গত মৌসুমেও শিরোপায় ভরা ছিল বার্সেলোনার শোকেস। শেষ দিকে গিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা হাতছাড়া হলেও স্প্যানিশ লা লিগা, কোপা দেল রেসহ বেশ কয়েকটি শিরোপা জয়ের উল্লাস করেছিলেন লিওনেল মেসি, লুইস সুয়ারেজ, নেইমাররা। তার আগের মৌসুমগুলোতে সাফল্যের ধারটা আরও উর্ধ্বমুখী ছিল। কিন্তু এবার অনেকটা শূণ্য হাতেই মৌসুম শেষ করতে হচ্ছে বিশ্বের অন্যতম সেরা দলটিকে। চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে আগেই ছিটকে পড়েছে দলটি। দুদিন আগে লিগ শিরোপা হারও নিশ্চিত হয়ে গেছে। এখন কোপা দেল রে জয়ের সম্ভাবনাই কেবল বাকি।

messi suarez neymar

কোপা দেল রের শিরোপা জিতলেও সেটা হবে ‘দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মতো’। চ্যাম্পিয়নস লিগ আর লিগ শিরোপা হাতছাড়া হওয়ার দুঃখ কি আর ঘোচে এটাতে! চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়েছে অনেক আগেই। তবে লিগ শিরোপা হাতছাড়া হওয়ার ক্ষতটা এখনো টাটটা। আলোচনা করা যাক কোন বিষয়গুলো লিগ শিরোপার দৌড়ে পিছিয়ে দিল বার্সেলোনাকে।

অবাক করা কিছু হার:

এই বিষয়টিই সবচেয়ে পিছিয়ে দিয়েছে বার্সেলোনাকে। বড় দলগুলোর বিপক্ষে হোঁচট খাওয়ার বিষয়টি মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু ছোট দলগুলোর বিপক্ষে পূর্ণ পয়েন্ট তুলে নেওয়াটা এক প্রকার দাবি। বার্সেলোনার ক্ষেত্রে এবারের মৌসুমে হয়েছে এর উল্টোটা। নবাগত আলাভেস, সেল্টা ভিগো, দেপোর্তিভো লা করুণা ও মালাগার মতো নিচের সারির দলের বিপক্ষে হারতে হয়েছে বার্সেলোনাকে। অপর দিকে রিয়াল মাদ্রিদ এই দুর্বল দলগুলো বিপক্ষে পূর্ণ পয়েন্টই তুলে নিয়েছে। এই বিষয়টিই শিরোপা নির্ধারণে বড় ভূমিকা রেখেছে।

রিয়াল মাদ্রিদ লিগের শীর্ষ চার দলের বিপক্ষে মাত্র আট পয়েন্ট তুলে নিতে পেরেছে। সেখানে বার্সেলোনা শীর্ষ চার দলের বিপক্ষে পয়েন্ট পেয়েছে ১৪টি। এমনকি রিয়ালকে তাদের মাঠে গিয়ে হারিয়ে এসেছেন মেসি-সুয়ারেজরা। কিন্তু ছোট দলগুলোর বিপক্ষে এতো হারের ওই ক্ষতি এসবে পুষে উঠেনি।

উপযুক্ত বদলির অভাব:

লিওনেল মেসি, লুইস সুয়ারেজ ও নেইমারকে দিয়ে গড়া বার্সেলোনার আক্রমণভাগ বিশ্বের সেরা এমনটা মনে করছেন অনেকেই। রক্ষণভাগও জেরার্ড পিকে, হ্যাভিয়ের মাসচেরানো ও উমতিতিদের নিয়ে যথেষ্ট শক্তিশালি। কিন্তু প্রথম একাদশের তারকাদের কোন ম্যাচে না পেলে তার উপযুক্ত বদলি পায়নি বার্সেলোনা। অর্থাৎ সাইড বেঞ্চে শক্তিশালি ছিল না বার্সেলোনার। লিগে বার্সেলোনা যতগুলো ম্যাচ হেরেছে তার প্রায় সবগুলোতেই সেরা তারকাদের কেউ না কেউ খেলেননি। আর বদলি হিসেবে যারা খেলতে নেমেছিলেন তারা অভাব পূরণ করতে পারেননি।

চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচ থাকায় নবাগত আলাভেসের বিপক্ষে লিওনেল মেসি, লুইস সুয়ারেজ ও আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাকে বিশ্রাম দিয়েছিলেন বার্সা কোচ লুইস এনরিকে। এটাই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। হেরে বসেছে বার্সার অচেনা দলটির বিপক্ষে। দেপোর্তিভোর মাঠে বার্সেলোনার ২-১ গোলে হারের ম্যাচে ছিলেন না নেইমার। এই শূণ্যতা পূরণ করতে পারেনি অন্যরা। বার্সার অন্য হারা ম্যাচগুলোর গল্পও এমনই।

আর অপর দিকে রিয়াল মাদ্রিদের সাইড বেঞ্চ ছিল যথেষ্ট শক্তিশালি। এক জরিপে তো দেখা গেল রিয়ালের সেরা একাদশের চেয়ে সাইড বেঞ্চই বেশি শক্তিশালি! এতে সেরা তারকাদের যথেষ্ট বিশ্রাম দিয়ে খেলাতে পেরেছেন রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান। আর যে ম্যাচে সেরাদের বদলি হিসেবে অন্যদের নামিয়েছেন তারা বুঝতেই দেয়নি অভাবটা। পার্থক্য গড়ে দিয়েছে এটাও।

বার্সেলোনার অকার্যকর মিডফিল্ড:

মাঝ মাঠের দুর্বলতাও ডুবিয়েছে বার্সেলোনাকে। রিয়াল মাদ্রিদে যেখানে মাঝ মাঠে ফুল ফুটিয়েছেন টনি ক্রুস, লুকা মডরিচরা। বল বানিয়ে দিয়েছেন, গোল করিয়েছেন, করেছেনও। সেখানে বার্সেলোনার মিডফিল্ডকে সেভাবে কাজে দেখা যায়নি। পেদ্রো এবং বয়স হয়ে যাওয়া আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি। ইভান রাকিতিচও খুব বেশি উজ্জলতা ছড়াতে পারেননি। তরুণ সার্জিও রোবের্তো মাঝে মাঝে আলো ছড়ালেও তার ছোটখাটো ভুলে অনেক মাশুল দিতে হচ্ছিল দলকে।

ডাগ আউটের দুর্বলতা:

ডাগ আউটের দুর্বলতা বলতে লুইস এনরিকেকে খাটো করা নয়। বার্সেলোনার হয়ে আগের দুই মৌসুমে অনেক কিছু জিতেছেন তিনি। কিন্তু এবারের মৌসুমে জিনেদিন জিদানের চেয়ে সিদ্ধান্তে নেওয়ার ক্ষেত্রে যে অনেকটা পিছিয়ে ছিলেন বার্সেলোনা কোচ সেটা স্পষ্টই। ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তার কিছু ‘বদলির’ সিদ্ধান্ত কাল হয়ে দঁড়িয়েছে বার্সেলোনার জন্য। খেলোয়াড়দের অনুপ্রানিত করার মতো ব্যক্তিত্ব অবশ্য আগে থেকেই ছিল না এনরিকের। তবে জিদানের মতো বিচক্ষণ সিদ্ধান্তও নিতে পারেননি এবার। এটার মূল্যও দিতে হয়েছে বার্সেলোনাকে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.