মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওপর অবরোধ ও অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার দাবি

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর চলমান গণহত্যা বন্ধ করতে দেশটির সেনাবাহিনীর ওপর কঠোর অবরোধ ও অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। একইসঙ্গে সংস্থাটি আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে মিয়ানমারের শাস্তি নিশ্চিতের আহ্বানও জানিয়েছে।

এইচআরডব্লিউ’র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এবং রোহিঙ্গা ইস্যুর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওপর কঠোর অবরোধ ও অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত। কেবলমাত্র এভাবেই দ্রুত দেশটির ‘জাতিগত নিধন’ সংক্রান্ত প্রচারণা ও কার্যক্রম বন্ধ করা সম্ভব হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের একটি উন্মুক্ত আলোচনার জন্য মহাসচিব অ্যান্টেনিও গুতেরেসকে আমন্ত্রণ জানানো উচিত। এরকম নৃশংস অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের মাধ্যমে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা উচিত।'

এইচআরডব্লিউ মনে করছে, রোহিঙ্গা ইস্যুর সঙ্গে জড়িত দেশগুলোর নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা না করে দেশটিতে সামরিক সহায়তা বন্ধ করে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি ও মিয়ানমারের সেনা পরিচালিত ব্যবসাগুলোর আর্থিক লেনদেন বন্ধ করা উচিত। এছাড়া দেশটির ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি ও অপরাধী নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা উচিত।

উল্লেখ্য, মিয়ানমার রোহিঙ্গা মুসলমানদের অবৈধ অভিবাসী মনে করে। গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে পুলিশের কমপক্ষে ৩০টি তল্লাশি চৌকি ও সেনাক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা হামলায় চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে মিয়ানমার। এই হামলায় ১২ জন পুলিশ নিহত হন। এরপরই দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী ও রাখাইনের বৌদ্ধ ভিক্ষুরা ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ শুরু করে। প্রাণ ভয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয় বাংলাদেশে।

রাখাইনে জাতিগত নিধন ও গণহত্যা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুটেরাস ও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, 'রাখাইনে জাতিগত নিধন চালাচ্ছে মিয়ানমার। অবিলম্বে তাদের এই সহিংস রাস্তা পরিহারের আহ্বান জানানো হচ্ছে।' জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদও মিয়ানমারকে হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে তাদের অধিকার বাস্তবায়নে আনান কমিশন বাস্তবায়নের জন্য মিয়ানমারকে চাপ দিয়েছে।