টেস্টে বদলাবে ইতিহাস?

গত ১৪ বছরে পাকিস্তানের সাথে আটটি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। সবকটিতেই হার। দুই একবার যা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিলো, তাতেও ফল আসেনি কোনো। এই দলটির বিপক্ষে ড্র’র সম্মানও নেই বাংলাদেশের। কিন্তু এবার কি ইতিহাস বদলাবে? জোর সম্ভাবনার হাওয়া কিন্তু বইছে!

পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ শুরু হওয়ার আগে নিজ দলকে ফেভারিট ঘোষণা দিয়েছিলেন বাংলাদেশের সেরা তারকা সাকিব আল হাসান। তার ওই ঘোষণার ‘চিত্রনাট্য’ অনুযায়ীই হয়েছে ওয়ানডে সিরিজ। পরে টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও বাংলাদেশের আধিপত্য বিস্তারকারী জয়।

সীমিত ওভারের ক্রিকেটের ওই জয়ই স্থাপন করে দিয়েছে নতুন সাহসের ভিত্তিপ্রস্তর। তামিম-সৌম্য-সাব্বিরদের সামনে প্রতিটি ম্যাচেই আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়েছে পাকিস্তান। বোলিং-ব্যাটিং ও ফিল্ডিং; তিন বিভাগের পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের স্পষ্ট ব্যবধান দেখা গেছে।

ঐতিহ্যগতভাবেই পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণ সমীহ জাগানিয়া। কিন্তু এই সিরিজে পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণকে তেমন কোনো মূল্যই দেয়নি বাংলাদেশ। ওয়াসিম আকরাম- ওয়াকার ইউনিস ও সাকলাইন মোস্তাকদের উত্তরসূরীরা বুক চাপড়ে মরেছেন একটি উইকেটের জন্য। এই কথাটা কি একটু বেশি হয়ে গেলো? তবে পরিসংখ্যান দেখুন- দেখে নিন তিন ওয়ানডে ও একটি টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের মোট কয়টি উইকেট ফেলতে পেরেছে পাকিস্তানের ‘বিশ্বসেরা’ বোলিং লাইন!

সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ছয় উইকেট ফেলতে পেরেছিলো পাকিস্তান। এরপর আর কোনো ম্যাচে তিনটির বেশি উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ! চার ম্যাচে মোট ১৪টি উইকেট হারান মাশরাফিরা। এতেই বোঝা যায় সীমিত ওভারে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের সামনে এক রকম অসহায়ই ছিলো পাকিস্তানি বোলিং।

তাই বলে টেস্টেও যে তারা তেমনই থাকবে তা আশা করা ভুল। ২৮ এপ্রিল থেকে খুলনায় অনুষ্ঠিতব্য প্রথম টেস্টের এ কথাই স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন সাকিব। বলেছেন, পাকিস্তানের সাথে টেস্টেও ভালো করতে চাইলে তিন বিভাগেই আগের চেয়ে ভালো খেলতে হবে। 

এ ছাড়া টেস্টে আত্মবিশ্বাসও বেশি থাকবে পাকিস্তানের। কারণ দলের সেরা দুই তারকা মিসবাহ উল হক ও ইউনিস খান দলে যোগ দিয়েছেন। ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর তলানিতে নেমে যাওয়া আত্মবিশ্বাস একটু হলেও বাড়িয়ে দিয়েছে তাদের অন্তর্ভুক্তি। 

তারপরও টেস্টে বাংলাদেশকে ফেভারিট মানছেন অনেকে। বাংলাদেশের সমালোচক বলে পরিচিতি পেয়ে যাওয়া রমিজ রাজাও বাংলাদেশকে ফেভারিট বলতে বাধ্য হয়েছেন, তা সেটা নিজ দলের উপর বিরক্ত হয়ে হোক কিংবা বাংলাদেশের পারফর্মে বাধ্য হয়ে হোক!

সব মিলিয়ে টেস্টে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানকে বধ করার মঞ্চ তৈরি হয়ে গেছে। এখন কেবল প্রয়োজন প্রস্তুত করা মঞ্চে নিজেদের স্বাভাবিক ক্রিকেটটা দেখিয়ে দেওয়া। তবেই বদলে যাবে ইতিহাস। হয়তো মুলতান টেস্টে এক উইকেটে হারার আফসোসের গল্পও আর লেখতে হবে না!

আপনি আরো পড়তে পারেন

সাংবাদিকের সাথে সাকিবের দুষ্টুমি

বদলে গেলো রমিজ রাজার সুর

ধোনিরও আগে মুশফিক