুরস্ক থেকে ড্রোন, হেলিকপ্টার কিনছে বাংলাদেশ

দেশের সামরিক বাহিনীকে আরও সুসজ্জিত করতে তুরস্কের তৈরি সেরা হেলিকপ্টার ও ড্রোন ক্রয় করতে যাচ্ছে সরকার। সামরিক দিক দিয়ে বর্তমান মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ওই দেশ থেকে আর্মড ড্রোন টিএআই এএনকেএ, টার্বোপ্রোপ ট্রেইনার টিএআই হুরকুস ও এট্যাক হেলিকপ্টার টিএআই টি-১২৯ কিনবে বাংলাদেশ। এ তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের প্রখ্যাত গণমাধ্যম ডেইলি সাবাহ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিরক্ষা বিষয়ক দেশের প্রধান কোম্পানি টার্কিশ এরোস্পেস ইন্ড্রাস্টিজ (টিএআই) এখন আসিয়ানের (সাউথইস্ট এশিয়ান নেশন্স) আকাশ প্রতিরক্ষা বিষয়ক চাহিদার কথা বিবেচনা করছে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, আশিয়ানভুক্ত দেশগুলো ছাড়াও বাংলাদেশ এ বিষয়ে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তারা (বাংলাদেশ) সমরাস্ত্র সজ্জিত ও সাধারণ হুরকুস এবং এট্যাক (ATAK) হেলিকপ্টার কিনতে বিশেষভাবে আগ্রহী।

আকাশ প্রতিরক্ষা বিষয়ক বাজার হিসেবে আশিয়ানভুক্ত দেশগুলোকে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় বাজার বলে গণ্য করা হয়।

এদিকে পাকিস্তান সরকার ইতিমধ্যে ৩০টি এএনকেএ হেলিকপ্টার কেনার ব্যাপারে আলোচনা শুরু করেছে। গত মাসে সাবেক পাইলট পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহীদ খাকান আব্বাসী সরাসরি টি ১২৯ অ্যাটাক হেলিকপ্টারের বিভিন্ন বিষয় ঘেঁটে দেখেছেন। তিনি পরীক্ষামূলকভাবে হেলিকপ্টারটি চালিয়েও দেখেছেন।

প্রধানমন্ত্রী শাহীদ খাকান আব্বাসী বলেন, 'একজন পাইলট হিসেবে আমার দেখা বিশ্বের সেরা আক্রমণাত্মক হেলিকপ্টার এটি।'

এশিয়া অঞ্চলের মধ্যে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুরেও এ অত্যাধুনিক হেলিকপ্টার সরবরাহের বিষয়ে তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন টিএআইয়ের জেনারেল ম্যানেজার তেমেল কোটিল।

টার্কিশ এক্সপোর্টার্স অ্যাসেম্বলি (টিআইএম)-এ তথ্যানুসারে, গত ছয় বছর ধরে টিএআই দেশটির প্রতিরক্ষা ও এভিয়েশন শিল্পে শীর্ষে রয়েছে।

তুরস্কের বিমান ও প্রতিরক্ষা শিল্প সংস্থাগুলো এ বছরের প্রথম ৮ মাসে বিশ্বব্যাপী ১.০৭ বিলিয়ন ডলারের সামগ্রী রপ্তানি করেছে। যা গত বছরের তুলনায় বেশি।

প্রসঙ্গত, তুরস্কের সামরিক বাহিনীর জন্য ২২টি প্রকল্প চূড়ান্ত করেছে দেশটির প্রতিরক্ষা বিভাগ। বিভিন্ন ধরণের সামরিক সরঞ্জামাদির জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিমের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে হুররিয়াত ডেইলি নিউজ।

খবরে বলা হয়, দেশের সামরিক বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করতে এন্টি ব্যালাস্টিক মিসাইল সিস্টেম, এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, অত্যাধুনিক ট্যাংক, বৈদ্যুতিক সুরক্ষা সিস্টেমসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের জন্য এই বিশাল বাজেট খরচ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তুর্কি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো-অভ্যন্তরীণভাবে (উৎপাদনে) এ প্রকল্পগুলো খুবই ব্যয়বহুল। আর প্রতিরক্ষা শিল্পে অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। তবে তুরস্কের নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অন্য দেশেও তা সহায়তার সামর্থ রয়েছে।'

তিনি প্রতিরক্ষা ক্রয় নিয়ে বিভিন্ন ধরণের প্রতিকূলতার সমালোচনা করে বলেন, ‘আমরা এ ধরণের নীতি অনুসরন করি না। আমাদের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ ও বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোর উপকারে আসে এমন তথ্য ও প্রযুক্তি দিয়ে সহায়তা করতে চাই।’