বেড়েই চলেছে এসি বিস্ফোরণ, বাড়ছে প্রাণহানি

সাম্প্রতিক সময়ে প্রচণ্ড গরমে এসি বিস্ফোরণে দগ্ধ হওয়ার ঘটনা বেড়েই চলেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন বার্ন ইউনিটসহ বিভিন্ন হাসপাতালে এসির কম্প্রেসার বিস্ফোরণে গুরুতর দগ্ধদের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়ছে। এদের অনেকেই চিকিৎসাধীন থাকা কালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন। এছাড়া এসি বিস্ফোরিত হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হচ্ছে অনেকের।

এর কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বাজারে প্রচলিত নিম্নমানের এসি, রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ও দীর্ঘ সময় ধরে এসি চালু থাকা ইত্যাদি কারণে এসি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে।

ঢামেক বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন ডা. পার্থ শংকর পাল জানান, এসি বিস্ফোরণের ঘটনায় গত দেড় বছরে ২৫ থেকে ২৭ জন বার্ন ইউনিটে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে নয় জন মারা গিয়েছেন। তিনি জানান, কয়েক বছর আগেও দেশে এতো এসি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতো না।

এ প্রসঙ্গে এসি ব্যবসায়ী বশীর আহমেদ বলেন, বৈদ্যুতিক হাই ভোল্টেজের সমস্যা থাকলে ইলেক্ট্রিক মেশিনের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়। এ থেকেও বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। ভালো মানের আর্থিং লাইন এই সমস্যার সমাধান হতে পারে।

ঢাকায় এলজি বাটারফ্লাই কোম্পানির একটি ব্রাঞ্চের ম্যানেজার উম্মে কুলসুম সুইটি বলেন, সময়মতো এসি সার্ভিসিং না করালে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে। এসির কম্প্রেসারে জ্যাম হয়ে থাকতে পারে অথবা গ্যাস লিকও হয়ে যায় অনেক সময়। ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ না করলে পুরনো এসি যে কোনো সময় বিস্ফোরিত হতে পারে।

এছাড়া এসির ওপর প্রেসার বেড়ে গেলে কিংবা ভালো মানের টেকনেশিয়ান দিয়ে এসির সার্ভিসিং না করালেও এসি বিস্ফোরিত হতে পারে বলেও জানান তিনি।

বিদেশ থেকে আনা নিম্নমানের কম দামি কম্প্রেসারের ফলেও এসি বিস্ফোরিত হতে পারে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান। তিনি বলেন, এসব মানহীন যন্ত্রাংশ দামি ব্র্যান্ডের নাম লাগিয়ে বাজারজাত করা হচ্ছে।

স্যামসাং বাংলাদেশের হেড অব কাস্টমার স্যাটিসফেকশন সার্ভিস তানভীর শাহেদ বলেন, এসি এক নাগাড়ে আট ঘণ্টার বেশি চালানো উচিত নয়। এতে কম্প্রেসারের ওপর চাপ পড়ে। এছাড়া এসির আউটডোর ইউনিট একটু খোলা জায়গায় রাখা উচিত, যাতে বাতাস চলাচলের সুযোগ থাকে। এছাড়া বছরে কমপক্ষে দুইবার সার্ভিসিং করালে এসি বিস্ফোরণের ঘটনা কমে আসবে।