ঘুম ভাঙলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের, রোহিঙ্গা নিপীড়ন বন্ধের দাবি

রোহিঙ্গা ইস্যুতে ধীরে ধীরে ঘুম ভাঙছে বিশ্ববাসীর। জাতিসংঘ, হোয়াইট হাউস, ইউনিসেফের পর রোহিঙ্গা ইস্যুতে মুখ খুললো ইউরোপীয় দেশগুলোর শীর্ষস্থানীয় সংগঠন ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী এ সংগঠনটি রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর নির্মম অত্যাচার, নিপীড়ন ও হত্যা বন্ধ করতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) আইন প্রণেতারা জেনেছেন, রাখাইন রাজ্যে চলমান নির্যাতন-নিপীড়ন, গণহত্যা আর ধর্ষণের কারণে সংখ্যালঘু নারী, শিশু নির্বিশেষে প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। রোহিঙ্গা নির্যাতন ইস্যুতে বৃহস্পতিবার, মিয়ানমারের প্রতি ইইউ আইন প্রণেতারা বলেছেন, অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের নির্যাতন, হত্যা ও ধর্ষণ, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া বন্ধ করতে হবে।

ইইউ বলেছে, রাখাইনে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। সহিংসতাপূর্ণ এলাকা এবং রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নেয়া স্থান, রোহিঙ্গা গ্রামে দুর্যোগ সহায়তা দানকারী বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থা ও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশ করতে দিতে হবে। তাদের প্রবেশে সব ধরণের সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্ট মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানায় ইইউ।

পাশাপাশি ইইউ জাতিগত নিধন, ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানো এবং সহিংসতা মোকাবেলায় কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ার জন্য মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সরকার এবং শান্তিতে নোবেল জয়ী দেশটির গণতান্ত্রিক নেত্রী অং সান সু চির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

সু চির সমালোচনা করে সংস্থাটির আইন প্রণেতারা বলছেন, 'মিয়ানমারে মানবাধিকার রক্ষা, সংখ্যালঘুদের প্রতি প্রয়োজনীয় সম্মান প্রদর্শন এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার কারণেই সু চিকে শান্তিতে নোবেল দেয়া হয়েছে। কিন্তু সু চি এ ব্যাপারে নিশ্চুপ। বিষয়টি আমাদের ব্যাথিত করেছে।

চলতি বছরের ২৫ আগস্ট বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির পুলিশের ৩০টি তল্লাশি চৌকি ও সীমান্তরক্ষীদের সেনাক্যাম্পে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। মিয়ানমার বলছে, হামলার সঙ্গে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা জড়িত। এরপর দেশটির সেনাবাহিনী অভিযানের নামে রোহিঙ্গাদের হত্যা, ধর্ষণ ও তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়ে নিধনযজ্ঞ চালায়। এরপরই দলে দলে রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিতে থাকে মানবিক বাংলাদেশে। জাতিসংঘের হিসাবে বাংলাদেশে প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন।