মিশরে ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৩৬, আহত ১২৩

মিশরে ট্রেন দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৩৬ জন মারা গেছেন এবং আহত হয়েছেন ১২৩ জন। শুক্রবার (১১ আগস্ট) স্থানীয় সময় রাত দেড়টার দিকে দেশটির উপকূলীয় শহর আলেকজান্দ্রিয়ায় দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ খবর নিশ্চিত করেছে মিশরের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন।

রাজধানী কায়রো থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রেনের সাথে পোর্ট সাঈদ শহর থেকে ছেড়ে আসা অপর একটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রেন দুটির অংশবিশেষ দুমড়ে মুচড়ে গেছে। এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস তাদের প্রতিবেদনে নিহতের সংখ্যা ৩৭ জন বলে দাবী করছে। নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ‘আলেকজান্দ্রিয়া শহরের স্থানীয় হাসপাতালে আহতদের ভর্তি করা হয়েছে। হতাহতদের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’ 

মিশরের পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশ বলছে, ‘মিশরের রেলওয়ের নিরাপত্তা খুব বেশি শক্তিশালী নয়। ধারণা করা হচ্ছে চলন্ত অবস্থায় একটি ট্রেন অচল হয়ে লাইনের উপর দাঁড়িয়ে ছিল। ফলে ওই লাইন ধরে দ্রুত গতিতে আসা অপর ট্রেনটি দাঁড়িয়ে থাকা অচল ট্রেনটিকে ধাক্কা দিলে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।’

মিশরের ইংরেজি পত্রিকা ইজিপ্ট ইনডিপেনডেন্ট তাদের অনলাইন সংস্করণে এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ‘দুর্ঘটনার আধা ঘণ্টার মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৩০টি অ্যাম্বুলেন্স দ্রুতগতিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধস্তন কর্মকর্তা ম্যাগী হেগাজি আলেকজান্দ্রিয়ার সব হাসপাতালে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। আলেকজান্দ্রিয়া গভর্নর মোহাম্মদ সুলতান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তিনি সকল কর্মকর্তাকে দুর্ঘটনার জন্য জবাবদিহি করেছেন। দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় মিলিটারির প্রধান, মেজর জেনারেল আদেল আশমুয়ীও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।’

প্রসঙ্গত, মিশরের রেলওয়ে খাতে নিরাপত্তার ব্যবস্থাপনার দুর্বল রেকর্ড বহু পুরানো। প্রায় প্রতি বছরই দেশটিতে বড় ধরনের ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে এবং বহু সংখ্যক মানুষের মৃত্যু ঘটে। এর আগে ২০১২ সালের দুর্ঘটনায় কায়রোর ১৯০ মাইল দক্ষিণে একটি স্কুল বাস রেল ক্রসিং অতিক্রমকালে দ্রুত গতিতে ছুটে আসা একটি ট্রেন ধাক্কা দিলে অন্তত ৫০জন নিহত হয়। যাদের অধিকাংশই ছিল শিশু। রেল কর্তৃপক্ষ ওই ঘটনার জন্য সংকেত অপারেটরকে দায়ী করেছিল। যিনি ঘটনার সময় ক্রসিং বন্ধ না করে ঘুমিয়ে ছিলেন। তবে মিশরের সবচেয়ে বড় ট্রেন দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল ২০০২ সালে। ওই বছর ট্রেনে আগুন ধরে ৩৭০ জন নিহত হয়েছিল।