ইন্টেলেকচুয়ালরা পাবলিকের সিনেমা দেখার রুচি বদলাইতে পারে না?
- Details
- by আবু তাহের তারেক
ইন্টেলেকচুয়ালরা চাইলে আমরার সিনেমা দেখার রুচিরে বদলাই দিতে পারে। অবশ্য, বাংলাদেশের ইন্টেলেকচুয়ালরা তা এখনো চাইতেছে না। কিন্তু, কেন চাইতেছে না?
হিন্দি সংস্কৃতির কালচারাল, অর্থনৈতিক এসল্ট মোকাবিলার দায় শুধু ডিরেক্টরদের উপরে দিলে চলবে না।
ইন্টেলেকচুয়ালরা সেই লোক, যারা পাবলিকের সিনেমা দেখার ধারা, এমনকি ডিরেক্টরদের সিনেমা বানাইবার ধরণরেও প্রভাবিত করবার পারেন।
যে দেশে ব্যাক্তি উদ্যোগের বইমেলা একুশে বইমেলায় রূপ নিতে পারে, যে দেশে গুটিকয়েক ঢাকা ভার্সিটির লোকের আবিস্কার পান্তা ইলিশ খাওয়া ব্যাপক ট্রাডিশন হইয়া উঠতে পারে, সেই দেশে ইন্টেলেকচুয়ালরা চাইলে; শিক্ষিত মধ্যবিত্তের সিনেমা দেখার রুচিরে বদলাই দিতে পারা অসম্ভব কিছু না।
সমস্যা হইল, ইন্টেলেকচুয়ালদের দ্বারা হিন্দি সংস্কৃতির কালচারাল ও ইকনমিকাল এগ্রেশনের ইফেক্ট ধরতে না পারায়।
আমরা সেই দেশের নাগরিক, যে দেশের সেরা ডিরেক্টর আমজাদ হোসেনরে নাগরিক বা ক্রিটিক কেউ চিনে না, অথচ ইন্ডিয়ার ঋত্বিক ঘটকরে বেশ চিনে।
আমরা সেই দেশের নাগরিক, যে দেশে সুজন সখি ফিল্মরে ছোটলোকের ফিল্ম বইলা ডাস্টবিনে ছুঁইড়া ফেলা হয়, আর ইন্ডিয়ার অমুক তমুকের ফিলিম নিয়া দরদ উতলানো কথাবার্তা চাউর করা হয়।
ইন্টেলেকচুয়াল এবং ক্রিটিকরা চাইলে, কালচারাল উপনিবেশ থাকি জাতিরে মুক্তির দিকে লইয়া যাইতে পারে। কিন্তু যে দেশের ইন্টেলেকচুয়ালরা নিজেরাই অপরদের কালচারের উপনিবেশ হইয়া আছে, তারা বরঞ্চ জাতিরে উপনিবেশিতই করবে আরো।
যে দেশের লেখকরা ১৯৪৭ সালে ইনন্ডিয়ার লগে ভাগ হইয়া যাওয়া কলকাতারে ইন্ডিয়া কইতে পারে না, কলকাতার রাইটাররে ইন্ডিয়ার রাইটার কইতে লইজ্যা পায়, সে দেশের লেখক ইন্ডিয়ার কালচারাল উপনিবেশের ধরণরেই বা বুঝবে কেমনে?
ইন্ডিয়া তার হার্ড পাওয়ার অর্থাৎ অস্ত্র শক্তির লগে লগে, সফট পাওয়ার অর্থাৎ কালচারাল শক্তি দিয়াও গুতাইতেছে আমরারে। হেতে কেবল অস্ত্র দিয়া আমরারে সীমান্তে মারতেছে না, কালচার দিয়া আমরার অর্থনীতিরে আর বাংলাদেশীয়ানারেও পংগু কইরা দিতাছে।
ইন্টেলেকচুয়ালরা এখনো ইন্ডিয়ার কালচারাল এগ্রেশনরেই চিহ্নিত করতে পারে নাই, তার মোকাবিলা করা দূরে থাক।
জনগনের রুচিরে বদলাই দেওয়ার ক্ষমতা এবং দায় ইন্টেলেকচুয়ালদের উপরেই বর্তায়। যে দেশের ইন্টেলেকচুয়ালরা সেই দায় নিজেদের কান্ধে না নিবার পারে, সে দেশের অবস্থা বাংলাদেশের মত লেজেগুবরে হয়।
বাংলাদেশের মত সে দেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি মইরা যায়, দেশের গানের ধারা থির হইয়া যায়, বাংলাদেশের মত; সেই দেশে একটা জনপ্রিয় বইও তিন-চারশ কপির বেশি বিক্রি হয় না।
ইন্ডিয়ান ফিল্মের বিপরীতে, দেশের মানুষরে; চাইলেই বিশ্ব ফিল্মের লগে পরিচিত করাই দেওয়া যায়। ফিল্মের দেশ হিসাবে জাপান, ইতালি, কোরিয়া, চীন, ইরান, রাশিয়া ইত্যাদিরে সিনেমাপ্রেমিক মানুষের কাছে জনপ্রিয় করা যায়।
যে দেশের মানুষের চোখে সত্যজিৎ রায়ই হইল দুনিয়ার সেরা ফিল্মমেকার, যে দেশের মানুষের কাছে রবীন্দ্রনাথ হইলেন বিশ্বকবি, সে দেশের ইন্টেলেকচুয়ালরাও তো সে দেশের মানুষের মতনই কুয়ার ব্যাঙ হইব।
এইসব কুয়ার ব্যাং ইন্টেলেকচুয়ালরা পাবলিক রুচি বদলাইব কেমনে?
লেখক: আবু তাহের তারেক
কবি, অনুবাদক, সমালোচক।
প্রকাশিত বই: ফের্নান্দ পেসোয়ার নির্বাচিত কবিতা (২০১৬), নাগরি প্রকাশ।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.