রোহিঙ্গা ‘হিন্দুদের গণকবর’: দোষীদের শাস্তির দাবি জানাল ভারত

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা হিন্দুদের গণকবরের সন্ধান পাওয়ার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে দোষীদের কঠোর শাস্তি দেয়ার দাবি জানিয়েছে ভারত। ওই ঘটনার যথাযথ তদন্তের দাবি জানিয়ে অপরাধীদের বিচারের সম্মুখীন করার কথা বলেছে দেশটি।

শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাবিশ কুমার বলেন, ‘মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলরের কার্যালয়ের প্রকাশিত বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, গণকবরে পাওয়া সমস্ত লাশ হিন্দুদের। ভারত এ ব্যাপারে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখেছে এবং দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া বিবৃতিও পড়েছে। এরকম অবস্থায় ভারত সবধরণের সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতা করে।’

সংঘর্ষের সময় সাধারণ নাগরিকদের টার্গেট করা হয়, এমন সন্ত্রাসবাদকে কোনভাবেই বৈধতা দেওয়ার সুযোগ নেই উল্লেখ করে রাবিশ কুমার বলেন, ‘আমরা আশা করছি, মিয়ানমার সরকার সন্ত্রাসীদের সাজা দেবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সকলকে যথাসম্ভব সাহায্য করবে। এতে করে তাদের মধ্যে নিরাপত্তার অনুভূতি আসবে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আমরা আশাবাদী।’

ভারত রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলেছে বলেও রাবিশ কুমার জানান।

প্রসঙ্গত, গত রোববার মিয়ানমার সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের একটি গ্রামে গণকবর খুঁজে পেয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। গণকবরটি থেকে ২৮টি মৃতদেহ বের করে আনা হয়েছে। এদের সবাই হিন্দু এবং অধিকাংশই নারী। তবে এখন পর্যন্ত কোন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের পক্ষেই তথ্যটি যাচাই করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। 

অন্যদিকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই দাবিকে অনেকেই ভিন্নভাবে দেখছেন। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্মম অত্যাচারে রোহিঙ্গা মুসলমানরা যখন জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশসহ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে আশ্রয় নিচ্ছে, এমন সময় এই অভিযোগ রোহিঙ্গাদের উপর পরিকল্পিতভাবে দোষ চাপানো বলে মনে করছেন অনেকেই।

গত আগস্টের শেষ ভাগ থেকে রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানের ফলে প্রায় পাঁচ লাখ ত্রিশ হাজার রোহিঙ্গা মুসলমান জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার প্রধান ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইনে গণহত্যা, গণধর্ষণ, বাড়িঘরে আগুন এবং চরম নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওই অভিযানকে ‘জাতিগত নিধন’ বলেও বর্ণনা করেছে জাতিসংঘ। এছাড়া দেশটির সেনাবাহিনীর দ্বারা রাখাইনে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘঠিত হচ্ছে বলছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন।