বাবা-মা বেঁচে আছে কিনা জানে না ১৪ হাজার রোহিঙ্গা শিশু!

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বর্বরতার শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১৪ হাজার রোহিঙ্গা শিশুর পিতামাতা নেই। কিন্তু প্রতিদিন তারা অপেক্ষা করে তাদের বাবা-মা বাংলাদেশে আসবে। এএফপির বরাত দিয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আলজাজিরা।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সেনাবাহিনীর অভিযানে নিহত হওয়া রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের মধ্যেই রয়েছে এই ১২ হাজার শিশুর মা-বাবা। তবে বেশিরভাগ শিশুর বাবা-মা সত্যিই আর ফিরে আসবে না। কারণ, তারা ইতিমধ্যে মিয়ানমার সেনাদের হাতে খুন হয়েছেন। তবে কিছু শিশুর বাবা বা মা এখনও বেঁচে আছেন।

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, রাখাইনে ২৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া সেনা অভিযানে এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৩৬ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই শিশু। বাংলাদেশের সমাজসেবা অধিদফতরের সূত্র জানায়, রোহিঙ্গা ক্যাম্পাসে জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে ১৩ হাজার ৭৫১টি শিশু পাওয়া গেছে, যারা মা-বাবা উভয়কে বা একজনকে হারিয়েছে।

বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, এসব শিশুদের কারো বাবা বেঁচে নেই, আর কারো মা বেঁচে নেই। আবার কারো কারো বাবা-মা কেউই বেঁচে নেই। সেনা নির্যাতনে বা পুড়িয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে। আবার অনেকেই জানেই না তাদের বাবা-মায়ের পরিণতি কি হয়েছে। তারা হামলায় ছত্রভঙ্গ হয়ে অন্যদের সঙ্গে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় পাওয়া অসহায় মানুষের মধ্যে বর্তমানে ৩ লাখ ২০ হাজার শিশু রয়েছে। যাদের এক-তৃতীয়াংশেরই বয়স ৫ বছরের নিচে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শিশুর সংখ্যা বেশি হওয়ায় এবং এ শিশুরা মা-বাবাহীন হওয়ায় শিশু পাচারের আশংকা করছে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা।

উল্লেখ্য, গত ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইন রাজ্যের ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনাক্যাম্পে যৌথ হামলার পর ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার অজুহাতে সেনাবাহিনী মুসলিম অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকায় ওই অভিযান চালিয়ে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। বিশেষ করে নারীদের ওপর নেমে আসে বর্বরতার চরম মাত্রা। তাদেরকে ধর্ষণ করে পুড়িয়ে হত্যা করে মিয়ানমার সেনারা।