আপনি পড়ছেন

ইস্তাম্বুলে নির্মাণ করা হচ্ছে নতুন অপেরা হাউজ। এটি হতে চলেছে দেশটিতে নেয়া যে কোনো প্রকল্পের তুলনায় বেশি নান্দনিক। ওই সাংস্কৃতিক কেন্দ্র থেকে দেখা যাবে তাসকিম স্কয়ার ও গাজী পার্কের মত মনোরম দৃশ্য। আগামী ৬ নভেম্বর থেকে শুরু হবে পুরোদমে কাজ। শেষ হবে ২০১৯ সালে।

Erdogan Atatürk Culture Center

অপেরা হাউজটির সঙ্গে থাকবে থিয়েটার হল, সিনেমা হল ও কনসার্ট হল। এছাড়াও থাকবে একটি প্রদর্শনী সেন্টার ও একটি কনভেনশন সেন্টার, একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, একটি আর্ট গ্যালারি। থাকবে অভিজাত রেস্তোরাঁ ও ক্যাফে।

ইস্তাম্বুলের আতাতুর্ক কালচার সেন্টার (একেএম)-এর স্থানেই এটি গড়ে তোলা হবে। ওই কালচারাল সেন্টারটি থেকে সেটির আয়তন ৩৫,২৫৬ স্কয়ার মিটার সম্প্রসারণ করা হবে। বর্তমানে আতাতুর্ক কালচার সেন্টারের আয়তন ৫,৭৯৪ মিটার।

Atatürk Culture Center Istanbul

দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ান বুধবার প্রেসিডেন্ট বাসভবনে তৃতীয় ট্যুরিজম কাউন্সিলের এক অধিবেশনে বলেন, ‘আমি আপনাদের একটি সুখবর দিতে চাই। আর তা হলো, নতুন করে আরও বড় আধুনিক ভবনের স্থলে নির্মাণ হবে একটি অপেরা হাউজ।’

এরদোয়ান বলেন, গত বছর পর্যটনে আমাদের খারাপ সময় গেছে। এ বছর তা খাটিয়ে উঠা সম্ভব হয়েছে। ২০১৬ সালে আমাদের দেশে মোট ২৭ মিলিয়ন পর্যটন এসেছেন, আর এবছরের প্রথম ৯ মাসেই ২৬ মিলিয়ন পর্যটক এই দেশ ভ্রমণ করেছেন।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট গত রমজানের সাংস্কৃতিক কর্মী ও খেলোয়াড়দের সঙ্গে প্রথম ইফতারের পর সাংবাদিকদের ওই সাংস্কৃতিক কেন্দ্রকে ম্যাগনিফিসেন্ট অপেরা হাউজ বলে উল্লেখ করেছিলেন।

সংবাদ মাধ্যম সিএনএন টার্ক জানিয়েছে, ওই দেশের বিখ্যাত স্থাপত্যশিল্পী হায়াতি তাবানলিয়লোর পুত্র মুরাদ তাবানলিওলোকে ওই স্থাপত্যের দায়িত্ব দেয়া হয়ে। তার সৃষ্টিশীলতাই ফুটে উঠবে ১৯৬৯ সালে নির্মিত একেএম ভবনের ওই স্থানে। ওই সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি চালু হলে দেশের পর্যটনের জন্য ব্যাপক কাজে দেবে যা তুরস্কের অর্থনীতির জন্যও সুফল বয়ে আনবে।

এরদোয়ান বলেন, আমরা ইস্তাম্বুলের অব্যবহৃত স্থানে এমন একটি সুন্দর সুরম্য কীর্তিস্তম্ভ নির্মাণ করব যা প্রত্যেক কালচারাল সেন্টারকে সমন্বিত করবে।

turkey Istanbul City

ইস্তাম্বুলের মূল আতাতুর্ক সেন্টারটি নির্মাণ হয়েছিল ১৯৪৬ সালের ২৯ মে। যদিও এটি অর্থায়নের অভাবে অনেক বছর বন্ধ ছিল। ১০ বছর পর ওই ভবনের কাজে হাত দেন স্থাপত্যশিল্পী তানলিয়লো। প্রায় ২৩ বছর পর ১৯৬৯ সালের ১২ এপ্রিল ইস্তাম্বুল সেন্টার প্যালাস নামে এটি উদ্বোধন হয়। কিন্তু এর মাত্র দেড় বছরের মাথায় ১৯৭০ সালের ২৭ নভেম্বর আর্থার মিলারসের দ্য ক্রুসিবল প্রদর্শনের সময় অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এতে বন্ধ হয়ে যায় এ সেন্টারটি।

এই ঘটনার দীর্ঘ ৮ বছর অতিক্রম করার পর এগিয়ে আসেন তাবানলিওনলো। তিনিই এটি সংস্কার করে নতুন করে চালু করেন। নতুন নাম দেয়া হয় আতাতুর্ক কালচারাল সেন্টার।

পরবর্তীতে ২০০৫ সালে তৎকালীন সংস্কৃতি মন্ত্রী আতিলা কোচ প্রস্তাব করেন, এটি যথেষ্ট লাভজনক না হওয়ায় এ বিল্ডিংটি ভেঙে ফেলতে। কিন্তু প্রচণ্ড প্রতিবাদের মুখে ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ভেডেলপমেন্ট পার্টি (একেপি) এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।

২০০৭ সালে নভেম্বরে ইস্তাম্বুল প্রকেটশন বোর্ড আনুষ্ঠানিকভাবে একে সাংস্কৃতিক সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করে। ২০১২ সালে এটি পুনর্নিমানের উদ্যোগ নেয় একেপি সরকার। এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে ৩০ মিলিয়ন টার্কিশ লিরা সহায়তা দেয়া হয় সাবাঞ্চি হোল্ডিং নামের একটি কোম্পানিকে। কিন্তু তখন সেই পরিমাণ অর্থ ব্যয়ে এটি সংরক্ষণ অসম্ভব বলে এটি বাতিল হয়ে যায়।

turkey Istanbul City picture

ইস্তাম্বুলের ইতিহাস: তুরস্কের ইতিহাসের সঙ্গে ইস্তাম্বুল ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ১৪৫৩ সালের ২৯ মে সুলতান মাহমুদ ফাতিহ ইস্তাম্বুল জয় করেন। তখন এ নগরীর নাম ছিল কনস্টান্টিনোপল। ইস্তাম্বুল নগরী প্রতিষ্ঠার পর থেকেই তা বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সংস্কৃতির রাজধানীতে পরিণত হয়।

সামাজিক, সংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ইস্তাম্বুল বিজয় বিশ্ব ইতিহাসের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। এই বিজয়ে মুসলমান ও সমগ্র মানবজাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা রয়েছে।

ইস্তাম্বুলের গুরুত্ব: তুরস্কের ৮০টি প্রদেশের মানুষ শারীরিক ও মানসিকভাবে ইস্তাম্বুলের সাথে সংযুক্ত। কেউ যদি বেড়াতে অথবা বাণিজ্য করতে তুরস্ক ভ্রমণে যান তবে প্রথমেই তিনি ইস্তাম্বুল সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হন।

ইস্তাম্বুলে নগরী বিজয়ের ৫৬৪তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এরদোয়ান বলেছিলেন, ‘ইস্তাম্বুল হচ্ছে আমাদের দেশের শোকেস। এই শোকেস যত সুন্দর ও মোহনীয় হবে, তা তুরস্কের জন্য তত লাভজনক হবে।’

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.