সিদ্দিকুরকে টিয়ার শেল মারা পুলিশ কর্মকর্তা শনাক্ত

টিয়ার শেল ছুড়ে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমানের চোখ নষ্ট করে দেয়ার ঘটনায় এক পুলিশ কর্মকর্তাকে শনাক্ত করে পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ওই প্রতিবেদনে সাত পুলিশকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে।

ডিএমপি সদর দপ্তরের গঠিত কমিটির তদন্তে এ ঘটনায় সাত পুলিশের সম্পৃক্ততার বিষয়টি উঠে এসেছে। যে পুলিশ কর্মকর্তা খুব কাছ থেকে সিদ্দিকুরকে টিয়ারশেল মেরেছেন তার নাম উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে।

এছাড়া ওই শাস্তি প্রদানের সুপারিশের তালিকায় দু’জন ইন্সপেক্টর ও তিনজন কনস্টেবলের নামও রয়েছে বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএমপি হেডকোয়ার্টারের একজন কর্মকর্তা জানান, সিদ্দিকুরের চোখে যে পুলিশ কর্মকর্তা খুব কাছ থেকে টিয়ারশেল মেরেছেন, তাকে শনাক্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। এছাড়া শাহবাগ থানা ও পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টের বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অপেশাদার আচরণের সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের সবার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপারেশন) রেজাউল আলম পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে অপেশাদার আচরণের অভিযোগ তুলে জানান, ঘটনাস্থলের কাছে শাহবাগ থানার পরিদর্শক মো. আবু জাফর আলী বিশ্বাস ও পরিদর্শক (অভিযান) আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু এ দুজন পুলিশ দাঙ্গা দমন বিভাগের সদস্যদের নিবৃত্ত করেননি।

এ দুজন পুলিশ সদস্যকেও অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি উল্লেখ করে রেজাউল আলম জানান, তদন্ত প্রতিবেদনে কয়জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সে বিষয়ে এখনই জানাতে চাচ্ছি না।

তদন্ত কমিটির সদস্য গোয়েন্দা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপকমিশনার মো. শহিদুল্লাহ জানান, তদন্ত করে দেখা গেছে যে, খুব কাছ থেকে সিদ্দিকুরকে টিয়ার শেল ছোড়া হয়েছে। আর টিয়ার শেলে যে উপকরণ ছিলো তা চোখের জন্য ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।

চোখে টিয়ার শেলের আঘাত লাগার পরপরই রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন সিদ্দিক। পরে তাকে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা করা হয়। তখনই চিকিৎসকরা জানান যে, সিদ্দিকের চোখে আলো ফেরার সম্ভাবনা কম।

এরপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সিদ্দিকের চিকিৎসার সার্বিক দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং তাকে চেন্নাই পাঠায়। সেখানে শঙ্কর নেত্রালয়ে তার চিকিৎসা চলছে। এর মধ্যেই তার চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছে এবং শনিবার ব্যান্ডেজ খোলা হয়েছে। অস্ত্রোপচারের আগে সিদ্দিকের চিকিৎসক জানিয়েছেন, সিদ্দিকের চোখে আলো আর ফিরবে না। অস্ত্রোপচারের পর অবশ্য বাঁ চোখে সামান্য আলো অনুভব করছেন সিদ্দিক।