হজ থেকে সৌদি আরবের আয় কতো?

প্রতিবছর সারা পৃথিবীর লক্ষ লক্ষ মুসলমান সৌদি আরবের পবিত্র নগরী মক্কা-মদিনায় হজ পালন করতে যান। হজের সময় সৌদি আরবের আর্থিক লেনদেন থাকে ঊর্ধ্বমুখী। শুধু হজের মৌসুমে সৌদি আরবের আয় হয় কোটি কোটি ডলার। যা সৌদির রোজগারের অন্যান্য খাতের চাইতেও বেশি।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসির এক বিশেষ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালে মোট ৮৩ লক্ষ মানুষ হজ করতে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন। যার মধ্যে আল-উমরাহতে গিয়েছিলেন ৬০ লাখেরও বেশি মানুষ। গত এক দশকে গড়ে ২৫ লক্ষ মুসলমান হজ করেছেন। 

আগামী চার বছরের মধ্যে উমরাহ করতে যাওয়া মুসলমানের সংখ্যাটা বেড়ে এক কোটি ২০ লক্ষ হবে। গত সাত বছরে যে সংখ্যাটি ছিলো ৪০ লাখের কাছাকছি। 

সৌদি আরবের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৬ সালে হজ থেকে সৌদি আরবের সরাসরি আয় হয়েছিল প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার। সৌদিতে যাওয়া হজ যাত্রীরা সেখানে মোট ২৩ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছিলেন। যার হিংহভাগ যোগ হচ্ছে সৌদি অর্থনীতিতে।

মক্কার চেম্বার অব কমার্সের পরিসংখ্যান বলছে, বাইরের দেশগুলো থেকে আসা মুসলমানরা মাথাপিছু খরচ করেন ৪৬০০ ডলার। অন্যদিকে আরবের স্থানীয়রা মাথাপিছু খরচ করেন প্রায় ১৫০০ ডলার। ইরানিদের মাথাপিছু খরচ হয় ৩০০০ ডলার। এশিয়া মহাদেশের পাকিস্তান ও বাংলাদেশের হজ যাত্রীদেরও খরচটা একই রকম।

অনেকে সৌদিতে গিয়ে ব্যক্তিগত কেনাকাটাও করেন। যেমন ইরানের এক যাত্রী জানিয়েছেন, তার হজের মোট বাজেট আট হাজার ডলার। ফলে নানাভাবে আর্থিক লাভবান হচ্ছে সৌদি আরব।

বাইরের দেশগুলোর মধ্যে ইন্দোনেশিয়া থেকেই সবচাইতে বেশি সংখ্যক মুসলমান হজে যান। মোটামুটি দুই লক্ষ কুড়ি হাজার ইন্দোনেশিয়ান প্রতি বছর হজে যান। যা মোট হজ যাত্রীর প্রায় ১৪ শতাংশ। এছাড়াও মোট হজ যাত্রীর ১১% পাকিস্তান ও ভারত আর ৮% বাংলাদেশ।

পরিসংখ্যান বলছে, হজ থেকে সৌদি আরব যা আয় করে তা তাদের অপরিশোধিত তেল বিক্রি করে রোজগারের চাইতেও বেশি। আন্তর্জাতিক একটি সংস্থা বলছে, তেল উৎপাদন কম হওয়ায় সৌদি আরবের অর্থনৈতিক উন্নয়নের হার নিম্নমুখী। তবে সেই ক্ষতি তারা ধর্মীয় পর্যটন থেকে পুষিয়ে নিতে চাইবে।