এবার ইনিংস ব্যবধানে জিতলো ভারত

দিমুথ করুনারত্নে এবং কুসাল মেন্ডিসের অনন্য প্রতিরোধের গল্প শেষ পর্যন্ত একটা দারুণ সমাপ্তি পেলো না। কলম্বো টেস্টে ভারতের কাছে ইনিংস ব্যবধানেই হারতে হলো স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে। শ্রীলঙ্কার যেখানে এমন বেদনার মুহূর্ত, সেখানেই রচিত হলো ভারতের টানা আট সিরিজ জয়ের অভাবনীয় ইতিহাস। পরের সিরিজটি জিততে পারলে টানা সবচেয়ে বেশি সিরিজ জেতার অস্ট্রেলিয়ান বিশ্বরেকর্ডে ভাগ বসাতে পারবেন কোহলিরা। অস্ট্রেলিয়ার টানা নয়টি সিরিজ জেতার কীর্তি আছে।

গলে দারুণ এক জয়ের পর কলম্বোতেও প্রথমেই ৬২২ রানের পাহাড় গড়ে ভারত। ম্যাচের প্রথম ইনিংস শেষেই ব্যাকফুটে চলে যায় শ্রীলঙ্কা। এরপর এই ম্যাচের একটা করে সেশন গেছে এবং শ্রীলঙ্কা একটু একটু করে ম্যাচ জেতার বা ড্র করার সম্ভাবনা থেকে দূরে সরে গেছে।

শেষ ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামার আগে ইনিংস হার এড়াতে ৪৪০ রান দরকার ছিলো স্বাগতিকদের। কিন্তু তারা অলআউট হয়ে যায় ৩৮৬ রানে। ফলে একদিন হাতে রেখে ভারত ম্যাচ জিতে যায় ইনিংস ও ৫৩ রানের ব্যাবধানে।

ম্যাচের শেষ পরিণতিটা দেখলে মনে হবে শ্রীলঙ্কা বোধহয় একটুও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। আদতে তা নয়। বরং শেষ ইনিংসে দিমুথ করুনারত্নে এবং কুসাল মেন্ডিস যে চেষ্টা করেছেন, তা এক কথায় তুলনাহীন।

দুজন মিলে খেলেছেন ৪৪২টি বল। স্কোরবোর্ডে যোগ করেছেন ২৫১ রান। সেঞ্চুরি পেয়েছেন দুজনই। কিন্তু তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে লড়াই করতে পারেননি আর কোনো লঙ্কান ব্যাটসম্যান। ফলে চতুর্থ ইনিংসে এই দুজনের অনবদ্য দুটি সেঞ্চুরি হয়ে থাকলো কেবলই ‘দুর্বলের প্রচেষ্টা’।

ম্যাচের শুরুতে ভারতকে ড্রাইভিং সিটে বসিয়ে দেন চেতেশ্বর পুজারা ও আজিঙ্কা রাহানে। প্রথম দিনেই সেঞ্চুরি তুলে নেন তারা। তাদের সেঞ্চুরি দুটির উপর ভর দিয়েই ৬২২ রানের পাহাড় গড়ে ভারত। পরে বল হাতে শ্রীলঙ্কার বিপদ আরো ঘোরতর করে তুলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও জাদেজারা। অশ্বিন তার ক্যারিয়ারের ২৬তম বারের মতো তুলে নেন পাঁচ উইকেট। জাদেজাও শিকার করেন দুটি।

ব্যাটসম্যানদের পর ভারতীয় স্পিনারদর সদাপট বিচরণে মাত্র ১৮৩ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। ফলোঅন বেয়ে আবার তাদের নামতে হয় ব্যাটিংয়ে। কোণঠাসা অবস্থায়, আহত সিংহের মতো ঘুরে দাঁড়ানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করে স্বাগতিকরা। আর এই চেষ্টার নেতৃত্ব দেন করুনারত্নে। ৩০৭ বলের দীর্ঘ ইনিংসে দলের চাহিদা মেটানোর সর্বোচ্চ চেষ্টাই করেন তিনি। তার সঙ্গে চেষ্টা করেন কুসালও। করুনারত্নের তুলনায় কুসাল অবশ্য আক্রমণাত্মক ছিলেন। ১৪১ রান করতে করুনারত্নে খেলেন ৩০৭ বল আর কুসাল ১১০ রান করেন ১৩৫ বলে।

এই দুজনের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায় অন্যদের নিরুত্তাপ অংশগ্রহণে। এই ইনিংসে ভারতের সফলতম বোলার জাদেজা। তিনি ক্যারিয়ারের নবম পাঁচ উইকেট তুলে নেন। এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জেতার পর ভারত এখন কেবল হোয়াইটওয়াশের স্বপ্নই দেখতে পারে।