প্রয়োজন শরীরের ওজন অনুযায়ী দৈনিক পানি পান

সারা দেশে গরম একেবারে অসহনীয় পর্যায়ে পৌছেছে। ঘরে ফ্যানের নিচে বসেও দরদর করে ঘামছে সবাই। আর ঘরের বাইরে হলে তো কথাই নেই। যেনো জ্বলন্ত চুলোয় সেঁধিয়ে যাওয়া হলো।

এই গরমে মানব শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি হয় খুব স্বাভাবিকভাবেই। পানিশূন্যতা বেশি পরিমাণে হলে তা জীবনের জন্য খুব খারাপ কিছুও ডেকে আনতে পারে। এই সমস্যা থেকে বাঁচতে গরমের সময়ে খুব বেশি বেশি পান করা উচিত।

কিন্তু 'খুব বেশি বেশি' বলতে আসলে ঠিক কতোটুকু পানি বোঝানো হচ্ছে? ডাক্তারিবিদ্যা বলে, একজন মানুষ তার শরীরের চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত পানি পান করলে সেটা তার স্বাস্থ্যের জন্য ঝুকিপূর্ণ হয়ে ওঠতে পারে। আবার গরমের সময়ে ডাক্তাররাই বেশি বেশি পানি পান করতে বলেন। তাহলে এই ধাঁধার সমাধান কী?

নিশ্চিতভাবেই একজন মানুষ তার শরীরের চাহিদার অতিরিক্ত পানি পান করলে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হবে। এই অতিরিক্ত পানি কতোটুকু? চিকিৎসাবিদ্যায় বলা হচ্ছে, কেউ যদি দৈনিক ১৬ লিটার পানি পান করে তাহলে সে মৃত্যুর মুখোমুখি পর্যন্ত যেতে পারে। এবার বলুন তো, দৈনিক ১৬ লিটার পানি পান করে বাংলাদেশে এমন মানুষের সংখ্যা কতোজন? শূন্যই বলা চলে।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ডাক্তাররা বলেন, উপমহাদেশের মানুষ এমনিতেই একটু কম পানি পান করতে অভ্যস্ত। খুব বেশি বেশি পানি করতে বলা হলেও দেখা যায় অধিকাংশ মানুষই দিনে চার-পাঁচ গ্লাসের বেশি পানি পান করেন না। এই গরমে আর এই হিউমিডিটিতে যেখানে প্রায় ৩০০০-৩৫০০ মি.লি. পানি পান করা প্রয়োজন, সেখানে অধিকাংশ মানুষ পানি পান করে সর্বোচ্চ ২০০০-২৫০০ মি.লি.।

এর ফলে অযথা অতিরিক্ত পানি পানের ভয় না দেখিয়ে সবাইকে বেশি বেশি পানি পানের কথাই বলা হয়।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, একজন মানুষ কাগজে-কলমে কতোটুকু পানি পান করবেন? পানির তৃষ্ণা পাওয়ার বেশ কিছু লক্ষণ থাকলেও অনেক সময় লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া ছাড়াও শরীরে পানির ঘাটতি হতে পারে। তাই প্যাথলজি রিপোর্ট অনুযায়ী বলা হয়, প্রত্যেক মানুষ তার শারীরিক ওজনের প্রতি কেজির জন্য ৪০ মি.লি. করে পানি পান করবেন।

সুতরাং আর দেরি নয়। ক্যালকুলেটর নিয়ে আপনার মোট ওজনের সাথে ৪০ দিয়ে গুণ করে জেনে নিন দৈনিক আপনার ঠিক কতোটুকু পানি পান করা প্রয়োজন।