কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের ফলাফল বিপর্যয় যে কারণে
- Details
- by জাতীয় ডেস্ক
২০১৭ সালে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের ফলাফলে ব্যাপক বিপর্যয় ঘটেছে। এ বছর এই বোর্ডে পরীক্ষা দিয়েছে এক লাখ ৮২ হাজার ৯৭৯ জন পরীক্ষার্থী। পাশ করেছে মাত্র এক লাখ ৮ হাজার ১১ জন। এতো বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হওয়ার পিছনে কী কারণ সংশ্লিষ্ট বোর্ডের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা এবং অভিভাবকদের সাথে কথা বলে তাই জানা গেছে।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে এবার ফলাফল বিপর্যয়ের পিছনের মূল কারণ হিসেবে একাধিকবার শিক্ষার্থীদের খাতা মূল্যায়ন ও নম্বর কমানোকে দায়ী করেছেন বেশ কয়েকজন পরীক্ষক। তারা জানান, একাধিকবার উত্তরপত্রে নম্বর কমিয়ে আনার কারণে কুমিল্লা বোর্ডে এ বছর এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে চরম বিপর্যয় ঘটেছে।
এছাড়া কঠিন সৃজনশীল প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র মূল্যায়নে অদক্ষ শিক্ষকও বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ। তারওপর খাতা মূল্যায়নে এবার পরীক্ষকদের মডেল উত্তর সরবরাহ করে শিক্ষাবোর্ড। মডেল উত্তর অনুযায়ী খাতা মূল্যায়নে পরীক্ষকদের কঠোর হুঁশিয়ারি প্রদান করা হয়। যার ফলে নম্বর প্রদানে পরীক্ষকরা অনেকটা অস্বস্তিতে ছিলেন বলে জানা গেছে।
ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এ বছর কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে ইংরেজিতে ফেল করেছে ২৫ হাজার ৬০৬ জন এবং গণিতে ফেল করেছে ৩৪ হাজার ৬৮৯ জন।
এ প্রসঙ্গে একজন পরীক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বোর্ড থেকে মডেল উত্তর সরবরাহ করে তাদেরকে বলা হয়েছিলো যে, ‘এ বছরের খাতা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের টিম যাচাই করে দেখবে’। এর ফলে বোর্ডের সরবরাহকৃত মডেল উত্তরের সাথে মিল না থাকায় একাধিকবার খাতার নম্বর কমিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছেন পরীক্ষকরা।
এর মূল কারণ হিসেবে ওই পরীক্ষক প্রধান পরীক্ষকদের প্যানেল বোর্ডের অদক্ষতা ও কতিপয় কর্মকর্তার সহায়তায় খাতা দেখার নির্দেশিকা ও কথিত মডেল উত্তরপত্র প্রণয়নকে দায়ী করেন।
তবে এর পাশাপাশি ভিন্নমত পোষণ করেছেন কুমিল্লার খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রোকসানা ফেরদৌস মজুমদার। তিনি বলেন, কঠিন সৃজনশীল প্রশ্নপত্র, সৃজনশীল বিষয়ে দক্ষ শিক্ষকের অভাব এবং সর্বোপরি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল প্রশ্নপত্র বিষয়ে কম মেধা ফলাফল বিপর্যয়ের মূল কারণ।
এদিকে সম্পূর্ণ নতুন ধরণের অভিযোগ জানান পুলিশ লাইন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. তফাজ্জল হোসেন। তিনি বলেন, সৃজনশীল বিষয়ে সমস্যা নিয়ে শিক্ষাবোর্ড কখনোই শিক্ষকদের মতামত নেয় না। বোর্ড নিজের পছন্দের স্কুলের শিক্ষকদের নিকট থেকে প্রশ্ন নিয়ে ইচ্ছেমতো প্রশ্ন প্রণয়ন করে। ফলে এই ফল বিপর্যয় ঘটেছে।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে এবার ফলাফল বিপর্যয় ঘটলেও বিজ্ঞান বিভাগে পাসের হার ৮৪ দশমিক ১৬ শতাংশ। ফল খারাপ হয়েছে অন্য দুই বিভাগে। মানবিক বিভাগে পাসের হার ৪১ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পাসের হার ৫৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
এ বছর কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড থেকে ৬৯৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে শতভাগ পাস করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা মাত্র ১৪টি। আর দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কেউই পাস করতে পারেনি।
অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতেও পিছিয়ে রয়েছে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড। যেখানে ২০১৬ সালে ছয় হাজার ৯৫৪ জন, ২০১৫ সালে ১০ হাজার ১৯৫ জন, ২০১৪ সালে ১০ হাজার ৯৪৫ জন এবং ২০১৩ সালে সাত হাজার ৮৫৫ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছিল, এবার সেখানে তিনটি বিভাগে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা মাত্র চার হাজার ৪৫০ জন।
এবারের ফলাফল বিপর্যয়কে বোর্ড কর্তৃপক্ষের উদাসিনতা বলে উল্লেখ করে অভিভাবক ও শিক্ষক পুনরায় খাতা মূল্যায়নের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, খাতা পুনরায় মূল্যায়ন করা না হলে ৬০ হাজারেরও অধিক শিক্ষার্থীর জীবন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যাবে।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.