সিলেটে বিপিএল: উন্মাদনা আছে, উন্মাদনা নেই
- Details
- by সাইফ হাসনাত, সিলেট থেকে
ঘরের মাঠে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হয় না বলে সিলেটের মানুষের আফসোস শোনা যায় প্রায়ই। সেই আফসোস প্রতিধ্বনিত হয় সিলেটের বাইরের মানুষের কণ্ঠেও। যারা সিলেটের স্টেডিয়ামটা দেখেছেন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর আধুনিকতার উৎকর্ষের দারুণ মিলন ঘটা সিলেট স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ম্যাচ না হওয়াটা প্রায় 'অন্যায়ের' পর্যায়েই পড়ে। এতোদিনের সেই আফসোস মিলিয়ে যাওয়ার কথা আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া বিপিএল দিয়ে। কারণ বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত ঘরোয়া আসর যে শুরু হচ্ছে সিলেটের মাটি থেকেই।
ঢাকায় চলছে কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি কনফারেন্স। জ্যামের শহর ঢাকা এখন আরো জ্যামে আক্রান্ত। বিদেশ থাকা শত শত অতিথিকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য এ ছাড়া কোনো উপায়ও নেই। একই সময়ে ছিলো বিপিএল আয়োজনের তারিখ। পরিস্থিতি বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষ বিপিএল শুরুর সিদ্ধান্ত নেয় সিলেটে।
এই সিদ্ধান্ত সিলেটবাসীর কাছে আনন্দ না বিষাদের হয়ে এলো— তার ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না এখনো। দুদিন আগে সিলেটে পা রাখার পরও এখানে মিলছে না বিপিএল তেমন কোনো উন্মাদনা। শহরের এদিক-ওদিক বিপিএল সংক্রান্ত কিছু ব্যানার ফেস্টুন চোখে পড়ছে বটে, তবে তা কেবলই সিলেট সিক্সার্স দল নিয়ে। কিন্তু সেগুলো স্থানীয় সমর্থকদের টানানো ব্যানার নয়; বরং বিপিএলের পর্দা টানিয়ে তাতে চলছে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের প্রচারণা।
এর একটা বড় কারণ হতে পারে সিলেটভিত্তিক দলটির প্রায় নিষ্প্রভ থাকা। দলটির কর্তৃপক্ষ নিজেদের প্রচারণার জন্য তেমন কোনো আয়োজন করেনি। প্রচারণা বলতে— মিডিয়া কাভারেজ। সিলেটের বিভিন্ন জায়গায় একটা দুইটা অনুষ্ঠান হয়েছে অবশ্য। কিন্তু সেগুলো ছিলো প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
বড় প্রচারণার চালানোর মতো অনুপ্রেরণাই অবশ্য পাওয়ার কথা নয় সিলেট সিক্সার্স কর্তৃপক্ষের। কারণ বিপিএলের সবচেয়ে কম বাজেটের দল তাদের। স্থানীয়দের মধ্যে সাব্বির রহমান ও নাসির হোসেন ছাড়া আর কোনো বড় তারকা নেই দলে। বিদেশিদের মধ্যে যারা আছেন, তাদের মধ্যে আছেন বাবর আজম বড় তারকা, কিন্তু তিনি ১৭ নভেম্বরের আগে আসতে পারবেন না। সব মিলিয়ে সিলেটের দল নিয়ে হয়তো স্বয়ং মালিকপক্ষই সন্তুষ্ট নন। যার প্রভাব পড়েছে দল নিয়ে তাদের কর্মকাণ্ডে।
ফ্রেঞ্চাইজিভিত্তিক ক্রিকেটের ভিতরে ক্রিকেট যতোটা থাকে, তার চেয়ে বেশি থাকে ক্রিকেটের বাইরের জৌলুস। সিলেট সিক্সার্স সেই জৌলুসটা ছুঁতে পারেনি এখনো। ফলে সমর্থক পর্যায়ে যে উন্মাদনা তৈরি হওয়ার কথা, তার যৎসামান্যই চোখে পড়ছে সিলেটে। দর্শক-সমর্থকদের মধ্যে সিলেটের ঘরের দল নিয়ে এমন নিরুত্তাপ থাকাটাই হয়তো সিলেটে তৈরি করতে পারেনি কোনো উন্মাদনা।
আরো একটা বড় কারণ হতে পারে টিকিটের দুষ্প্রাপ্যতা। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা ১৮ হাজার। এর মধ্যে ১৫ হাজার টিকিট যাওয়ার কথা সাধারণ দর্শকদের কাছে। সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়াম এবং মূল ভেন্যুর বাইরে স্থাপন করা বুথে ম্যাচের আগের দিন টিকিট বিক্রি করার কথা। কিন্তু গতকাল সারা দিন খোঁজ নিয়েও টিকিট বিক্রির কোনো সংবাদ মিলেনি।
টিকিট পাওয়া নিয়ে দর্শকদের সঙ্গে টিকিট বিক্রিকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। এই পরিস্থিতিও হয়তো সিলেটবাসীকে বিপিএল নিয়ে প্রত্যাশিত উন্মাদনা থেকে দূরে রেখেছে।
উন্মাদনা যে একেবারে নেই, তা অবশ্য নয়। বিপিএল শুরুর আগের রাতেই যেমন এক জুতা বিক্রেতার হাতে দেখা গেলো সিলেট সিক্সার্সের লোগো আঁকা। দলটা তেমন ডাকসাইটে না হলেও নিজেদের দল নিয়ে উচ্ছ্বসিত তিনি। কিন্তু তার এই উচ্ছ্বাসের ঢেউ সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে পড়বে না বলেই মনে হলো। কারণ শত চেষ্টা করেও যে একটি টিকিট জুটাতে পারেননি তিনি।
বিপিএল শুরুর একদিন আগে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ও আলোচিত এই ঘরোয়া লিগ নিয়ে আয়োজক শহরের যে পরিস্থিতি দেখা গেলো, তাতে এই সিদ্ধান্ত নিতে খুব বেশি ভাবার দরকার নেই যে, সিলেটে বিপিএল নিয়ে উন্মাদনা আছে ঠিকই, তবে না থাকার মতো। কারণ হলো নিজেদের দলের প্রায় নিষ্প্রভতা এবং টিকিটের দুষ্প্রাপ্যতা। এই বিপিএল সিলেটের ক্রিকেটকে কতোটা প্রাণচঞ্চলতা দিবে, আপাতত চোখ থাকবে সেদিকেই।
বিপিএল সিলেট পর্বে কখন কার ম্যাচ
চার নভেম্বর বেলা দুইটা: সিলেট সিক্সার্স বনাম ঢাকা ডায়নামাইটস; সন্ধ্যা সাতটা: রাজশাহী কিংস বনাম রংপুর রাইডার্স। পাঁচ নভেম্বর বেলা দুইটা: সিলেট সিক্সার্স বনাম কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স; সন্ধ্যা সাতটা: খুলনা টাইটান্স বনাম ঢাকা ডায়নামাইটস। সাত নভেম্বর বেলা দুইটা: চিটাগং ভাইকিংস বনাম কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স; সন্ধ্যা সাতটা: সিলেট সিক্সার্স বনাম রাজশাহী কিংস। আট নভেম্বর বেলা দুইটা: রংপুর রাইডার্স বনাম চিটাগং ভাইকিংস; সন্ধ্যা সাতটা সিলেট সিক্সার্স বনাম খুলনা টাইটান্স।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.