গণহত্যার তথ্য থাকা শতাধিক পেজ-অ্যাকাউন্ট বন্ধ করল ফেসবুক ইউটিউব

মিয়ানমারসহ বিভিন্ন দেশের গণহত্যার তথ্য সম্বলিত ভিডিও ও ছবি থাকা শতাধিক পেজ বন্ধ করে দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট ইউটিউব ও ফেসবুক। ইউটিউবের নতুন আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স সিস্টেমে ওই ভিডিওগুলোকে আইএসের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসবাদে উসকানি হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

রোহিঙ্গা মুসলিমদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী

গুগলের মালিকানাধীন ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউব জানায়, ৯০০ গ্রুপকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এছাড়াও এককভাবে শেয়ার করা অনেক ভিডিও সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এ ভিডিওগুলো যুদ্ধের উসকানি হিসেবে আইএস, আল নুসরাসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপের তৈরি বলে দাবি করেছে তারা। এছাড়াও ইরাক ও সিরিয়ায় বিমান হামলার ভিডিওগুলো মুছে দেয়া হয়েছে।  এদিকে সিরিয়া, ইউক্রেন, লিবিয়ায় সহিংসতার বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও মুছে দিয়েছে ফেসবুক ও ইউটিউব।

এদিকে গত সেপ্টেম্বর থেকে জাতিগত নির্মূল বা নিপীড়নের শিকার মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সরকারের বিভিন্ন বর্বরতার ভিডিও ও দৃশ্য সম্বলিত বিভিন্ন ডকুমেন্টারি ও পেজ বন্ধ করে দিয়েছে ফেসবুক। এসব ভিডিওকে সন্ত্রাসবাদের উস্কানি হিসেবে দেখছে তারা।

ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো নোটিশ দেয়নি। বিনা নোটিশেই তারা রোহিঙ্গা নির্যাতনের ছবি ও ভিডিও কন্টেন্ট মুছে দিচ্ছে। নিউইয়র্কের সাংবাদিক আশের-স্ক্র্যাপরিও বলেন, ‘ফেসবুক ও ইউটিউব কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তের কারণে ইউটিউবে সংরক্ষণ করা গণহত্যা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দলিল মুছে যাওয়ায় মানবাধিকার সংস্থাগুলোও বিপাকে পড়েছে। এতে নির্যাতনকারী ব্যক্তিরা বিশেষ সুবিধা পেয়ে যাচ্ছে।’

সিরিয়ার আল-বাব শহরে হামলার দৃশ্য

এ প্রসঙ্গে আশের-স্ক্র্যাপরিও ইউটিউবের জনসাধারণ নীতির পরিচালক জনিপার ডোনসের দেয়া বক্তব্য তুলে ধরেন। ইউটিউবের নীতি নির্ধারক ডোনস বলেছিলেন, ‘আমরা মানবাধিকার কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যে সুইডেনের আদালতে ফেসবুক ও ইউটিউবের দেয়া ডকুমেন্ট অনুসারে সিরিয়ান সরকারকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। সিরিয়ার ও ইরাকে সংঘটিত অপরাধের সাথে সংযুক্ত সুইডিশ ও জার্মান আদালতে যুদ্ধাপরাধের ৩০টি মামলা তদন্তনাধীন রয়েছে।

লন্ডনভিত্তিক ফরেনসিক আর্কিটেকচার এবং ওপেন সোর্স ইনভেস্টিগেটিভ ইউনিট বেলিংক্যাটের প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়ট হিগিনস বলেন, দামেস্কের বেসামরিক জনগণের ওপর সিরিয়া সরকারের রাসায়নিক হামলার ৮০ শতাংশই (ডকুমেন্ট) ফেসবুক থেকে উধাও হয়ে গেছে। তার এ দাবির বিষয়ে উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানায় ফেসবুক।

উল্লেখ্য, গণহত্যার ভিডিওচিত্রের কারণে ইউটিউবে চ্যানেল বন্ধ হওয়া নতুন নয়। এর আগে ফিলিস্তিনের একটি বিখ্যাত নিউজ পোর্টাল আল কুদসের অফিসিয়াল চ্যানেল সাসপেন্ড করে ইউটিউব। ২০১৪ সালের একটি ভিডিওকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার এক কোটি সাবস্ক্রাইবার সমৃদ্ধ চ্যানেলটি বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।

তথ্যসূত্র : ডেইলি সাবাহ