ভেজাল ওষুধে ২৮ শিশুর মৃত্যু, ৮ বছর পর স্বাস্থ্যসচিবকে তলব

২০০৯ সালে রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল খেয়ে মারা গিয়েছিল ২৮ শিশু। মর্মান্তিক সেই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় প্রায় ৮ বছর পর স্বাস্থ্যসচিব সিরাজুল হককে তলব করেছেন হাইকোর্ট।

সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। পাশাপাশি শিশুমৃত্যুর ঘটনায় সেই সময় ওষুধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার অদক্ষতা ও অযোগ্যতার বিষয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেয়ায় সিরাজুল হককে আগামী ২৩ আগস্ট আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।

আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন মনজিল মোরসেদ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। চলতি বছরের ৩ আগস্ট মামলা পরিচালনায় অদক্ষতা ও অযোগ্যতার বিষয়ে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা প্রতিবেদন আকারে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জানাতেও স্বাস্থ্যসচিব ও ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালককে বলা হয়েছিল।

পরে স্বাস্থ্যসচিবের পক্ষ থেকে আদালতে এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। যেখানে বলা হয়, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের উপপরিচালক মো. আলতাফ হোসেন ও সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলামকে ইতোমধ্যে সতর্ক করা হয়েছে। তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেয়ায় নতন করে আবেদন করেন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের মনজিল মোরসেদ।

মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘রিড ফার্মা নামের একটি ফার্মাসিটিক্যালসের ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় ওষুধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার অদক্ষতা, অযোগ্যতা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বিষয়টি অবহেলার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তা হাইকোর্ট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জানতে চেয়েছিলেন। স্বাস্থ্যসচিবের দেয়া প্রতিবেদনে দেখা যায়, অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের ক্ষমা করা হয়েছে। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতেই স্বাস্থ্যসচিবকে ২৩ আগস্ট আদালতে হাজির হতে বলেছেন আদালত।

প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের সেই ঘটনায় জুন থেকে আগস্ট মাসে রীড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে দেশব্যাপী ২৮ শিশু মৃত্যুবরণ করে। পরে রীড ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমানসহ পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়। মামলার অন্য আসামীরা হলেন, মিজানুরের স্ত্রী কোম্পানির পরিচালক শিউলি রহমান, পরিচালক আব্দুল গণি, ফার্মাসিস্ট মাহবুবুল ইসলাম ও এনামুল হক। ঢাকার ড্রাগ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক মো. শফিকুল ইসলাম।