অলআউট অস্ট্রেলিয়া, সাকিবের পাঁচ উইকেট

ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪৩ রানের লিড পেলো বাংলাদেশ। তামিম-সাকিবের দুই হাফ সেঞ্চুরিতে ভর করে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ করে ২৬০ রান। জবাব দিতে নেমে নিজেদের প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া অলআউট হলো ২১৭ রানে। ফলে দ্বিতীয়বারের মতো অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্টের প্রথম ইনিংসে লিড পেলো বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসান নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। তিন উইকেট পেয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। 

বাংলাদেশ এর আগে একবারই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে লিড পেয়েছিলো। ২০০৬ সালে, অস্ট্রেলিয়ার সর্বশেষ বাংলাদেশ সফরে ফতুল্লা টেস্টের প্রথম ইনিংসে শাহরিয়ার নাফীসের সেঞ্চুরিতে ভর করে বাংলাদেশ তুলে ৪২৭ রান। জবাব দিতে নেমে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৬৯ রান করে অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশ লিড পায় ১৫৮ রানের।

দ্বিতীয়বার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের লিড পাওয়ার মূল কুশীলব সাকিব আল হাসান। এই ইনিংসে তিনি তুলে নেন পাঁচ উইকেট।

এই ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়ে টেস্টখেলুড়ে সব দেশের বিপক্ষে ইনিংসে পাঁচ বা এর চেয়ে বেশি উইকেট নেয়ার চক্র পূরণ করেন তিনি। তার আগে এমন কীর্তি আছে কেবল তিনজনের। তার আগে এমন কীর্তি আছে মুত্তিয়া মুরালিধরন, রঙ্গনা হেরাথ ও ডেল স্টেইনের। এদের মধ্যে সাকিব সবচেয়ে কম ম্যাচ খেলে এই কীর্তি গড়েন।

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে এই ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরিও করতে পারেননি তাদের কোনো ব্যাটসম্যান। সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেন ম্যাট রেনশ। সফরকারীদের টপ অর্ডারের চার জন ব্যাটসম্যান ছুঁতে পারেননি দুই অংকের রানই।

বাংলাদেশি বোলারদের সামনে, বিশেষ করে স্পিনারদের সামনে কঠিন পরীক্ষাই দিতে হয়েছে অসিদের। বাংলাদেশকে ২৬০ রানে গুটিয়ে দেয়ার পর তাদের স্বস্তিতেই থাকার কথা ছিলো। প্রথম দিনের শেষ বিকেলের নয় ওভারে তাদের স্বস্তি হাওয়া করেন সাকিব ও মিরাজ। দুজনে একটি করে উইকেট তুলে নেন। একজন বিদায় নেন রান আউটের ফাঁদে পড়ে।

নয় ওভারে তিন উইকেটে ১৮ রান নিয়ে দিন শুরু করে অসিরা। দিনের প্রথম ১৫ মিনিটের মধ্যেই স্টিভ স্মিথকে বোল্ড করে ফেরান মিরাজ। তার ফ্লাইটেড ডেলিভারি সামনে এগিয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন স্মিথ। প্রথম দিনের শেষে সংবাদ সম্মেলনে স্মিথকে ‘সবচেয়ে বড় হুমকি’ বলে অভিহিত করেছিলেন সাকিব।

এই বাধা দূর হওয়ার পর লাঞ্চের আগে আরো দুটি উইকেট পায় বাংলাদেশ। স্মিথের পর ম্যাট রেনশও আউট হন লাঞ্চের আগে। এরপর মনে হচ্ছিলো অস্ট্রেলিয়াকে আউট করা বাংলাদেশের জন্য কেবলই সময়ের ব্যাপার। কিন্তু তা হয়নি অষ্টম উইকেটে অ্যাশটন অ্যাগার ও প্যাট কামিন্সের দৃঢ়তায়। অষ্টম উইকেটে এ দুজন যোগ করেন ৪৯ রান।

অস্ট্রেলিয়ার দলীয় ১৯৩ রানে কামিন্সকে আউট করে জুটি ভাঙেন সাকিব। পরে অস্ট্রেলিয়ার শেষ উইকেট, জস হ্যাজলউডকেও বোল্ড করেন বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার। তাকে আউট করেই বিশ্বের সব টেস্টখেলুড়ে দলের বিপক্ষে ইনিংসে পাঁচ বা এর চেয়ে বেশি উইকেট নেয়ার নজির গড়েন সাকিব।

বাংলাদেশের হয়ে এই ইনিংসে সাকিবের পাঁচ উইকেটের পাশাপাশি মেহেদি হাসান মিরাজ নেন তিন উইকেট নেন।

এর আগে প্রথম ইনিংসে তামিম ইকবালের ৭১ ও সাকিব আল হাসানের ৮৪ রানে ভর করে ২৬০ রান করে বাংলাদেশ। এ দুজন ১৫৫ রানের জুটি গড়ে দলকে সম্ভাব্য বিপদ থেকে রক্ষা করেন। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে প্রথম ইনিংসে তিনটি কর উইকেট নেন নাথান লায়ন, প্যাট কামিন্স ও অ্যাশটন অ্যাগার।