কী লুকিয়ে আছে চট্টগ্রামের উইকেটে?

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে পা দিয়েই স্টিভ স্মিথ ছুটলেন উইকেটের দিকে। তার সঙ্গে যোগ দিলেন ড্যারেন লেম্যানও। মনভরে দেখলেন উইকেট। বোঝার চেষ্টা করলেন কী জাদু লুকিয়ে আছে এখানে। কিন্তু কতোটুকু বুঝতে পারলেন, তা জানা গেলো না।

চট্টগ্রামের উইকেট নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই মুশফিকুর রহিমেরও। ঘরের মাঠ বলে ইচ্ছে মতো উইকেট বানানোর সুবিধাটা বাংলাদেশ পাবেই। কিন্তু সুবিধাটা ঠিক মতো পাওয়া যাচ্ছে কিনা, তা দেখতে উইকেটে উঁকিঝুঁকি মেরেই সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলে মুশফিক।

চট্টগ্রামের উইকেট ঐতিহ্যগতভাবে ফ্ল্যাট হয়। ফলে ব্যাটসম্যানরা পান দারুণ সুবিধা। কিন্তু গত কয়েক ম্যাচে দেখা গেছে স্পিনাররাও পাচ্ছেন মন মতো সব টার্ন। বিশেষ করে ম্যাচের বয়স বাড়তে থাকলে সুবিধাও বাড়তে থাকে স্পিনারদের।

ঢাকা টেস্টের পরই চট্টগ্রামে ঢাকার মতো উইকেটের প্রত্যাশা জানিয়ে রেখেছিলেন মুশফিকুর রহিম। স্পিনার তাইজুল ইসলামও বলেছিলেন যে, চট্টগ্রামেও তারা মিরপুরের মতো উইকেট চান। অস্ট্রেলিয়ার স্পিন খেলার দুর্বলতা দেখে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টের চাওয়াটাও অভিন্ন।

মুশফিকদের চাওয়া মতোই যে তৈরি হয়েছে চট্টগ্রামের উইকেট, তা প্রকাশ পেলো ম্যাচের আগের দিন করা অধিনায়কের মন্তব্য থেকেই। তিনি বলেন, ‘উইকেট যেমন হওয়ার কথা, তেমনই হয়েছি। আমরা উইকেট নিয়ে খুশি। বৃষ্টির কারণে কিউরেটররা সেভাবে কাজ করতে পারেননি হয়তো। তারপারও উইকেট নিয়ে আমরা খুশি।’

উইকেট নিয়ে খুশি হলেও মুশফিক অবশ্য শুধু উইকেটের উপর ভরসা করতে চাইলেন না। বরং বললেন, ‘উইকেট যেমনই হোক, পারফর্মটা করতে হবে আমাদের। আমাদের দলটা ব্যালেন্সড। দলে তেমন পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা নেই। আমরা বিশ্বাস করি সেরা কম্বিনেশনটাই মাঠে নামাতে পারবো।’

মুশফিক উইকেট নিয়ে যতোটা নির্ভার, স্মিথ ঠিক ততোটাই চিন্তিত। উইকেট নিয়ে করা প্রশ্নে স্টিভ স্মিথ বলেন, ‘গতকাল কিছুটা দেখেছি। মনে হচ্ছে এখানে তেমন একটা বাউন্স থাকবে না। খেলার সময় যতো গড়াবে স্পিনাররা ততো সহায়তা পাবে। তবে এখানে প্রথম দিন থেকে টার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা কম। আর আমি আসলে উইকেট দেখেই এর আচরণ তেমন বুঝতে পারি না।’

উইকেট নিয়ে দুই দলের অধিনায়কের দুই রকম অবস্থান আসলে দুজনের মনোজাগতিক পার্থক্যটাও স্পষ্ট করে তুলছে। প্রথম টেস্ট জিতে বাংলাদেশ অপেক্ষা করছে সিরিজ জয়ের। অন্য দিকে চট্টগ্রামে জিতে সমতায় সিরিজ শেষ করতে চাইছে অস্ট্রেলিয়া।

অস্ট্রেলিয়ার এই ইচ্ছা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা একটু কমই। কারণ আবহাওয়ার যা পূর্বাভাস, তাতে চট্টগ্রাম টেস্টের ফল হওয়াটা প্রায় অসম্ভব। আবহাওয়া যদি শেষ পর্যন্ত ঠিক থাকেও, তারপরও মুশফিকদের সামনে স্মিথদের দিতে হবে অগ্নিপরীক্ষা। সব মিলিয়ে উইকেটের জাদু যেমনই হোক, বিপদটা অস্ট্রেলিয়ারই বেশি।