বিটিআরসি কেন নিজ থেকে কলরেট বাড়াতে চায়?

সম্প্রতি বাংলাদেশে সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম মোবাইল ফোনের কলরেট কমানোর ঘোষণা দিলেও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বা বিটিআরসি কেন কলরেট বাড়াতে চাচ্ছে এমন প্রশ্ন উঠেছে সর্বত্র। 

দেশের বিদ্যমান বিভিন্ন মুঠোফোন অপারেটরদের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কলরেট বাড়ানোর কোন দাবির কথা শোনা যায়নি। আর গ্রাহকদের এমন দাবি জানানোর প্রশ্নই ওঠে না। সরকারের তরফ থেকেও এ ধরনের কোন ঘোষণা লক্ষ করা যায়নি। বরং মোবাইল ফোনের কলরেট কমানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। কলরেট বাড়ানোর বিষয়ে অপারেটর কোম্পানি বা সরকারে তরফ থেকে কোন দাবি না উঠলেও বিটিআরসি কেন হঠাৎ করে কলরেট বাড়াতে চাচ্ছে? এই প্রশ্ন এখন সবার মনে।

এ বিষয়ে বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশে মোবাইল ফোনের কলরেট পৃথিবীর মধ্যে প্রায় সর্বনিম্ন। অন্য কোথাও এত সস্তায় কেউ কথা বলতে পারেনা। কিন্তু সেটাও আমাদের কথা নয়। আমাদের কথা হচ্ছে, একই অপারেটরে বা অননেটে কথা বলার জন্য এবং এক অপারেটর থেকে ভিন্ন কোম্পানির অপারেটরে বা অফনেটে দুই রকম কলরেট কাটা হয়। অননেটের জন্য সর্বনিম্ন ২৫ পয়সা এবং অফনেটের জন্য সর্বনিম্ন ৬০ পয়সা করে প্রতি মিনিটে কাটা হয়। পৃথিবীর কোন জায়গায় অননেটে এবং অফনেটের মধ্যে এতটা পার্থক্য নেই। তাই আমরা এই দুই ধরনের কলরেটের মধ্যে পার্থক্য কমাতে চাচ্ছি।’

কলরেট বাড়ানোর বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘কলরেটের পরিমাণ সর্বনিম্ন হলেও বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের ব্যবসা অনেক দেশের তুলনায় বেশ লাভজনক। অননেট-অফনেট কলরেটের পার্থক্য কমাতে গেলে সর্বনিম্ন কলরেট ২৫ পয়সা থেকে কল রেট বেড়ে গেলে গ্রাহক পর্যায়ে মোবাইল ফোনে কথা বলার ব্যয়ও বেড়ে যাবে। সেক্ষেত্রে গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষা হবে না।

বিশেষজ্ঞদের মত এবং গ্রাহক স্বার্থের বিষয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘গ্যাস-বিদ্যুৎ এর মূল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা এমনভাবে বাড়াবো যাতে গ্রাহকের উপর সর্বনিম্ন প্রতিক্রিয়া হয়।’

এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ আবু সাঈদ খান বলছেন, বিটিআরসি’র কাজ হচ্ছে উভয়ের স্বার্থ সমানভাবে রক্ষা করা। কিন্তু বিটিআরসি আজ পর্যন্ত মোবাইল অপারেটর কোম্পানি এবং গ্রাহকদের স্বার্থ সমানভাবে রক্ষা করতে পারেনি। সেবার মাণ নিয়ন্ত্রণের জন্যও তারা তেমন কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পেরেছে বলে মনে হচ্ছে না।’

বিটিআরসি’র কলরেট বাড়ানোর উদ্যেগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিটিআরসি কলরেট বাড়াতে চাচ্ছে কারণ, বিটিআরসি অপারেটরদের কাছ থেকে রাজস্ব পায়। রাজস্ব বৃদ্ধিই কলরেট বাড়ানোর একমাত্র সম্ভাব্য কারণ।’ বাড়তি রাজস্ব প্রাপ্তির চিন্তা সংস্থাটিকে এ ধরনের উদ্যোগ নিতে উৎসাহিত করেছে বলে মনে করেন তিনি।