ঢাবিতে শিক্ষক নিয়োগে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গত আট বছরে ৯০৭ শিক্ষক নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম এবং দলীয় অনুগতদের নিয়োগ দেয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী সাদা দলের শিক্ষকরা। শুক্রবার (৪ আগস্ট) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়।

‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাড়ে আট বছরে ৯০৭ শিক্ষক নিয়োগ, অনুগতদের নিয়োগ দিতেই অনিয়ম’ শিরোনামে শুক্রবার (৪ আগস্ট) দেশের প্রথম সারির একটি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে এ বিবৃতি দেয় সাদা দল। সাদা দলের আহবায়ক অধ্যাপক ড. মোঃ আখতার হোসেন খান স্বাক্ষরিত ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‌‌'বিগত বছরগুলোতে যেভাবে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাতে আমরা চরমভাবে উদ্বিগ্ন ও ভীষনভাবে হতাশ।'

বিবৃতিতে বলা হয়, ‌‘সাদা দল থেকে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষক নিয়োগসহ প্রশাসনের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে লিখিত ও মৌখিক প্রতিবাদ করে আসা হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন বরাবরই আমাদের প্রতিবাদকে উপেক্ষা করেছে। এর ফলে পরিস্থিতি এমনই হয়েছে যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘ দিনের ঐতিহ্য সুনাম আজ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) মাননীয় প্রধান বিচারপতির প্রদত্ত এক আপিল রায়েও বিষয়টি উঠে এসেছে। শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মসহ উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরে ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়কে নিয়ে যে সকল অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত খবর প্রকাশিত হচ্ছে, তাতে আমরা আমাদের প্রাণপ্রিয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে শংকিত, উৎকণ্ঠিত এবং চিন্তিত।’

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‌‘মেধাবী ও যোগ্য শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ। উপযুক্ত শিক্ষকের উপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও গবেষণা কার্যক্রম নির্ভর করে। কিন্তু গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক বছরে শিক্ষক নিয়োগে মেধা ও যোগ্যতাকে পাশ কাটিয়ে দলীয় আনুগত ব্যক্তিদের শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক দীর্ঘস্থায়ী সংকটে পড়বে বলে আমাদের আশঙ্কা। যোগ্য প্রার্থীদের বাদ দিয়ে নূন্যতম যোগ্যতা পূরণ না করা প্রার্থীদের নিয়োগ দেয়া কেবল আইন বিরুদ্ধ নয়, নৈতিকতা পরিপন্থী এবং অমানবিকও বটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধান উপেক্ষা করে বিজ্ঞাপনের অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ দানের বিষয়টিও প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।’

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘অযোগ্য শিক্ষকদের নিয়োগ দানের ফলে যোগ্য এবং সত্যিকার মেধাবী শিক্ষকদের মধ্যেও মর্ম যন্ত্রণা কাজ করে। কিছু সংখ্যক অযোগ্যদের কারণে আজ তাঁদের নিয়োগ নিয়েও কথা শুনতে হচ্ছে। অন্যদিকে যে সকল মেধাবীরা নিয়োগ বঞ্চিত হয়েছেন তারা হতাশায় ভুগছেন, এমনকি অনেকে বিদেশেও পাড়ি জমিয়েছেন। এ অবস্থা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। তাই নিয়োগ অনিয়ম নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে উল্লেখিত অনিয়ম সমূহের বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে সাদা দলের শিক্ষকরা।’