ভয়াল ২১ আগস্ট আজ: গ্রেনেড হামলার ১৩ বছর

ভয়াল ২১ আগস্ট আজ। দুঃসহ ও বিভীষিকাময় গ্রেনেড হামলার ১৩ বছর পূর্ণ হলো আজ। ১৩ বছর আগে আজকের এই দিনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে নারকীয় গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। সেই হামলায় আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতা-কর্মী নিহত হন। আহত হন অসংখ্য নেতা-কর্মী। যাদের অনেকে এখনো বয়ে বেড়াচ্ছেন দুঃসহ যন্ত্রণা।

ভয়াল এ দিনটি স্মরণে নানা কর্মসূচী গ্রহণ করেছে আওয়ামী লীগ। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার পৃথক বাণী দিয়েছেন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে ট্রাকমঞ্চে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার বক্তব্য শেষ হতে না হতেই গ্রেনেডের বিস্ফোরণে স্তম্ভিত হয়ে পড়ে গোটা এলাকা।

শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে একের পর এক বিস্ফোরিত হয় ১৩টি গ্রেনেড। নিজেদের জীবন বাঁজি রেখে মানববর্ম তৈরি করে সেদিন শেখ হাসিনাকে প্রাণে বাঁচিয়ে দিয়ে গাড়িতে তুলে দিয়েছিল নেত্রী প্রিয় নেতা-কর্মীরা। বঙ্গবন্ধু কন্যাকে হত্যার শেষ প্রচেষ্টা হিসেবে ঘাতকরা তার গাড়ি লক্ষ্য করে পরপর ১২টি গুলি ছুড়েছিল। কিন্তু আশ্চার্যজনকভাবে সেদিন ভাগ্যগুণে গুলিবর্ষণ থেকেও প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।

এ ভয়ঙ্কর গ্রেনেড হামলার পর স্পিন্টারের আঘাতে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে রাস্তায় পড়েছিলেন আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদক আইভি রহমানসহ অসংখ্য নেতা-কর্মী। গুরুতর আহত অবস্থায় ২৪ আগস্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। শেখ হাসিনাকে আড়াল করতে যেয়ে ঘটনার দিনই বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে জীবন বিলিয়ে দিয়েছিলেন তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকর্মী ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ।

শেখ হাসিনাকে বাঁচাতে মানবঢাল তৈরি করতে যেয়ে ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফের মাথায় অসংখ্য স্পিন্টার বিদ্ধ হয়েছিলেন। অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করেছেন প্রায় আড়াই বছর। অবশেষে ২০০৬ সালের ২৭ নভেম্বর জীবনের কাছে হার মানেন তিনি। ভয়াবহ সেই হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে গেলেও শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

এ ছাড়াও সেদিনের গ্রেনেড হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন যারা

আওয়ামী লীগের সহ-সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ সেন্টু, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), ঢাকা মহানগরের ৫৮ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুফিয়া বেগম, ১৫ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হাসিনা মমতাজ রীনা, মহিলা আওয়ামী লীগ কর্মী রেজিয়া বেগম, জাতীয় শ্রমিক লীগের কর্মী নাসির উদ্দিন সর্দার, ৩০ নম্বর ওয়ার্ড রিকশা শ্রমিক লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ হানিফ, ৬৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেলাল হোসেন, যুবলীগ বালুঘাট ইউনিটের সভাপতি ও ক্যান্টনমেন্ট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, হোসেনপুর ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি লিটন মুন্সী লিটু, ৮৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা আতিক সরকার, স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী আবদুল কুদ্দুস পাটোয়ারী, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ কর্মী ও রিরোলিং মিল ব্যবসায়ী রতন সিকদার, ছাত্রলীগ কর্মী ও সরকারি কবি নজরুল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মামুন মৃধা, জামালপুর আওয়ামী লীগ কর্মী আমিনুল ইসলাম মোয়াজ্জেম, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ কর্মী ইছহাক মিয়া, মোঃ শামসুদ্দিন, মমিন আলী, আবুল কাসেম ও জাহেদ আলী।