ট্রাম্পের দীর্ঘতম এশিয়া সফরে যা প্রত্যাশা করছে দেশগুলো

দীর্ঘতম এশিয়া সফরের শুরুতে রবিবার জাপানে পৌঁছেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জাপানের স্থানীয় সময় রোববার দুপুরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসার কথা রায়েছে ট্রাম্পের। ১২ দিনের এই সফরে তিনি এরপর চীন, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ কোরিয়া, ও ফিলিপাইনে যাবেন।

যখন উত্তর কোরিয়ার পারমানবিক কর্মসূচী নিয়ে উত্তেজনার চরম অবস্থা বিরাজ করছে ঠিক তখনই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই সফর করছেন। যে পাঁচটি দেশ মার্কিন প্রেসিডেন্ট সফর করবেন সেই প্রতিটি দেশেরই ভিন্ন ভিন্ন প্রত্যাশা রয়েছে তার কাছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে থাকবে এমন প্রত্যাশা করছে দেশটি। উত্তর কোরিয়ার সাথে ট্রাম্পের গরম সব মন্তব্য ছোড়াছুড়ি নিয়ে কিছুটা স্বত্তিতে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। 

এই সফরে ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের মৈত্রীর সম্পর্কের বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করবেন বলেও প্রত্যাশা করেছে দেশটির সরকার। তাছাড়া ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গঠনের ব্যপারটিকে সমর্থন দেবেন বলেও আশা করছে দেশটি। পিয়ংইয়ং এর সাথে কূটনৈতিক আলাপ আলোচনার রাস্তা যেন অবারিত রাখে যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে এমন আশ্বাই সবচাইতে জরুরি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সফর তালিকার থাকা আরেকটি দেশ জাপানের প্রত্যাশা দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পুন:আশ্বাস। যদিও ইতিমধ্যেই নিজেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এশিয়ায় সবচেয়ে বড় বন্ধু বলে প্রমাণ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। যেহেতু ট্রাম্পের স্লোগান হচ্ছে আমেরিকা ফার্স্ট, সেহেতু এটি তার যেকোনো বন্ধুর মনেও অস্বস্তি তৈরি করতে পারে। আর প্রধানমন্ত্রী আবে এর বাইরে নন বলে মনে করা হচ্ছে।

চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ট্রাম্পের এই সফর কতটা কাজে আসবে এই ব্যাপারে বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন বাণিজ্য বাড়ানোর দিকে মূল গুরুত্ব দেয়া হবে। আর সেজন্য ট্রাম্প ইতিমধ্যেই শি জিনপিংকে চীনের রাজা বলে অভিহিত করেছেন। উত্তর কোরিয়ার বিষয়টি অবশ্যই প্রধান আলোচনার বিষয় হবে।

এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সামরিক সহায়তা বাড়ানোই প্রধান প্রত্যাশা হবে কম্যুনিস্ট দেশ ভিয়েতনামের। এক সময়কার শত্রুর সাথে এই মৈত্রীর একমাত্র কারণ হিসাবে চীনের খবরদারি ঠেকানোকে দেখছেন তারা। এমনকি আগে থেকেই এই অঞ্চলে মার্কিন সেনাদের উপস্থিতি বাড়াতে চাইছে ভিয়েতনাম। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র চায় ভিয়েতনাম বেশি করে মার্কিন পণ্য আমদানি করবে।

পুরনো বন্ধু যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বন্ধুত্ব আরো নিবিড় করার প্রত্যাশা রয়েছে ফিলিপাইনের। অনেক দিনের পুরনো মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ফিলিপাইনের নতুন সরকারের মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার পর থেকে সম্পর্কের কিছুটা অবনতি হয়েছে। ট্রাম্প এবং ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তে কেউ কাউকে ছাড় দেননি বাক-যুদ্ধে। কিন্তু নতুন চমক দিয়ে সম্পর্কের মোড় ঘোরাতে জুড়ি নেই ট্রাম্পের। আর সেই আশাতেই আছে ফিলিপাইন।