সাড়ে চারশ রানের রোমাঞ্চকর ম্যাচ, শেষ হাসি পাঞ্জাবের

মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে যেতে যাদের অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল অথবা কাজ ফেলে যারা টিভি সেটের সামনে বসেছিলেন তারাও হয়তো ম্যাচটা শেষ হওয়ার পর নিজেদের ‘ধন্য’ই মনে করছিলেন! পুরো পয়সা উসুলের মতো ব্যাপার। একটা ক্রিকেট ম্যাচে এর চেয়ে বেশি ‘বিনোদন’ আর কি আশা করা যায়। কাল বিনোদনটা ছড়ালেন ব্যাটসম্যানরা। আইপিএলের ৫১ নম্বর ম্যাচে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ও কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের ব্যাটসম্যানরা মিলে মোট ৪০ ওভারে রান তুললেন ৪৫৩! রোমাঞ্চকর সাড়ে চারশ’র ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত সাত রানে জিতেছে পাঞ্জাব।

আগেই প্লে অফের টিকিট নিশ্চিত করা মুম্বাইয়ের এই হারে তেমন ক্ষতি হয়নি। এখনো পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষেই রোহিত শর্মার দল। তবে বড় লাভ হয়েছে পাঞ্জাবের। প্লে অফের সম্ভবনা ভালো ভাবেই টিকে থাকল দলটির।

কাল দর্শকরা ওয়েংখেড়ে স্টেডিয়ামে নিজেদের সিটে বসেছেন কি বসেননি, তার আগেই টর্নোডো শুরু। ব্যাটিং টর্নেডো। প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মুম্বাইয়ের বোলারদের কচুকাটা করে ছেড়েছেন পাঞ্জাবের ব্যাটসম্যানরা। দুই ওপেনার মার্টিন গাপটিল ও ঋদ্ধিমান সাহা ৫.৩ ওভারেই তুলে ফেলেন ৬৮ রান! গাপটিল ১৮ বলে ৩৬ করে ফিরলেও শেষ পর্যন্ত ঝড় অব্যাহত রেখেছেন সাহা।

আক্ষেপ নিয়েই অবশ্য মাঠ ছাড়তে হয়েছে সাহাকে। ৫৫ বলে ৯৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন। মাত্র সাত রানের জন্য সেঞ্চুরিটা পাননি। তবে সেঞ্চুরি না পেলেও তার এই ইনিংসটাই রান পাহাড়ের চূড়ায় তুলে দেয় পাঞ্জাবকে। গাপটিল ফেরার পরে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল করেছেন ২১ বলে ৪৭। যাতে নির্ধারিত ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে ২৩০ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় পাঞ্জাব।

মুম্বাই বোলরারদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ঝড়টা গেছে মিচেল ম্যাকক্লেনাঘানের উপর দিয়ে। চার ওভার বোলিং করে একটি উইকেট তুলে নিতে খরচ করতে হয়েছে ৫৪ রান ।

‘এই ম্যাচে আর কি বাকি থাকতে পারে’ প্রথম ইনিংস শেষে অনেকেই হয়তো এমনটা মনে করছিলেন। যারা এমনটা মনে করছিলেন সাঞ্জু স্যামসন, কাইরন পোলার্ডরা তাদেরকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন আধুনিক ক্রিকেটে শেষ বলে কিছু নেই।

পাহাড় টপকাতে নেমে প্রথম উইকেটে ৮.৪ ওভারে ৯৯ রান তুলেন মুম্বাইয়ের দুই ওপেনার পার্থিব প্যাটেল (২৩ বলে ৩৮) ও সাঞ্জু স্যামসন (৩২ বলে ৫৯)। পাঁচ নম্বরে নেমে মাত্র ২৪ বলে ৫০ রান করে অপরাজিত থাকেন কাইরন পোলার্ড। শেষ দিকে হার্দিক পান্ডিয়া ১৩ বলে ৩০ ও কর্ন শর্মা ছয় বলে ১৯ রানের ছোট টনের্ডো দুটি ইনিংস খেললে মনে হচ্ছিল পাহাড় বুঝিয়ে ডিঙিয়েই যাচ্ছে মুম্বাই।

কিন্তু শেষ দিকের সমীকরণ আর মিলেনি। যাতে নির্ধারিত ওভারে ছয় উইকেটে ২২৩ রানে থেমে গেছে মুম্বাইয়ের ইনিংস। সাত রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে রোহিত শর্মার দলকে।