সতর্কবার্তা দিয়ে দীর্ঘতম এশিয়া সফর শুরু করলেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, কোনো একনায়ক বা স্বৈরশাসকের যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিকে খাটো করে দেখা উচিত নয়। এই সতর্কবার্তা দিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দীর্ঘতম এশিয়া সফর শুরু করেন। রোববার টোকিওর ইয়োকোটা এয়ার বেসে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ সতর্কবার্তা দেন। খবর গার্ডিয়ানের।

উত্তর কোরিয়ার নাম উল্লেখ না করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, অতীতে কিছু সময়ের জন্য প্রত্যেকে যুক্তরাষ্ট্রকে খাটো করে দেখেছে, কিন্তু এটা তাদের জন্য আত্মতুষ্টির ছিল না, তাই নয় কি? আমাদের জনগণ, স্বাধীনতা ও আমেরিকার মহান পতাকা রক্ষায় কখনও হার মানব না, ছাড় দেব না এবং ত্রুটি করব না।

প্রসঙ্গত, জাপান সফরের মধ্য দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এশিয়া সফর শুরু করেছেন। এশিয়ায় ১২ দিনের এ সফর গত ২৫ বছরের মধ্যে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের দীর্ঘতম সফর।

সফরসূচি অনুযায়ী তিনি চীন, ভিয়েতনাম, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ও ফিলিপাইন যাবেন। এ সফরে দেখা হতে পারে রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও।

ট্রাম্পের এ সফর নিয়ে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে যেমন ব্যাপক আগ্রহ আছে, ঠিক তেমনি সফর নিয়ে চোখ রাখছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরাও। নানা সমীকরণ ব্যস্ত রয়েছেন বিশ্ব রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

প্রথমে এ সফর ১১ দিনের ছিল। কিন্তু আসিয়ান সম্মেলনের জন্য আরও একদিন বাড়ানো হয়েছে। হোয়াইট হাউস জানায়, শেষ মুহূর্তে অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ ইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) সম্মেলনে যোগদানের জন্য সফরে আরও একদিন যোগ করা হয়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জাপানের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঙ্গরাজ্য হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে যান। সেখানে তিনি সামরিক কমান্ডের একটি ব্রিফিংয়ে অংশ নেন। পরে স্থানীয় সময় শনিবার তিনি পার্ল হারবারে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ১৯৪১ সালে জাপানি বোমা হামলায় নিহত সেনা সদস্যদের স্মরণে নির্মিত অ্যারিজোনা মেমোরিয়ালে শ্রদ্ধা জানান।

এদিকে বিমানে ভ্রমণের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এই সফরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা হবে—এমনটাই তিনি আশা করছেন।

বিবিসির খবরে বলা হয়, ‘এশিয়া সফরের মাধ্যমে বন্ধু দেশ জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরো দৃঢ় করবেন ট্রাম্প। পাশাপাশি অস্ত্র সমৃদ্ধকরণে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে চাপ দেবেন আঞ্চলিক পরাশক্তি চীনকে।’

এশিয়া সফরে ট্রাম্পের কর্মসূচি: ৫ নভেম্বর জাপান, ৭ নভেম্বর দক্ষিণ কোরিয়া, ৮ নভেম্বর চীন ও ১০ নভেম্বর ভিয়েতনামে এপেক সম্মেলন, ১১ নভেম্বর ভিয়েতনামের রাজধানী হানোই শহর, ১২ নভেম্বর ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ ইস্ট এশিয়ান নেশসন (আসিয়ান) ৫০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এক গালা ডিনারে অংশ নেবেন। ১৩ নভেম্বর ম্যানিলায় আসিয়ানের সম্মেলনে অংশ নেবেন ট্রাম্প। সবশেষে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাম্পের এশিয়া সফর শেষ হবে।

এর আগে ১৯৯১ ও ১৯৯২ সাল মিলিয়ে এমন দীর্ঘ সময় নিয়ে এশিয়া সফর করেছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ। তবে সেবার জাপানে একটি ভোজ অনুষ্ঠানে অসুস্থ হয়ে পড়েন বুশ।