মুশফিকদের সামনে এখনো অনেক কাজ

পচেফস্ট্রুম টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে স্বাগতিকদের চেয়ে ৩৬৯ রানে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। ফ্যাফ ডু প্লেসির চমক জাগানিয়া ইনিংস ঘোষণার পর ব্যাটিংয়ে নামেন মুশফিকরা। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে উঠেছে তিন উইকেটে ১২৭ রান।

দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের ইনিংস ঘোষণা করে ৪৯৬ রানে। ফ্যাফ ডু প্লেসির এমন ঘোষণা বিস্ময়কর হয়ে আসে বাংলাদেশের জন্য। বিস্ময়ের সঙ্গে বিপদও হাজির হয় মুশফিকদের সামনে।

চা বিরতির সময় দক্ষিণ আফ্রিকা যখন ইনিংস ঘোষণা করে, তখন থেকে ৪৯ মিনিট আগে মাংসপেশিতে টান লাগায় মাঠের বাইরে ছিলেন তামিম। আইসিসির নিয়ম অনুসারে এ ধরনের ক্ষেত্রে ব্যাটসম্যান যতক্ষণ মাঠের বাইরে থাকবেন, তখন তার দল ব্যাটিংয়ে নামলে, তিনি অন্তত মাঠের বাইরে থাকার সমান সময় মাঠে নামতে পারবেন না!

এই নিয়মের ফাঁদে পড়েই তামিম আজ ওপেনিংয়ে নামতে পারেননি। এই প্রথমবার ওপেনিংয়ে নিজের জায়গা বাদ দিয়ে ব্যাটিংয়ে নামতে হলো তামিমকে।

তামিম নামার আগেই বাংলাদেশ তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে। তার বদলে ওপেনিংয়ে নামা লিটন দাস ও ইমরুল কায়েস গড়েন ১৬ রানের জুটি। প্রস্তুতি ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি করে রানে ফেরার ইঙ্গিত দিলেও ইমরুল আউট হন মাত্র সাত রান করে।

ইমরুলের বিদায়ের পর জুটি গড়েন লিটন ও মুমিনুল। এ দুজন দ্বিতীয় উইকেটে যোগ করেন ২০ রান। ৩৬ রানে দুই উইকেট হারিয়ে ফেলার পর বাংলাদেশ যখন রীতিমত কাঁপাকাঁপি শুরু করে দিয়েছে, তখন হাল ধরেন মুশফিক ও মুমিনুল।

তৃতীয় উইকেটে এ দুজন যোগ করেন ৬৭ রান। দিনের খেলার আট ওভার বাকি থাকতে ৪৪ রান করা মুশফিক কেশব মহারাজের বল ডিফেন্স করতে গিয়ে ধরা পড়েন শর্টে ফিল্ডিং করা অভিষিক্ত মার্করামের হাতে। এরপর নামেন তামিম ইকবাল। মুমিনুল ও তামিম মিলে শেষ করেন দিনের খেলা।

এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে সর্বোচ্চ রান আসে ডিন এলগারের ব্যাট থেকে ১৯৯ রান করে আউট হন তিনি। মাত্র এক রানের জন্য তাকে ডাবল সেঞ্চুরি মিস করার যন্ত্রণায় পোড়ান মোস্তাফিজুর রহমান।

ইতিহাসের দশম ব্যাটসম্যান হিসেবে এক রানের জন্য ডাবল সেঞ্চুরি মিসের যন্ত্রণায় পুড়লেন এলগার। তার আগে এই দুর্ভাগ্য বরণ করতে হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকার আর কোনো ব্যাটসম্যানের। এই দুঃখে তার ‘আংশিক’ সঙ্গী জিম্বাবুয়ের অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার এবং শ্রীলঙ্কার কুমার সাঙ্গাকারা। এ দুজন ১৯৯ রানে অপরাজিত ছিলেন!

১৯০ করার পর ২০০ না ছুঁতে পারার যন্ত্রণায় ডিন এলগার অবশ্য সঙ্গী পাচ্ছেন ৯০ জনকে। এদের মধ্যে ৭২ জন আউট হয়ে গিয়েছিলেন আর বাকি আটজন কোনো না কোনো কারণে অপরাজিত থেকে ভোগ করেছেন ডাবল সেঞ্চুরি না করতে পারার যন্ত্রণা।

এলগারের এমন একটা ইনিংসের জন্যই বাংলাদেশের সামনে এখনো পড়ে আছে ৩৬৯ রানের বিশাল পাহাড়। ম্যাচের দুইটা দিন শেষ হয়ে গেলেও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণের সামান্যটুকুও নেই মুশফিকদের হাতে। আপাতত তাদের সামনে পড়ে আছে অনেক অনেক কাজ।